আরএসএস ইফতার পার্টি নিয়ে 'গ্রহের ফের' কাটছে না, নতুন কী বাধা এল জানেন
মুসলিম সংগঠনগুলি বয়কটের ডাক দেওয়ার পর এবার সমাজ কর্মীরাও বাধ সাধলেন আরএসএস-এর ইফতার পার্টির আয়োজনের স্থান নিয়ে।
এ যেন গ্রহের ফের! আরএসএস-এর গ্র্যান্ড ইফতার পার্টি নিয়ে বাধা কিছুতেই কাটছে না। এর আগে মুসলিম সংগঠনগুলি এই ইফতার পার্টি বয়কটের ডাক দিয়েছিল। এবার সমাজ কর্মীরাও বাধ সাধলেন ওই পার্টির আয়োজন নিয়ে। তাঁদের দাবি যেখানে এই পার্টির আয়োজন করার কথা সেখানে সরকারি ছাড়া কোনও অনুষ্ঠান করার নিয়ম নেই। ফলে এই ইফতার পার্টির ভবিষ্যত নিয়ে বড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে।
আরএসএস এর এই গ্যান্ড ইফতার পার্টি হওয়ার কথা মালাবার হিলস-এর সহ্যাদ্রি গেস্ট হাইসে। কিন্তু মুম্বইয়ের দুই সমাজকর্মী আইনজীবী আদিল খাতরি ও শাকিল আহমেদ শেখ-এর দাবি ওই গেস্ট হাউসে কোনও 'বেসরকারি ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান করা নিষিদ্ধ। এটি শুধু সরকারি কাজের জন্যই ব্যবহার করার কথা'। এ কথা জানিয়ে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল সি বিদ্যাসাগর রাও ও মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের কাছে চিঠিও দিয়েছেন তাঁরা। দাবি করেছএন যাতে ওই পার্টির আয়োজন সহ্যাদ্রি গেস্ট হাউসে না করতে দেওয়া হয়।
চিঠিতে তাঁরা জানিয়েছেন ২০১৫ সালেই রাজ্যের জেনারেল অ্যাডমিনেস্ট্রেশন দপ্তর ওই গেস্ট হাউসের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা প্রোটোকল বিভাগকে জানিয়ে দিয়েছিল এখআনে বেসরকারি সভা সমিতি ইত্যাদি অনুষ্ঠান করা যাবে না। এও জানানো হয়েছিল শুধু মাত্র মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যন্ত্রী, মন্ত্রী বা সচিব স্তরের আধিকারিকরাই ওই হলে সভা সমিতি বা সাংবাদিক সম্মেলন করতে পারবেন।
ইফতার পার্টিটির আয়োজক, আরএসএস-এর মুসলিম শাখা মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চ। তাঁরা জানিয়েছে বিশ্বের ৩০ টি মুসলিম দেশের প্রতিনিধিরা থাকবেন ওই ইফতারে। দেশের অমুসলিম সম্প্রদায়েরও ১০০ জনের মতো অংশ নেবেন পার্টিতে। তবে দেশের একাধিক মুসলিম সংগঠন এই পার্টির আয়োজনকে 'ধোকাবাজি' বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
মুসলিম সংগঠনগুলির দাবি, এই ইফতার পার্টির একমাত্র উদ্দেশ্য ২০১৯ লোকসভায় মুসলিম ভোট আদায় করা। তাঁরা সাফ জানিয়েছেন যতদিন না আরএসএস তাদের মুসলিম-বিরোধী নীতি ত্যাগ করছে, ততদিন কোনও মুসলিমের আরএসএস ইফতার পার্টিতে যাওয়া উচিত নয়। কারণ একদিন মুসলিমদের জন্য ইফতার আয়োজন করলেই লাভ জিহাদ বা গোরক্ষার নামে সারা দেশে মুসলিম নিধনের কলঙ্ক মুছে যাবে না।
মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চ অবশ্য আরএসএস-কে মুসলিম বিরোধী বলে মানতে নারাজ। সংগঠনের আহ্বায়ক বিরাজ পাচপোড়ের মতে, আরএসএস নিয়ে জনমানসে ভুল ধারণা আছে। আরএসএস কোনও সম্প্রদায়েরই বিরোধী নয়। তারা সবার মধ্যে শান্তি সম্বৃদ্ধি, সৌভাতৃত্ব ছড়াতে চায়। মানুষের ভুল ধারণাগুলো ভাঙাতেই এই ইফতারের আয়োজন।