ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে আরও বিপাকে বরিস জনসন, ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ ইউরোপীয় ইউনিয়নের
জল্পনা চলছিল গত কয়েক মাস আগে থেকেই। এবার সমস্ত সম্ভাবনা সত্যি করেই ব্রেক্সিট বিল নিয়ে ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আইন পদক্ষেপের পথে হাঁটল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বৃহঃষ্পতিবারই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে বলেও জানা যাচ্ছে। ব্রাসেলসের অভিযোগ, বর্তমানে বলপূর্বক 'ব্রেক্সিট চুক্তি'তে বদল আনার চেষ্টা করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। কিন্তু এটা সরাসরি আন্তর্জাতিক আইনের অবমাননা বলেই মনে করছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি সদস্য দেশগুলি।
এদিকে প্রায় তিন বছর আগে ব্রিটেনের সিংহভাগ মানুষের রায়েই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে য়াওয়ার পরিকল্পনা করেন ব্রিটেন। যে ঘটনা ইতিহাসের পাতায় ব্রেক্সিট বলে পরিচিত। এদিকে চলতি বছরের ৩১শে জানুয়ারী আইন কার্যকর করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে পাকাপাকি ভাবে বেরিয়ে যায় ব্রিটেন। এদিকে তারপর থেকেই এই ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি সদস্য দেশ ও ব্রিটেনের মধ্যে টানাপোড়েন অব্যাহত রয়েছে।
অভিযোগ বর্তমানে ব্রেক্সিট চুক্তির একাধিক শর্ত মানতে চাইছেন না বরিস জনসন। বর্তমানে ব্রিটিশ সরকার এই চুক্তির একাধিক অংশগুলোকে অগ্রাহ্য করে আইন প্রবর্তনের পথেও হেঁটেছে। এখানেই আপত্তি ইউরোপীয় ইউনিয়নের।এদিকে এই বিষয়ে জট কাটাতে গত মাসের শেষ দিকে জরুরি বৈঠকে বসেন যাচ্ছেন ইইউ এবং ব্রিটিশ কর্মকর্তারা। কিন্তু তাতেও বিশেষ কোনও রফা সূত্র না বেরোয়নি বলে জানান ইইউ কমিশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট মারোস সেফকোভিচ।
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এই বিষয়ে ব্রিটনেকে আগেও একাধিকবার সংযত করেছে ইইউ। কারণ আন্তর্জাতিক আইন মতে ওই চুক্তির শর্ত মানতে বাধ্য দু'পক্ষই। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়াতেই এবার তারা আইনি পদক্ষেপের পথে হাঁটতে চলেছেন। ওয়াকিবহাল মহলের মতে ব্রেক্সিটের পথে পা বাড়ালেও বাণিজ্য, পর্যটন বা নিরাপত্তা সহ কোনও ক্ষেত্রেই ইউরোপের অন্য দেশগুলির সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্কে সহজে ইতি টানতে পারবে না ব্রিটেন। তাই এখন খানিকটা বেঁকে বসেছেন জনসন।
এদিকে সম্পূর্ণ ভাবে ব্রেক্সিট কার্যকরী করতে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ট্রানজিশন পিরিয়ডে রয়েছে ব্রিটেন। এমতাবস্থায় পণ্য পরিবহণ-সহ একাধিক ক্ষেত্রে দ্রুত চুক্তি সেরে ফেলতে চাইছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। অবাধ বাণিজ্যের সংক্রান্ত চুক্তির বিষয়ে দু-তরফেই বিশেষ সমস্যা দেখা না দিলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বাজার সংক্রান্ত বিতর্কিত বিলের বিরুদ্ধে দু-তরফেই বোঝাপড়ার অভাব তীব্র হয়ে উঠেছে বলে জানা যাচ্ছে। আর এমতাবস্থায় ব্রিটেনকে বাগে আনতেই আইনি পদক্ষেপ পথে হাঁটছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।