অজয়ের বাজিমাত নতুন পার্টি গড়েই, পাহাড় রাজনীতির সমীকরণ বদল তিন মাসেই
অজয়ের বাজিমাত নতুন পার্টি গড়েই, পাহাড় রাজনীতির সমীকরণ বদল তিন মাসেই
পাহাড় রাজনীতির মোড় মাত্র তিন মাসে ঘুরিয়ে দিলেন অজয় এডওয়ার্ডস। জিএনএলএফ ভেঙে নতুন পার্টি গড়ে তিনি বিমল গুরুং, অনীত থাপা, বিনয় তামাং এবং মন ঘিসিংদের হারিয়ে দিলেন। কীভাবে এই অসাধ্য সাধন করলেন তিনি। কোন পথে এল সাফল্য। যেখানে বিমল গুরুংদের গোহারা হারিয়ে পাহাড়ের রাজনীতিতে অন্য খাতে বইয়ে দিলেন তিনি।
বন্ধুর সঙ্গে মন কষাকষিতে নতুন দল গড়েন অজয়
পাহাড়ে পরিচিত মুখ অজয় এডওয়ার্ডস। কিন্তু তাঁর বেশি খ্যাতি ছিল ব্যবসায়ী মহলে। গ্লেনারিজ কর্তা অজয় এডওয়ার্ডসের রাজনীতিতে উত্থান হয় জিএনএলএফে। তিনি জিএনএলএফ প্রধান মন ঘিসিংয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কিন্তু সম্প্রতি তাঁদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ে। জিএনএলএফের দার্জিলিং ব্রাঞ্চের সভাপতি পদেও ছিলেন। কিন্তু মন ঘিসিংয়ের সঙ্গে মন কষাকষিতে তিনি নতুন দল গড়েন।
তিন মাসের মধ্যে দলকে সংঘটিত করে সাফল্যের সরণিতে
গ্লেনারিজ কর্তা অজয় এডওয়ার্ডস জিএনএলএফ ছেড়ে নতুন পার্টি তৈরি করেন নভেম্বর মাসে। সাকুল্যে তিনি তিনমাস সময় পেয়েছিলেন। নভেম্বরের শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির শেষ। এই তিন মাসের মধ্যে দলকে সংঘটিত করে দার্জিলিং পুরসভা দখল করে নিল হামরো পার্টি।
অজয়ের নতুন মুখেই কেন ভরসা দার্জিলিংয়ের মানুষের?
অজয় এডওয়ার্ডস নতুন দল গড়ে চমকে দিলেন পাহাড় রাজনীতিতে। পাহাড়ের মানুষ আস্থা রাখল নবগঠিত হামরো পার্টির উপর। কিন্তু কেন বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা বা অনীত থাপার গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চ বা মন ঘিসিংয়ের জিএনএলএফ মন জয় করতে পারল না পাহাড়ের। নতুন মুখেই কেন ভরসা দার্জিলিংয়ের?
পাহাড়ের নেতারা যখন সবাই তৃণমূলমুখী, উত্থান অজয়ের
দার্জিলিং জিএনএলএফের পর ভরসা রেখেছিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার উপর। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এতদিন কর্তৃত্ব করেছে পাহাড়ে। বিগত নির্বাচন থেকেই হাওয়া ঘুরতে শুরু করে। ২০২১-এর আগে থেকে বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা বা অনীত থাপার গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা তৃণমূলকেই সমর্থন করে এসেছে পাহাড়ে। পাহাড় রাজনীতিতে তৃণমূল ক্রমেই জাঁকিয়ে বসছিল।
তৃণমূলের প্রতি অনাস্থা থেকেই পাহাড়ের মানুষের প্রিয় অজয়
তবে কি পাহাড়ের মানুষ তৃণমূলের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করল। তাঁরা বিজেপির প্রতি তিতিবিরক্ত। আর তৃণমূলকেও কতারা চাইছে না। এখন যেহেতু পাহাড়ের নেতারা সবাই তৃণমূলমুখী, তাই পাহাড়বাসী নতুন নেতা নতুন পার্টিকে বেছে নিলেন! বিমল ও অনীত উভয়েই তৃণমূলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। আর বিনয় তামং সরাসরি যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। তাঁদের প্রতি অনাস্থা থেকেই পাহাড়ের মানুষ বেছে নিয়েছে নবগঠিত দল হামরো পার্টিকে।
অজয় এডওয়ার্ডসকে কেন্দ্রে করে আবর্ত হবে পাহাড়ের রাজনীতি
দার্জিলিং পুরসভায় হামরো পার্টির জয় পাহাড় রাজনীতিতে নতুন চমক এনেছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পাহাড় এবার নতুন সমীকরণের দিকে ঝুঁকেছে। পাহাড় রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। বিমল গুরুং, বিনয় তামাং, অনীত থাপা, মন ঘিসিংকে টপকে অজয় এডওয়ার্ডসকে কেন্দ্রে করে আবর্ত হবে পাহাড়ের রাজনীতিতে।
জিএনএলএফ ভেঙে নতুন দল গড়েই সাফল্যের চূড়ায় হামরো পার্টি
বহু হেভিওয়েটকে হারিয়ে দার্জিলিং পুরসভা দখল করল 'নবাগত' অজয় এডওয়ার্ডসের দল। এডওয়ার্ডসকে চেয়ারম্যান প্রজেক্ট করা হয়েছিল দার্জলিং পুরসভায়। তিনি হারলেও দল বিপুলভাবে জয়ী হয় তার দল। রাজনীতির ময়দানে বিরাট উত্থান হল তাঁর। জিএনএলএফ ভেঙে নতুন দল গড়েই সাফল্যের চূড়ায় অধিষ্ঠিত হল হামরো পার্টি। আত্মপ্রকাশেই বাজিমাত করলেন অজয় এডওয়ার্ডস।
দার্জিলিং পুরসভা নির্বাচনে কার দখলে কত ওয়ার্ড
দার্জিলিং পুরসভায় ৩২টি ওয়ার্ডের মধ্যে অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি ১৮টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে। অনীত থাপার গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা জয়ী হয়েছে ৮টি ওয়ার্ডে। আর বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার জয় চারটি ওয়ার্ডে। তৃণমূলও খাতা খুলেছে। তৃণমূল জিতেছে ২টি ওয়ার্ডে। বিজেপি এই পুরসভায় কোনও আসন পায়নি। জিএনএলএফও এখানে কোনও আসন পায়নি। অজয় এডওয়ার্ড তাঁর ওয়ার্ডে হেরে গিয়েছেন।
দায়িত্ব, দায়বদ্ধতা আরও বেড়ে গেল! মা মাটি মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বললেন মমতা