পেটে পরপর লাথি, দিল্লি হিংসার মধ্যেই জন্ম নিল ‘আশ্চর্য শিশু’
পেটে পরপর লাথি, দিল্লি হিংসার মধ্যেই জন্ম নিল ‘আশ্চর্য শিশু’
এই দিনটা যে তিনি দেখতে পারবেন, তা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবেননি ৩০ বছরের ওই মহিলা। দিল্লি যখন অগ্নিগর্ভ, তখন এই অন্তঃসত্ত্বা ও তাঁর স্বামীকে বেধড়ক পিটিয়েছে একদল উন্মত্ত জনতা। অন্তঃসত্ত্বার পেটে পড়েছে পর পর লাথি। তবে সেই আগ্রাসী হিংস্রতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জন্ম নিয়েছে নতুন জীবন। ওই মহিলার কোল আলো করে এসেছে পুত্রসন্তান।
অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি
উত্তরপূর্ব দিল্লির কারাওয়াল নগরের বাসিন্দা ওই মহিলা এক সুস্থ-সবল পুত্রের জন্ম দিয়েছে। তাকে আশ্চর্য শিশু' হিসেবেই দেখছে গোটা পরিবার। হিংসার ঘটনায় জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই মহিলার বাড়িঘর। সোমবার রাতে তিনি, তাঁর স্বামী, দুই সন্তান ও শাশুড়ি তখন ঘুমোচ্ছিলেন। আচমকা দরজা ভেঙে হামলা চালায় একদল মানুষ। সেই রাতের অভিজ্ঞতার কথা মনে করে মহিলার শাশুড়ি জানান, ধর্মীয় স্লোগান টেনে তারা তাঁর ছেলেকে মারধর করে। কয়েকজন তাঁর পুত্রবধূর পেটে লাথিও মারে। তিনি বাঁচাতে গেলে তাঁর দিকেও তেড়ে আসে। সেই রাতে আর বেঁচে থাকবেন তাঁরা, এমনটা আশা করেননি। তবে ঈশ্বরের কৃপায় হিংসাকারীদের হাত থেকে পালাতে সক্ষম হয় ওই পরিবার। ছেলের বউকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ডাক্তাররা তাঁদের আল হিন্দ হাসপাতালে যেতে বলেন। সেখানে ভর্তি করার পর ওই মহিলা বুধবার পুত্রসন্তানের জন্ম দেয়। অনেক হিন্দু প্রতিবেশী তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।
সব হারিয়ে আশ্রয়হীন বহু পরিবার
বাড়িঘর, গৃহস্থালীর জিনিসপত্র সব শেষ হয়ে গিয়েছে। হাসপাতাল ছেড়ে দিলে কী হবে তাদের ঠিকানা কোথায় এখন, তাও জানা নেই। তবু সব শোক ভুলে এখন ছোট্ট প্রাণকে খড়কুটো করেই বাঁচার আশায় রয়েছে ওই পরিবার। ওই পরিবারের কথায়, ‘সব শেষ হয়ে গিয়েছে। আমরা হয়তো কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে উঠব। নতুন জীবন গড়ে তুলব।'
দিল্লির হিংসায় মৃত ৩৪ জন
উত্তর-পূর্ব দিল্লির সাম্প্রদায়িক হিংসা প্রাণ কেড়েছে ৩৪ জনের। আহত ২০০ জনেরও বেশি। বিক্ষুব্ধ জনতা বাড়ি-ঘর ভেঙে দিয়েছে, জ্বালিয়ে দিয়েছে গাড়ি, দোকান, পেট্রোল পাম্প ও পাথর ছুঁড়েছে স্থানীয় ও পুলিশের দিকে। জাফরাবাদ, মৌজপুর, বাবরপুর, যমুনা বিহার, ভজনাপুরা, ,চাঁদবাগ ও শিব বিহারে সাম্প্রদায়িক অশান্তি বেশি দেখা দেয়।