ক্রমেই চড়ছে উত্তেজনেরা পারদ! মার্কিন-চিন সমুদ্র সংঘাত নিয়ে সতর্কবার্তা দক্ষিণ এশীয় দেশ গুলির
পূর্ব চিন সাগর, দক্ষিণ চিন সাগরের একটা বিস্তৃর্ণ এলাকায় ক্রমেই আরও আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে চিনা নৌবাহিনী। সম্প্রতি একটি চিনা সাবমেরিনকে জাপানের দক্ষিণ উপকূলের ঠিক পাশ দিয়ে চলে যেতে দেখা যায়। এমতাবস্থায় চিনকে ঠেকাতে মার্কিন নৌবাহিনীও ক্রমশ এশিয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। এমতাবস্থায় আমেরিকা ও চিনের মধ্যে সমুদ্র সংঘাত নিয়ে সতর্কবার্তা শোনাতে দেখা গেল দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ান নেশনস অ্যাসোসিয়েশন বা আসিয়ানকে।
মূল সমস্যা কোথায়?
বিতর্কিত পূর্ব চিন সাগরের দ্বীপের চারপাশে চিনা নজরদারির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভিয়েতনাম, জাপান সহ একাধিক দেশ। সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনে ভারত মহাসাগরেও লালফৌজের নৌবাহিনীর যথেষ্ট গতিবিধি লক্ষ্য করা গেছে। এদিকে দক্ষিণ চিন সাগরে জলসীমা সংক্রান্ত বিবাদ নিয়ে চিন-ভিয়েতনাম টানাপড়েন দীর্ঘদিনের। ১৯৮৮ সালের যুদ্ধে ভিয়েতনামের হাত থেকে স্প্র্যাটলিস আর্কিপেলাগোর অনেকগুলি দ্বীপ ছিনিয়ে নেয় চিন। তারপরেই থেকেই মূল সমস্যার সূত্রপাত। এখনও ওই এলাকায় বেশ কিছু জায়গায় নিজেদের কর্তৃত্ব ফলাতে চাইছে লালফৌজ।
লাল ফৌজকে ঠেকাতে তৈরি হচ্ছে মার্কিন সেনাও
এদিকে বৃহস্পতিবার মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ভারত-চিন সীমান্ত সংঘর্ষ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য চিনের আগ্রাসী মনোভাবে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। তাই আগাম প্রস্তুতি সেরে রাখতে অতিরিক্ত সেনা পাঠাচ্ছে আমেরিকা। এই পদক্ষেপের জন্য ইউরোপে মোতায়েন মার্কিন সেনা হ্রাস করা হচ্ছে। তারপরেই জলপথে মার্কিন নৌ বাহিনীর অগ্রসর হওয়ার কথা শোনা যায়।
মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্সের জন্যও বিপদ ঘন্টা বাজছে
ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা জাপান, ভিয়েতনামের পাশাপাশি চিনের এই আগ্রাসী মনোভাব মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্সের জন্যও বিপদ ঘন্টা বাজাচ্ছে। চিনের আগ্রাসী মনোভাব দমনে জার্মানি থেকে মার্কিন সেনার সংখ্যা ৫২ হাজার থেকে কমিয়ে ২৫ হাজার করা হচ্ছে। এ ভাবেই ধীরে ধীরে ইউরোপের অন্যত্র মোতায়েন মার্কিন সেনার সংখ্যা কমিয়ে তাদের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় স্থানান্তরিত করা হবে বলে জানা যাচ্ছে।
দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের আগ্রাসনকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল
এদিকে ১৯৮৮-র যুদ্ধে ভিয়েতনামের হাত থেকে স্প্র্যাটলিস আর্কিপেলাগোর অনেকগুলি দ্বীপ চিন ছিনিয়ে নিলেও বর্তমানে স্প্র্যাটলিস দ্বীপপুঞ্জের যে সব এলাকায় এখনও চিন পা ফেলেনি সেগুলি সুরক্ষিত করতে চাইছে ভিয়েতনাম। আর তা নিয়েই চিনের সঙ্গে শুরু হয়েছে সংঘাত। এর একটা বড় অংশে ইতিমধ্যেই চিন নিজেদের অধিকার দাবি করেছে। এই অঞ্চলের সর্বাধিক বড় অঞ্চল নাই-ড্যাশ-লাইনে নিজেদের আধিপত্য কায়েমেরও চেষ্টা করছে চিন। অন্যদিতে ভিয়েতনামের যুক্তি ১৯৪০ সালের আগে কখনও ওই এলাকাকে নিজেদের বলে দাবি করেনি বেজিং। তাছাড়া ১৭০০ খ্রীষ্টাব্দ থেকেই ওই এলাকা ভিয়েতনামের মধ্যে। এদিকে এরমধ্যেই দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিং-এর আগ্রাসনকে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল সম্পূর্ণ অবৈধ বলে ঘোষণা করার পর আরও আত্মবিশ্বাসী হয়েছে ভিয়েতনাম।