নরেন্দ্র মোদীকে এবার ভিসা দেওয়া হোক, বলছেন মার্কিন সাংসদদের একাংশ
২০০২ সালে গোধরা দাঙ্গার 'খলনায়ক' হিসাবে নরেন্দ্র মোদীর তীব্র সমালোচনা করেছিল আমেরিকা। তখন হোয়াইট হাউসে জর্জ বুশ জুনিয়র ক্ষমতায়। প্রথমে হোয়াইট হাউস, তার পর মার্কিন কংগ্রেসে সিদ্ধান্ত হয় যে. নরেন্দ্র মোদীকে ভিসা দেবে না আমেরিকা। এই নীতির কারণে বহুবার অনাবাসী ভারতীয়দের থেকে আমন্ত্রণ পেয়েও সে-দেশে যেতে পারেননি তিনি। ২০০৮ সালে বারাক ওবামা ক্ষমতায় আসার পরও এই নীতি বদল হয়নি। কিছুদিন আগে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধিসভায় একটি প্রস্তাব (নম্বর: ৪১৭) পাশ হয়। তাতে নরেন্দ্র মোদীকে ভিসা না দেওয়ার জন্য ওবামা প্রশাসনের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করা হয়। এমনকী, ইউপিএ সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়, সাম্প্রদায়িক ইস্যুকে হাতিয়ার করে কেউ লোকসভা ভোটে যেন ফায়দা তুলতে না পারে, তা দেখতে।
কিন্তু, হাওয়া ঘুরতে এখন দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন মার্কিন সাংসদরা। প্রতিনিধিসভার বিদেশ-বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান এড রয়েস প্রকাশ্যে ওবামা প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, "দুই দেশের কিছু মূল্যবোধ ও স্বার্থ আছে, যা পরস্পরের সঙ্গে মেলে। এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ভারত মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। আমাদের প্রতিনিধিসভা যে প্রস্তাব পাশ করেছে, তা দু'দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে বাধা তৈরি করছে।" আর এক সাংসদ স্টিভ শ্যাবট বলেছেন, "ওই প্রস্তাব পাশ করা উচিত হয়নি। এর ফলে ভারতের রাজনীতিতে আমরা অহেতুক হস্তক্ষেপ করছি।" প্রসঙ্গত, নরেন্দ্র মোদীকে ভিসা না দেওয়ার ব্যাপারে এই ব্যক্তি অন্যতম হোতা ছিলেন। এখন তিনিই উলটো সুর গাইছেন। প্রতিনিধিসভার আর এক সদস্য এনি ফালিওম্যাভেগা বলেছেন, নরেন্দ্র মোদীকে অবিলম্বে ভিসা দেওয়া হোক। আমেরিকা যা করছে, ভুল করছে।
অনাবাসী ভারতীয় বিশেষত গুজরাতিরা দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন প্রশাসনের এই নীতির বিরোধিতা করে আসছে। তাদের বক্তব্য, দাঙ্গায় নরেন্দ্র মোদী জড়িত ছিলেন বা প্ররোচনা দিয়েছিলেন, এই অভিযোগে ভারতের কোনও আদালতে তাঁর বিচার হয়নি। তিনি দোষীও প্রমাণিত হননি। পাশাপাশি, গুজরাতের মানুষ তাঁকে বিপুল ভোটে ক্ষমতায় ফিরিয়ে এনেছে। ভারতের আইন ও জনগণ যেখানে তাঁকে দোষী ভাবতে রাজি নয়, সেখানে আমেরিকা কোন অধিকারে একতরফা সিদ্ধান্ত নেয়?