ডলারের নিরিখে কমছে পাউন্ডের দাম, দীর্ঘ মেয়াদি অর্থনৈতিক সঙ্কটে ডুবছে ব্রিটেন
ডলারের নিরিখে কমছে পাউন্ডের দাম, দীর্ঘ মেয়াদি অর্থনৈতিক সঙ্কটে ডুবছে ব্রিটেন
ব্রিটেন আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ব্রিটেন ক্রমেই আর্থিক মন্দার দিকে ঝুঁকছে। বার বার ডলারের নিরিখে পাউন্ডের দামের পতন হচ্ছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে এক মার্কিন ডলারে পাউন্ডের মূল্য ছিল ০.৮৭ পাউন্ড। কিন্তু রবিবার এক মার্কিন ডলারের নিরিখে পাউন্ডের দাম হয়েছে ০.৯৩ পাউন্ড। প্রবল চাপের মুখে ব্রিটেনের ট্রাস লিজের সরকার।
ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের হস্তক্ষেপ
অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, ১৯৭২ সালের পর ব্রিটেনে এরকম অর্থিক সঙ্কট আর দেখতে পাওয়া যায়নি। ২০১৬ সালের পর থেকেই ধীরে ধীরে ব্রিটেনের আর্থিক সমস্যা দেখা দেয়। দেশের পেনশন তহবিল উদ্বেগজনক অবস্থায় রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যাল্ড হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছেন। ব্রিটিশ সরকারের ঋণের বোঝা ক্রমেই বাড়ছে। ব্রিটেনের আর্থিক সঙ্কটের আরও অবনতি হবেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
মুদ্রাস্ফীতি চার দশকে সর্বোচ্চ
লিজ ট্রাসের তিন সপ্তাহের পুরনো সরকার নতুন করে বিনিয়োগকারীদের আস্থা আদায় করতে পারবেন কি না, সেই বিষয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। ব্রিটেনের বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যাল্ড মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এটা কোনও স্বপ্লমেয়াদী সমস্যা নয়, যে শুল্ক কমানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি সামলে যাবে। এর ফলাফল সুদূর প্রসারী বলেও তাঁরা আশঙ্কা করছেন। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে লিজ ট্রাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আশ্বাস দিয়েছিলেন। সেই সময় বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, তিনি নিজেও জানেন না, কতটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ব্রিটেনের অর্থনীতি পড়তে চলেছে।
ব্যর্থ লিজ ট্রাসের সিদ্ধান্ত
লন্ডনে Union Bancaire Privee UBP SA-এর FX কৌশলের গ্লোবাল হেড পিটার কিনসেলা বলেছেন, এর নেপথ্যে রয়েছে অনভিজ্ঞতা। অনভিজ্ঞ ব্যক্তিরা বার বার ব্রিটেনের অর্থনীতির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যার জেরে ব্রিটেনের অর্থনীতি বর্তমানে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে। বাজারের পতনের সাথে সাথে, ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড একটি গিল্ট মার্কেট ক্র্যাশ রোধ করার জন্য একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তাতে ব্রিটেনের অর্থনীতিতে কোনও পরিবর্তন আসেনি।
দীর্ঘ মেয়াদি অর্থনৈতিক সঙ্কট
ব্রিটেনের নয়া প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস গত কয়েকমাস ধরেই ব্রিটেনের অর্থনীতির তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর দেশের অর্থনৈতিক মন্দা কাটাতে কতগুলো বিকল্প উপায় বেছে নিয়েছিলেন। তবে সেগুলো ব্রিটেনের অর্থনীতি উদ্ধারে সেভাবে কার্যকর হয়নি। অন্যদিকে, মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি লরেন্স সামারস বলেছেন, ব্রেক্সিটের পর ব্রিটেনের অর্থনৈতিক পরিবর্তন হবে, তা আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। ব্রিটেনে বর্তমানে যে অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে, তা এত সহজে শেষ হবে না। এর দীর্ঘমেয়াদী ফল সাধারণ মানুষকে ভোগ করতে হবে।
সভাপতি পদের দৌড় থেকে সরে এলেন গেহলট, দিগ্বিজয় সিং সভাপতি পদের দৌড়ে নামতেই কি সিদ্ধান্ত বদল