২ দিন ধরে নিদ্রাহীন চোখে অভুক্ত পুরীর জগন্নাথদেব, ঝামেলা গড়াল ওড়িশার বিধানসভায়
সেবায়েতদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গণ্ডগোলের জেরে চরমে উঠল পুরী মন্দিরের অচলাবস্থা। সোমবার থেকে কোনও ভোগই পাননি জগন্নাথদেব।
দু'দিন ধরে ভোগ পাননি পুরীর জগন্নাথদেব। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে দু'দিন ধরে ঘুমোতেও পারেননি তিনি। কতক্ষণ এই পরিস্থিতি চলবে তা নিয়ে কেউ সদুত্তর দিতে পারছেনা। ঝামেলা এতটাই চরমে যে মঙ্গলবার ওড়িশা বিধানসভার অধিবেশনেও তার প্রভাব পড়ে।
আটচল্লিশ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সেবায়েতদের মধ্যে ঝামেলা দেখে চলেছেন জগন্নাথদেব। খাওয়া নেই, ঘুম নেই- বলতে গেলে বেজায় অসুবিধায় পড়েছেন পুরী মন্দিরের অধিপতি। গর্ভগৃহে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
১০ এপ্রিল ওড়িশা হাইকোর্ট পুরী মন্দিরের জগনমোহন কক্ষ ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর থেকেই পরিস্থিতি জটিল হতে থাকে। কারণ, জগনমোহন কক্ষ খোলা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই পুরীর সেবায়েতদের মধ্যে দুই গোষ্ঠীর ঝামেলা চলছিল।
আদালতের নির্দেশের পর রবিবার রাত থেকে পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে। সোমবার থেকে সেবায়েতদের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী অপর গোষ্ঠীর মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপরই দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। যার জেরে সোমবার ভোগ রান্না হলেও জগন্নাথদেবের মুখে তা তুলে দেওয়া যায়নি। সেবায়েত দুই গোষ্ঠী সোমবার থেকে মন্দির চত্বরে অবস্থানে বসে পড়েছে।
ঝামেলার জেরে জগন্নাথদেবের শয়নও সম্ভব হয়নি। মঙ্গলবার পুরীর মন্দিরের অচলাবস্থা নিয়ে সরকারপক্ষ ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে হইহট্টগোল শুরু হয়। শেষমেশ হট্টগোলের জেরে ওড়িশার বিধানসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দিতে হয়। সরকারের আমলা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতারা দফায় দফায় পুরী মন্দিরের সেবায়তদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। কিন্তু লাভ হয়নি। মঙ্গলবার রাতে ফের আলোচনা হওয়ার কথা। প্রাক্তনমন্ত্রী সঞ্জয় দাশবর্মা দাবি করেন মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই অচলাবস্থা কেটে যাবে।
পুরী মন্দির কর্তৃপক্ষের এক কর্তা জানিয়েছেন, একে জগনমোহন কক্ষ খোলা নিয়ে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করার একটা চাপ আছে তারমধ্যে এই ঝামেলা। জগন্নাথদেবকে অভুক্ত অবস্থার রাখা হয়েছে।
আসলে ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি জগনমোহন কক্ষের মেরামতির জন্য ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ তা বন্ধ করে দেয়। ২ বছর ধরে ফলে বন্ধ হয়ে আছে জগনমোহন কক্ষ। এইখান থেকে ভক্তরা জগন্নাথদেবের দর্শন করতে পারেন। কিন্তু পুরী মন্দির কর্তৃপক্ষ যারা শ্রী জগন্নাথ টেম্পল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এসজিটিএ নামে পরিচিত তারা আদালতের কাছে অন্তত ১ অগাস্ট পর্যন্ত জগনমোহন কক্ষ বন্ধ রাখার আর্জি জানায়।
পুরাতত্ত্ব বিভাগ অবশ্য আদালতকে জানিয়ে দিয়েছিল যে মেরামতি শেষ এবং জগনমোহন কক্ষ সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দিলে কোনও সমস্যা হবে না। এই নিয়ে তারা ওড়িশা আদালতে এনওসি জমা করে।
যদিও,
মূল
ঝামেলা
শুরু
হয়েছে
গর্ভগৃহে
প্রবেশে
কিছু
শর্ত
আরোপে।
কারণ,
পুরীর
মূল
মন্দির
অর্থাৎ
শ্রীমন্দিরের
সংস্কার
নিয়ে
বিচারপতি
বিপি
দাসের
দেওয়া
সুপারিশের
৩
নম্বর
ক্লজকে
মান্যতা
দেয়
ওড়িশা
হাইকোর্ট।
জানিয়ে
দেয়
জগন্নাথদেবের
পুজোর
জন্য
নিয়োজিত
সেবায়েত
ছাড়া
কেউই
গর্ভগৃহে
প্রবেশ
করতে
পারবে
না।
সেবায়তদের
অবাধ
যাতায়াত
'ভিতারা
কাঠা'
পর্যন্ত
সীমাবদ্ধ
থাকবে।
১৬
এপ্রিলের
মধ্যেই
এই
নির্দেশ
লাগু
করতেও
নির্দেশ
দেওয়া
হয়েছিল
পুরী
মন্দির
কর্তৃপক্ষকে।
কিন্তু,
১৬
এপ্রিল
সকাল
থেকে
শুরু
হয়ে
যায়
সেবায়েতদের
দুই
গোষ্ঠীর
মধ্যে
গোলমাল।
যার
জেরে
৪৮
ঘণ্টা
ধরে
অচল
হয়ে
যায়
পুরী
মন্দির।
আর
জগন্নাথ
দেবও
শিকার
হন
অভুক্ত
ও
নিদ্রাহীন
পরিস্থিতির।