অস্তিত্বের লড়াই গোপন ব্যালটে, ভোটের আগেই ভোট নির্ণয় করবে সিপিএমের ভাগ্য
সিপিএমে এখন ভোটের বাদ্যি বেজেছে। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগেই দলের অন্দরে বড়সড় ভোটের মুখে পড়তে চলেছে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি।
সিপিএমে এখন ভোটের বাদ্যি বেজেছে। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগেই দলের অন্দরে বড়সড় ভোটের মুখে পড়তে চলেছে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি। এই ভোট নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার ভোট। এবং তা হতে চলেছে গোপন ব্যালটে। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে সামিল প্রকাশ কারাত ও সীতারাম ইয়েচুরি। এখন এই ভোটই বলে দেবে সিপিএমের ভাঙন আসন্ন কি না।
[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটের মুখে কেবল অপারেটরদের জন্য সুখবর, হাত জড়ো করে বার্তা মমতার ]
প্রকাশ কারাতের পর দলের ব্যাটন উঠেছিল সীতারাম ইয়েচুরির হাতে। কিন্তু কারাতের লবিই সংখ্যাগুরু সিপিএমে। তাই সীতারাম দলের সাধারণ সম্পাদক হলেও, কারাত লবিই নীতি নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। এখন ভারতের রাজনীতি একটা নয়া মোড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বিজেপির মতো শক্তিকে হটাতে একজোট হতে চাইছে বিরোধীরা।
এই অবস্থায় সিপিএমকেও সঙ্গে চাইছে কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধীরা। এদিকে পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা থেকে সিপিএমের শাসন-ক্ষমতার অবসান ঘটেছে। এখন টিমটিম করে জ্বলছে শুরু কেরালায়। তা সত্ত্বেও দলে নানা দ্বিধাদ্বন্দ্ব। সীতারাম চান, সময়ের দাবি মেনে জোট গড়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে। আর প্রকাশ কারাত চান কংগ্রেস-বিজেপি থেকে সমদূরত্ব বজায় রেখে চলতে।
সেই প্রশ্নেই বিভাজন এমন জায়গায় পৌঁছছে সিপিএম নজিরবিহীনভাবে খসড়া প্রস্তাব নিয়ে পার্টি কংগ্রেসে ভোটাভুটিতে নামতে চলেছে। কলকাতায় কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সীতারাম ইয়েচুরি শিবির ভোটাভুটিতে হেরেছিলেন। এবার তিনি চাইছেন পার্টি কংগ্রেসে ভোটাভুটি হোক গোপন ব্যালটে।
[আরও পড়ুন: সিপিএম ভেঙে নতুন পার্টি! পার্টি কংগ্রেসের চোরাস্রোতে 'তাসের ঘর' হওয়ার অপেক্ষা]
তিনি নিশ্চিত সেই ভোট গোপন ব্যালটে হলে, রায় তাঁর দিকেই যাবে। অভিযোগ, অনেকেই প্রকাশ কারাত ও পিনারাই বিজয়নদের উপস্থিতিতে তাঁদের বিরুদ্ধে হাত তুলতে পারেনি। যাদের ভোটে কারাত শিবির জয়যুক্ত হয়েছিল কেন্দ্রীয় শিবিরে, তাদের মধ্যে সিংহভাগই সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে সহমত বলে মনে করছে একাংশ।
বঙ্গ সিপিএমের বড় অংশ সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে সহমত। কেরালা, ত্রিপুরা, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র-সহ একাধিক রাজ্য কট্টরপন্থীদের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারেননি। গোপন ব্যালটে ভোট হলে তাঁরা সীতারাম ইয়েচুরির দিকে ভোট দেবেন। কেরালার অর্থমন্ত্রীর কেন্দ্রীয় কমিটি বৈঠকে ভোটাভুটিতে অংশ না নিয়েই বেরিয়ে যাওয়া তারই ইঙ্গিত। ত্রিপুরার একটা বড় অংশও কারাতের লাইনের সঙ্গে সহমত নন। এদিন মহারাষ্ট্রের উদয় নারভলকর ও তামিলনাড়ুর অরুমুগা নাইনাও গোপন ব্যালটে ভোটের প্রস্তাব দেন।
এই অবস্থায় কারাত জিতলে, সিপিএম ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হবে। পার্টি কংগ্রেসে সরাসরি নয়া পার্টির পক্ষে দাবি উঠে পড়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পুরনো পার্টি লাইন আঁকড়ে থাকলে আখেরে কিছু লাভ হবে না বলেই অনেকের মত। এই সারসত্য যখন পার্টির সংখ্যাগুরু অংশ বুঝছে না, তখন নতুন পার্টি গড়ে তোলাই শ্রেয় বলে মনে করেন ইয়েচুরি শিবিরের অনেক নেতা।
[আরও পড়ুন:বাংলায় পরিবর্তন আনতে কট্টর হিন্দুত্বের তাস দিলীপের! প্রচারে বিতর্কিত অসীমানন্দও]