শিনজো আবের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার
জুলাই মাসে প্রচারাভিযানের পথে নিহত হওয়া জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। প্রায় ২ মাস ধরে চলতে থাকা বিক্ষোভগুলি জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর কারণ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অতিরিক্ত খরচ। এ নিয়েই ক্ষুব্ধ মানুষ। এর বিরুদ্ধেই চলছে বিক্ষোভ।
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার খরচ
শিনজো আবের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার খরচ অনুমান করা হয়েছে ১.৭ বিলিয়ন ইয়েন, প্রায় ১২ মিলিয়ন ডলার যা জাপানের অনেককে ক্ষুব্ধ করেছে। তাঁরা মনে করেন যে জাপানের বিপুল ঋণগ্রস্ত সরকারের জন্য এই পরিমাণ খরচ করা অন্যায্য বিষয়।
শিনজো আবে রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া
টোকিওতে জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া বিরোধী বিক্ষোভকারীরা নিপ্পন বুডোকানের কাছে একটি রাস্তায় বিক্ষোভ করছে৷ (এএফপি) জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে বহুবার জনসাধারণের উদ্বেগ প্রশমিত করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তাতে লাভের লাভ কিছু হয়নি, উলটে ক্ষোভ বেড়েছে। এর জেরে অক্টোবরে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কিশিদার অনুমোদনের রেটিং সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ভয়ঙ্কর প্রতিবাদ
মঙ্গলবার, টোকিওতে রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার বিরোধিতা নিয়ে ক্ষোভ এবং বিদ্রোহ সামলাতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। গত সপ্তাহে, এক ব্যক্তি জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার অফিসের কাছে রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন।
শিনজো আবের মৃত্যু
নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখার সময়ে অতর্কিতেই গুলি করা হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে'কে। নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়েই আততায়ী গুলি চালায় পিছন থেকে। এরপরে সেখানেই পড়েন যান আবে। ঘটনায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় জাপানের নারা শহরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে। কিন্তু সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথেই অ্যাম্বুল্যান্সেই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যায়। যদিও চিকিৎসকরা সবরকম ভাবে চেষ্টা করেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে বাঁচানোর জন্যে। কিন্ত্য সবরকম চেষ্টাই ব্যর্থ হয়ে যায়। ঘন্টাখানেক পরেই হাসপাতালেই আবে'র মৃত্যু হয় বলে জানা যায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে জাপানে। সন্দেহভাজন শ্যুটারকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় আগ্নেয়াস্ত্রটিকে। অভিযুক্ত একটা সময় সে দেশের নৌবাহিনীতে ছিলেন বলে খবর মেলে।
বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে একজন ছিলেন শিনজো আবে। বিশ্বনেতাদের খুবই কাছের মানুষ ছিলেন। শুধু তাই নয়, শত্রু দেশগুলির চোখে চোখ রেখে কথা বলার সাহস ছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আবে'র।