ভিনগ্রহী এলিয়েনকে মানব সভ্যতার পথ দেখাতে পারে একটি আঙুলের ডগার পেইন্টিং
ভিনগ্রহী এলিয়েনকে মানব সভ্যতার পথ দেখাতে পারে একটি আঙুলের ডগার পেইন্টিং
ভিনগ্রহীদের মহাকাশে তন্ন তন্ন করে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। সমস্ত রকমের চেষ্টা করে চলেছেন তাঁরা। বিভিন্ন প্রযুক্তির টেলিস্কোপ থেকে শুরু করে মোহিনী-মন্ত্রের দ্বারস্থও হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আবার অত্যাধুনিক যন্ত্রও পাঠানো হচ্ছে এলিয়েনদের খুঁজে বের করতে। এবার আঙুলের ডগা দিয়ে আঁকা এক চিত্রকে তাঁরা ব্যবহার করলেন এলিয়েনকে মানব সভ্যতার পথ চেনাতে।
এলিয়েনদের মানব সভ্যতার বার্তা পৌঁছতে
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, যখন ইউক্লিড মহাকাশযান ২০২৩ সালে অন্ধকার মহাবিশ্বের বিবর্তন অন্বেষণ করতে শুরু করবে এবং মহাবিশ্বের একটি থ্রি-ডি মানচিত্র তৈরি করবে, তখনই তা ওই মহাকাশযানে অনন্য স্বাক্ষর রূপে গভীর মহাকাশে চলে যাবে। আর সেই পথ ধরেই এলিয়েনরা বার্তা পাবেন পৃথিবীর এই মানব সভ্যতার।
ভবিষ্যতের প্রাণীরা যাতে ইউক্লিড খুঁজে পায়
ইউক্লিডের ভিআইএস যন্ত্রের প্রধান বিজ্ঞানী টম কিচিং এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেছেন, "ইউক্লিডের জীবদ্দশায় ওই থ্রি-ডি মানচিত্র কেবল মহাকাশে ভাসতে থাকবে। এই আশা নিয়ে তা ভাসিয়ে দেওয়া হবে যে, যদি ভবিষ্যতের প্রাণীরা ইউক্লিড খুঁজে পায়! তারা মানুষের মানবতা সম্পর্কে কিছু জানতে পারবে তার মাধ্যমে। জানতে পারবে কীভাবে মানব সভ্যতার সন্ধান পাওয়া যায়।
২৫০ জনেরও বেশি বিজ্ঞানীর ফিঙ্গারপ্রিন্ট
বিজ্ঞানীরা তাই মানব সভ্যতার প্রতিনিধিত্বকারী মহাকাশযানের সাথে সংযুক্তএকটি অনন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট পেইন্টিং পাঠাচ্ছেন। ফিঙ্গারটিপ পেইন্টিং হল মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির, যা ভিজ্যুয়াল শিল্পী লিসা পেটিবোন এবং ইউক্লিড যন্ত্র বিজ্ঞানী টম কিচিং তৈরি করেছেন। ২৫০ জনেরও বেশি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী এই শিল্পে অনন্য অবদান রেখেছেন।
কেন একটি গ্যালাক্সি পেইন্টিং?
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কথায়, ইউক্লিড মহাবিশ্ব এবং তার মধ্যেকার গ্যালাক্সিগুলির চিত্র তৈরি করবে। মহাবিশ্বের একটি থ্রি-ডি মানচিত্র তৈরি করতে ১০ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের বিলিয়ন গ্যালাক্সির উপরে উঠে যাবে ওই মহাকাশ যান। যদিও ইউক্লিডের ধারণা এবং উপকরণ সুন্দর ছিল, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা মানবতা সম্পর্কে কিছু বলে না। আমরা নিজেদেরকে জিজ্ঞাসা করেছি যে আমরা এমন কিছু শৈল্পিক কাজকর্ম করতে পারি যা মানুষের কথা বলবে। সেই আঙ্গিকেই এই পেইন্টিংটি তৈরি। এই প্রকল্পে কাজ করা বিজ্ঞানীরা পেইন্টে তাঁদের আঙুল রেখেছিলেন।
আর্টওয়ার্কের সঙ্গে ছোট্ট কবিতাও
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলেন, "আমরা খাঁটি কিছু করতে চেয়েছিলাম, তা হয়তো নিখুঁত নয় এবং খুব বেশি বড়ও নয়। আর্টওয়ার্কটি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে লেজার ব্যবহার করে একটি ফলকের উপর চিত্রিত ও খোদাই করা হয়েছিল। তারপর ইউক্লিডে স্থির করা হয়েছিল। চিত্রকলার পাশাপাশি কবি সাইমন ব্যারাক্লফের লেখা একটি ছোট কবিতার অংশও খোদাই করা হয়েছে। কবিতাটি একটি টাইপরাইটার ফন্টে ফলকের উপর খোদাই করা হয়েছে, যা আঙ্গুলের ছাপের গ্যালাক্সির চারপাশে ঘোরাফেরা করে।
ইউক্লিড মহাকাশে কী করবে?
ইউক্লিড নামে মহাকাশযান তৈরি করা হয়েছে কীভাবে মহাবিশ্বের উৎপত্তি হয়েছে তা বোঝার জন্য। বিগ ব্যাং-এর ঠিক পরের অবস্থাগুলি কী ছিল এবং আজকে আমরা যে বৃহৎ আকারের কাঠামো দেখতে পাচ্ছি, তার কীভাবে জন্ম হয়েছে? মিশনটি আলোকপাত করবে কেন মহাবিশ্ব আজ ত্বরণশীল হারে প্রসারিত হচ্ছে এবং এই মহাজাগতিক ত্বরণ বাস্তবের পিছনে রহস্যময় শক্তিকে বোঝাতে প্রায়ই অন্ধকার শক্তি একটি শব্দ ব্যবহৃত হয়, তা কী?
ইউক্লিড মহাকাশযান সম্পর্কে কিছু তথ্য
ইউক্লিড নামে মহাকাশযান তৈরি হয়েছে, তার আনুমানিক দৈর্ঘ্য ৪.৭ মিটার। তার ব্যাস ৩.৭ মিটার। মহাকাশযানটি ইউরোপের স্পেসপোর্ট কোরো ফ্রেঞ্চ গায়ানা থেকে যাত্রা শুরু করবে। পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে সান-আর্থ ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট পর্যন্ত লঞ্চ করবে ওই ইউক্লিভ মহাকাশযান।
এখানে মাত্র ৪০ মিনিটের জন্য সূর্য অস্ত যায়, রাতের বেলাই হয় দিন! জানেন সেই আজব দেশের কথা