গান গেয়ে সাহিত্যের মর্ম বোঝান ফেরিওয়ালা শিক্ষক
তিনি পেশায় শিক্ষক। স্কুলে শিক্ষা দিয়ে যেটুকু সময় পান লিখতে শুরু করেন বই। সেই সব বইয়ের ঝুলি নিয়ে তিনি চলে এসেছিলেন বইমেলায়। উদ্দেশ্য ছাত্রদের মধ্যে সাহিত্য বোধ জাগিয়ে তোলা।
তাঁর নাম সুভাষ মন্ডল। নিবাস সোনারপুর। সেখান থেকেই তিনি দেশপ্রিয় বিদ্যমন্দির প্রফুল্লকানন স্কুলের শিক্ষকতা করতে আসেন। গত ২৮ বছর ধরে শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত। ৪০ বছরে ধরে কাজ করছেন সাহিত্য নিয়ে। তিনি বলেন, 'আমি একজন শিক্ষক। সাহিত্যের জন্য আমি পরিশ্রম করি। কিছু পাই বা না পাই তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমার সাহিত্যের প্রতি শুধু ভালোবাসা আছে। আমি নিজে বই লিখি। নিজে গান, গল্প লিখি। কোনও আশা করি না। আমার কাজ আমি চালিয়ে যাই। দিনের শেষে যে সময় মেলে তাতেই এই গান , কবিতা লিখে কাটাই। এই ভালোবাসা যেন আমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত থাকে এটুকুই আমার ভগবানের কাছে চাহিদা।'
সঙ্গে রয়েছে একটি বাদ্যযন্ত্র। জানালেন এটি এক লোকশিল্পীকে দিয়ে বানিয়েছেন। অনেক গান, কবিতা, গল্প লিখেছেন কিন্তু এই বইমেলায় প্রথম একটা বই ছাপিয়েছেন নিজের। সেটাই বইমেলা প্রাঙ্গনে এসে বিক্রি করছেন। সঙ্গে যন্ত্র বাজিয়ে গাইছেন গান। সুভাষ মন্ডল নাম হলেন বইতে ছদ্মনাম ব্যবহার করেন। লিখেছেন সুভাষ অমূল্য। রিতভাষ নাম নিয়েও তিনি লেখালিখি করেন। ইচ্ছা একটাই তাঁর লেখা মানুষ একটু জানুক, পড়ুক। তবে যদি কেউ নাও পড়ে তাতেও দুঃখ নেই। কারণ এটা তো তার ভালোবাসা। একজন শিক্ষক হয়েও সময় বার করে কীভাবে সাহিত্য চর্চা বজায় রাখা যায় সেই বার্তা তিনি দিতে চান ছাত্রদের। জানালেন সবার মধ্যেই লুকনো প্রতিভা থাকে। সেটা ঠিক সময়ে সবার কাছে পৌঁছায় না। সেটা যেন পৌঁছানো চেষ্টা আমি এখনও চালিয়ে যাচ্ছি।
রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ সমস্যা নিয়ে তিনি জানালেন , 'একদিন আমিও বেকার ছিলাম , খুব কষ্ট করে চাকরি পেয়েছি। চাইব যারা চাকরি পেয়েও শিক্ষকতা করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের দিকে সরকার যেন নজর দেয়।সবারই তো জীবন জীবিকার দরকার আছে। সেখানে কেন একজন যোগ্য এই সুযোগ পাবেন না?'