সাত বছরের মেয়ে পুলিশে দিল বাবাকে! কিন্তু কী এর কারণ, জানলে অবাক হবেন
বাবার কাছে একটা টয়লেটের আবদার করেছিল সাত বছরের মেয়ে। বাবাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন- পরীক্ষায় ভালো ফল করলে বানিয়ে দেবেন একটা টয়লেট।
বাবার কাছে একটা টয়লেটের আবদার করেছিল সাত বছরের মেয়ে। বাবাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন- পরীক্ষায় ভালো ফল করলে বানিয়ে দেবেন একটা টয়লেট। সেইমতো পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল হানিফা। কিন্তু কথা রাখেননি বাবা। তাই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করায় বাবাকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিল ছোট্ট মেয়ে।
তামিলনাড়ুর আম্বুরে বাবা-মায়ের সঙ্গে বাস হানিফার। কিন্তু তাদের বাড়িতে কোনও টয়লেট নেই। তাই বাবার কাছে ছোট্ট মেয়ে আবদার করেছিল একটা টয়লেট বানিয়ে দেওয়ার। কিন্তু বাবা কথা না রাখায়, পুলিশের কাছে চিঠি লিখে অভিযোগ জানায় হানিফা। সেই চিঠির ভিত্তিতে পুলিশ তলব করে হানিফার বাবাকে।
পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করলে বাবা একটা টয়লেট বানিয়ে দেবে বলেছিল। তাই নার্সারি থেকে দারুন রেজাল্ট করে উপরের ক্লাসে উন্নীয় হয়েছিল হানিফা। এরপর বাবা কথা না রাখায়, সে পুলিশকে চিঠে লেখে- আমি পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছি। কিন্তু বাবা শুধুই বলে যাচ্ছে- এবার টয়লেট বানাবেন। কিন্তু বানাচ্ছেন না। আমার বাবা কথা রাখেনি। তাই তাঁকে গ্রেফতার করুন।
ওই চিঠিতে হানিফা এমনও লেখে, যদি বাবাকে গ্রেফতার না করা হয়, পুলিশ যেন বলে দেয় শৌচাগার বানানোর দিনক্ষণ স্থির করে দিতে, তা মুচলেকা আকারে লিখে দেওয়ারও আর্জি জানায় ছোট্ট হানিফা। হানিফার বাবা জানান, তিনি টয়লেট গড়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছেন, কিন্তু অর্থের অভাবে তা শেষ করে উঠতে পারেননি।
হানিফার বাবা আরও জানিয়েছেন, এখন তিনি কর্মহীন। তাই হানিফার কাছে আমি আরও কিছুদিন সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু তার পর থেকেই সে আমার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। হানিফা পাল্টা জানায়, বাবা এই একই কথা কতদিন ধরে বলে আসছে, টাকা নেই। কিন্তু এই কথা আমাকে আর কতদিন শুনতে হবে। তাই পুলিশের কাছে চিঠি লিখেছি।
১০ ডিসেম্বর হানিফা মায়ের সঙ্গে থানায় যায়। সেখানে টেবিলে তার পাওয়া অনেক ট্রফি, মেধার সার্টিফিকেট সাজিয়ে রেখে বলে, আপনারা আমাকে এসবের বিনিময়ে একটা টয়লেট বানিয়ে দেবেন! এরপর পুলিশ হানিফার বাবা এহসানুল্লাহকে ডেকে পাঠান থানায়। থানায় গিয়ে মেয়ের কীর্তি দেখে অবাক এহসান।
হানিফার এই সরল অভিযোগ দেখে পুলিশকর্তারাও খুশি। তাঁরা এর সুষ্ঠু সমাধান করতে বদ্ধপরিকর। ছোট্ট মেয়েটির এই উদ্যোগে টনক নড়েছে জেলা প্রশাসনের। হানিফার পরিবার-সহ যাঁদের শৌচাগার নেই, তা বানানোর উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। এরপর বাবার সঙ্গেও মিটমাট হয়ে গিয়েছে হানিফার। ১০দিন ধরে বাবার সঙ্গে যে কথা বন্ধ ছিল, সেই যুদ্ধের অবসানে হয়েছে বাবা-মেয়ের সন্ধি।