পরিকল্পনা করে রিমোট বিস্ফোরণ, মন্ত্রী জাকিরকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে দাবি মমতার
রিমোর্টের সাহায্যে পরিকল্পনামাফিক করে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে! জাকির হোসেনকে দেখতে গিয়ে এমনটাই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার রাতে কলকাতা যাওয়ার পথে নিমতিতা স্টেশনে জাকির হোসেনকে লক্ষ্য করে বোমাবাজি করা হয়। ঘটনায় গুরুতর আহত মন্ত্রী। ইতিমধ্যে তাঁকে এসএসকেএমে আনা হয়েছে তাঁকে। শুধু হয়েছে মন্ত্রীর অপারেশন। মন্ত্রীর চিকিৎসায় গঠন করা হয়েছে মেডিক্যাল বোর্ডও। অন্যদিকে, ইতিমধ্যে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক টিমও।
রিমোর্টের সাহায্যে পরিকল্পনামাফিক করে এই বিস্ফোরণ
মন্ত্রীকে দেখতে গিয়ে বিস্ফোরক বক্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনা পরিকল্পনামাফিক ভাবে ঘটনা হয়েছে বলে দাবি তাঁর। তিনি বলেন, স্টেশন সম্পূর্ণ অন্ধকার ছিল। সেই সময় রেল পুলিশেরও কেউ কিছু না ঘটনাস্থলে দাবি মমতার। আর সেই সুযোগেই রিমোর্টের সাহায্যে দূর থেকে রিমোর্টের সাহায্যে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে বলে দাবি তাঁর। এই বিষয়ে রেলের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত করছে সিআইডি। খুব শিঘ্রই সত্য সামনে আসবে বলে দাবি তাঁর।
রেলের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ মমতার
এত বড় ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর কীভাবে রেল বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছে না তা নিয়েও এদিন প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, রেল স্টেশনের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। রেলের মালিকানাধিক এলাকার মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে ফলে কখনও এই দায় রেল পুলিশ এড়িয়ে যেতে পারে না বলে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বলেন, না ডাকলে সেখানে রাজ্য পুলিশ যেতে পারে না। ফলে তাঁদেরই এই বিষয়ে আরও তদন্ত ক্রা উচিত ছিল বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজনৈতিক তরজা শুরু
মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, মমতার রাজ্যে মন্ত্রীরাও যে সুরক্ষিত নন তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। রেলের দিকে আঙুল তুলে লাভ নেই, কারণ রাজ্যটা যে তিনি চালান তা। ফলে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে যে তিনিই তা কখনও অস্বীকার মুখ্যমন্ত্রী করতে পারেন না বলেই দাবি বিজেপি নেতার।
রাজনৈতিক ভাবে লড়াইয়ের ক্ষমতা নেই
এদিন মুখ্যমন্ত্রী এহেন ঘটনার জন্যে নাম না করে বিরোধীদেরই টার্গেট করেন। বিশেষ করে বিজেপিকে আক্রমণ শানান তিনি। বলেন, রাজনৈতিক ভাবে লড়াই করার ক্ষমতা নেই ওদের। তাই গুন্ডাগিরি শুরু হয়েছে। মানুষ এর জবাব দেবে বলেও দাবি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মন্ত্রী বাদে এই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাঁদের সবাইকে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গুরুতর আহতদের জন্যে ৫ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্যে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছে, মোট ২৬ জন ঘটনায় আহত হয়েছেন।
ঘটনার তদন্তভার হাতে নিয়েছে সিআইডি
বুধবার রাতে কলকাতা যাওয়ার পথে নিমতিতা স্টেশনে জাকির হোসেনকে লক্ষ্য করে বোমাবাজি করা হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় গুরুতর জখম হন মন্ত্রী-সহ কমপক্ষে ২৩ জন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মন্ত্রীর হাতের একটি আঙুল ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটি পায়ের একাধিক জায়গায় স্প্লিন্টারের আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। ইতিমধ্যে অস্ত্রোপচার শুরু হয়েছে তাঁর। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর অবস্থা ভালো নয়। অন্যদিকে, ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। সকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা । বিস্ফোরণ আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। নিমতিতা স্টেশন পরিদর্শনে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। ফরাক্কা-জঙ্গিপুর আজিমগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে নিমতিতা স্টেশন চত্বর।