এডিটার'স মেইলবক্স: যৌন অপরাধীর পরিচয় আর নারী কাজি নিয়ে প্রশ্ন
এডিটার'স মেইলবক্স: যৌন অপরাধীর পরিচয় আর নারী কাজি নিয়ে প্রশ্ন
সম্প্রতি ঢাকায় একজন স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে তারই একজন সহপাঠীর বিরুদ্ধে। গণমাধ্যমে নিহত মেয়ে এবং অভিযুক্ত ছেলে, দু'জনেরই নাম-ঠিকানা এমনকি ছবি প্রকাশ পাওয়ায় অনেকেই হতবাক হয়েছেন। অনেকে মিডিয়ার মাধ্যমে বিচার বা মিডিয়া ট্রায়ালের অভিযোগ তুলেছেন।
সে বিষয়ে কয়েকটি মেইল এসেছে, প্রথমটি লিখেছেন খুলনার কপিলমুনি থেকে মোহাম্মদ শিমুল বিল্লাল বাপ্পি:
''অনেক স্পর্শকাতর বিষয়ে সাধারণত নাম ঠিকানা প্রকাশ করলে ভুক্তভোগীরা সামাজিক ভাবে হেয় হতে পারেন। আবার সদ্য কোন ঘটনা ঘটেছে কিন্তু মামলা হয়নি, কিম্বা মামলা প্রক্রিয়াধীন কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হবার আগেই আমরা গণ মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামের অনেক বিশেষণ শুনতে পাই। বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন ব্যক্তিকে কি দোষী বলা যায়? সংবাদ বা ছবি প্রচার করার একটা রাষ্ট্রীয় আইন নিশ্চয় আছে, তবে কেন কোন কোন গণ মাধ্যম আইনের অনুসরণ করে না? যে সকল গণ মাধ্যম আইন ভঙ্গ করে তাদের কীভাবে আইনের আওতায় আনা উচিত?''
আপনি ঠিকই বলেছেন মি. বিল্লাল, আদালতে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত কাওকে চোর-ডাকাত বলা অন্যায় একটি কাজ। আর যেখানে যৌন অপরাধ জড়িত, সেখানে আরো বেশি সাবধান হওয়া উচিত। যিনি আক্রমণের শিকার তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করা তো উচিত নয়ই, এমনকি অভিযুক্তর পরিচয়ও বিচার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত গোপন রাখা উচিত।
সব দেশের মত বাংলাদেশেও মানহানি এবং আদালত অবমাননা সংক্রান্ত আইন আছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে গণমাধ্যম-এর নিজস্ব একটি নীতিমালা অনুসরণ করা উচিত যাতে নির্দোষ ব্যক্তি মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে দোষী না হয়ে যায়। এই দায়িত্ববোধটা হয় মিডিয়ার ভেতর থেকেই আসতে হবে, না হয় আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
তবে শুধু মিডিয়া না, এখানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকেও দায়ী করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লিখেছেন মোহাম্মদ মাসুদ রানা:
''বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সংবাদ মাধ্যম গুলো অপরাধ প্রমাণ হওয়ার আগে ঘটনাস্থলেই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খুনি, ধর্ষণকারী নামে ছবি সহ উপস্থাপন করে থাকেন। এতে করে অভিযুক্ত ব্যক্তির ভবিষ্যৎ জীবন যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনি তার পরবর্তীতে ভালো ভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তার পরিবার সহ আত্মীয়স্বজনদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার আগেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এবং সংবাদ মাধ্যম গুলোর এই স্বেচ্ছাচারী সংবাদ প্রচার কতটা যৌক্তিক?''
একই বিষয়ে লিখেছেন বগুড়ার শেরপুর থেকে সম্পদ কুমার পোদ্দার বলরাম:
''বাংলাদেশে ন্যায় বিচার পাওয়া প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার। যেকোনো অভিযুক্ত বা গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরও ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। আত্মপক্ষ সমর্থনের অবাধ সুযোগ রয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে অভিযুক্ত ব্যক্তি আর প্রমাণিত বা দণ্ডিত ব্যক্তি এক নয়। অভিযোগ যে কারো বিরুদ্ধে উঠতেই পারে। তার মানে এই নয় যে, তিনি অপরাধী। বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আগেই তথাকথিত মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে কাউকে অপরাধী হিসেবে অভিহিত করা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। আমি প্রত্যেক অপরাধের বিচার এবং শাস্তি চাই কিন্তু তা আদালতে প্রমাণিত হওয়ার আগে নয়।''
আপনারা দু'জনই গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন মি. রানা এবং মি. পোদ্দার। এখানে পুলিশের গুরু দায়িত্ব রয়েছে বলে আমি মনে করি। পুলিশের উচিত অভিযুক্তর নাম প্রকাশ না করা এবং আদালতের আদেশের মাধ্যমে সেটা নিশ্চিত করা। বিচারের আগেই অভিযুক্তর নাম-ছবি সব প্রকাশ করা হলে সেটা ন্যায় বিচারে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আর বিচারে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও তিনি চিরকাল সমাজে হেয় হয়ে থাকবেন। তবে এরকম কোন অপরাধে ভিকটিমের কথাটা সবসময় মনে রাখা দরকার - এক দিকে যেমন তার ন্যায় বিচার পাবার বিষয় আছে, অন্য দিকে নতুন করে সমাজে হেনস্তা যাতে না হতে হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার।
নারী অধিকার প্রসঙ্গেই থাকি, তবে বিষয়টি হচ্ছে নির্দিষ্ট পেশায় কাজ করা নিয়ে। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশে আইন মন্ত্রণালয় বিবাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে একজন নারীর নিয়োগ বাতিলে করে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আয়েশা সিদ্দিকা হাইকোর্টে পিটিশন করেন। কিন্তু আদালত তার পিটিশন খারিজ করে দেয় এবং হাই কোর্টের রায় এই সপ্তাহে প্রকাশ করা হয়েছে।
এ' নিয়ে লিখেছেন রংপুরের কাউনিয়া থেকে বিলকিছ আক্তার:
''নিকাহ রেজিস্ট্রার হতে পারবেন না বাংলাদেশের নারীরা! বিবিসি বাংলা'র ফেসবুক পেজে ও ওয়েবসাইটে খবরটি পড়ে চমকে উঠলাম। আরও অবাক হলাম- যখন দেখলাম, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় উপদেষ্টা কমিটি পরীক্ষায় প্রথম স্থান প্রাপ্ত নারীর নাম সুপারিশ করলেও, তা বাতিল করে আইন মন্ত্রণালয়। পুরুষরা কাজি হতে পারলে নারীরা কেনো তা পারবে না? একজন নারী বিবাহ বন্ধন করার কাজি হতে পারে, এতে তো কোন ক্ষতি নেই। আর এতে কোন সমস্যা হওয়ার কথাও নয়। যুক্তি-তর্ক অনুসারে কোন বিভেদ নেই, এতে সরকারি কোন সমস্যা হওয়ারও কথা নয়।''
আপনি ঠিকই বলেছেন মিস আক্তার, সরকারের কী অসুবিধা হত, সেটা বোঝা মুশকিল। অন্যদিকে, হাই কোর্টের রায়ে বিচারকগণ ধর্মীয় যুক্তি দিয়েছেন। তারা বলেছেন, নারী মাসিকের সময় নামাজ পড়ার মত ধর্মীয় কাজ করতে পারেন না, তাই বিয়ে পড়ানোর মত পবিত্র ধর্মীয় কাজ করবেন কী করে? রায়টি অবশ্যই ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এবং বিষয়টির এখানেই সমাপ্তি ঘটছে বলে আমার মনে হয় না। আয়েশা সিদ্দিকা সম্পর্কে আরো জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।
এবারে আরেকটি বিতর্কিত বিষয় নিয়ে চিঠি। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষৗদের হাতে বাংলাদেশি নিহত হবার ঘটনা দু'দেশের সম্পর্কে একটি কাঁটা হিসেবেই রয়ে গেছে। কিন্তু সম্প্রতি মেঘালয় সীমান্তে বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ বা বিজিবির হাতে একজন ভারতীয় নাগরিক নিহত হবার ঘটনা নিয়ে সীমান্তে কিছুটা উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল।
সে বিষয়ে লিখেছেন ঢাকার গেণ্ডারিয়া থেকে মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান:
''এ ধরণের সীমান্ত হত্যা খুবই দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য, সেটা যে পক্ষ থেকেই ঘটুক না কেন। বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে বিএসএফ যে পরিমাণ হত্যাকাণ্ড ঘটায়, তা অন্যান্য দেশের সীমান্তে খুবই বিরল। এ ধরণের হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর কোন বাছবিচার ছাড়াই বিএসএফ এদের চোরাকারবারি বা মাদক ব্যবসায়ী বলে চিহ্নিত করে। বিএসএফ সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার বহু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কিন্তু রক্ষা করেনি। আমি মনে করি, বিজিবি ও বিএসএফ যদি আন্তরিকভাবে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, তবে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব এবং এটা উভয় দেশের জন্য মঙ্গলজনক।''
বিশ্বের অনেক সীমান্ত দিয়েই চোরাচালান হয়, মানব পাচার হয়, কিন্তু দেখা মাত্র গুলি করার নীতি কোন দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী অনুসরণ করে বলে আমার মনে হয় না। গুলি হয় যখন সীমান্ত লঙ্ঘনকারীরা সশস্ত্র এবং বিপজ্জনক বলে তথ্য থাকে। বিএসএফ প্রায়ই বলে থাকে চোরাকারবারি তাদের লক্ষ্য করে গুলি করার পরই তারা গুলি করে এবং তাতে মানুষ মারা যায়। বলতে পারেন, খানিকটা বাংলাদেশে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ক্রসফায়ারের মত ব্যাপার। বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ড অবশ্যই আন্তর্জাতিকভাবে অপরাধ হিসেবে দেখা হয় এবং সীমান্তে হত্যাকাণ্ড অনেকটা সেরকমই মনে হয়।
একই বিষয়ে লিখেছেন মোহাম্মদ মুশফিকুর, তবে তিনি কোথা থেকে লিখেছেন সেটা উল্লেখ করেননি:
''সীমান্তে হত্যা ভারতীয়রা হোক কিংবা বাংলাদেশিরা হোক, কোনো দেশের নাগরিকই তা সমর্থন করেনা। প্রায় একযুগ ধরে সীমান্তে হত্যা বন্ধের জন্য বিজিবি এবং বিএসএফ এর মধ্যে নানা সময় বৈঠক হয়েছে। মোদী সরকার এবং বাংলাদেশ সরকারের মাঝেও এ'বিষয়ে নানা চুক্তি হয়েছে । কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ,সীমান্তে হত্যা পূর্বের মতই অব্যাহত রয়েছে । আমি জানতে চাচ্ছি, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ হচ্ছে না কেন? এখানে আসলে ব্যর্থতাটা কার? বিজিবি, বিএসএফ নাকি দুই সরকারের?''
সীমান্ত হত্যা যেহেতু মূলত: ভারতীয় ভূখণ্ডে হয় এবং সেগুলোর পেছনে বিএসএফ আছে বলেই ধারণা করা হয়, তাই বিজিবিকে এখানে দায়ী করা যাবে বলে মনে হয়না। দু'দেশের সরকারের অবশ্যই দায়িত্ব আছে, কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে একটা সমঝোতায় আসা। সব চেয়ে জরুরি হবে, বিএসএফ-এর গুলি বন্ধ করা, কারণ তা না হলে প্রাণহানি বন্ধ হবে না। তবে বিএসএফ-এর আত্মরক্ষার অধিকার আছে, সে কথাও মনে রাখা দরকার।
এবারে আমাদের অনুষ্ঠান নিয়ে কিছু প্রশ্ন, প্রথমটি করেছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থেকে শফিকুল ইসলাম:
''ইদানিং লক্ষ করা যাচ্ছে যে, প্রীতিভাজনেসুতে শ্রোতারা মেইল পাঠাচ্ছে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন নিয়ে, আর বিবিসি বাংলার সম্পাদক সকল প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন সাবলীল ভাষায়। কিন্তু শ্রোতাদের এত সুন্দর ই-মেইল পড়ার পরও তাদেরকে ধন্যবাদটুকু দেয়া হয় না। বরং অনুষ্ঠান শেষে বলা হয় এতক্ষণ শোনার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। আমার প্রশ্ন হচ্ছে,প্রতিজন শ্রোতা কি তাদের ই-মেইলের জন্য বিবিসি বাংলার কাছে ধন্যবাদটুকু পাওয়ার আশা রাখে না?''
ভাল প্রশ্ন করেছেন মি. ইসলাম। এক সময় আমি প্রত্যেক চিঠির উত্তরের আগে লেখককে ধন্যবাদ দিতাম। কিন্তু পরে ভাবলাম, শ্রোতা নিশ্চয়ই ধন্যবাদ পাবার জন্য চিঠি লিখছেন না? আর প্রতিটি চিঠির পর 'আপনাকে ধন্যবাদ' শুনতেও কেমন এক ঘেঁয়ে লাগছিল। তাই ধন্যবাদ বাদ দিয়ে সেই সময়টুকু চিঠি এবং উত্তরের জন্য বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নেই। এখানে কোন অভদ্রতা নেই, শুধু সময়ের ব্যবহার সংক্রান্ত অত্যন্ত মামুলি একটি বিষয়।
আরেকটি অভিযোগ করে লিখেছেন মাদারীপুরের কেন্দুয়া থেকে মোহাম্মদ রাসেল শিকদার:
''মাদারীপুর জেলায় বিবিসি বাংলার সঙ্গ পেতে আমাকে সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভর করতে হয় শর্টওয়েভের উপর। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার প্রবাহ অনুষ্ঠান শর্টওয়েভে ভালো শোনা গেলেও রাত সাড়ে দশটার পরিক্রমা শোনার সময় কোন রিসেপশন পাওয়া যায় না। আমি এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি প্রায় পনেরো দিন ধরে। শর্টওয়েভের ফ্রিকোয়েন্সি বিবিসির নিজস্ব হওয়ায় অনেক সময় আমরা রিপোর্ট করলেও আপনারা এড়িয়ে যান। আশা করি এড়িয়ে না গিয়ে বিবিসি বাংলার কারিগরি টিম সমস্যাটির সমাধান করবেন।''
আমি ঠিক বুঝতে পারছি না আমরা বিষয়টি কীভাবে এড়িয়ে যাচ্ছি। আপনি কবে, কীভাবে কাদের কাছে রিপোর্ট করেছেন সেটা বলেন নি। তাছাড়া, বিবিসি বাংলার কোন কারিগরি টিম নেই এবং গত ১৫ দিনে কোন অভিযোগ এসেছে বলে আমার জানা নেই। রাত সাড়ে দশটার পরিক্রমা এখন প্রচার করা হচ্ছে দুটো ফ্রিকোয়েন্সিতে - ৩১ মিটার ব্যান্ডে ৯৫৮৫ কিলোহার্টসে আর ৪১ মিটার ব্যান্ডে ৭২৬৫ কিলোহার্টসে। আপনি আবার চেষ্টা করে দেখুন।
আমাদের তৈরি একটি ভিডিও নিয়ে অভিযোগ করেছেন ঢাকার ধানমন্ডি থেকে শামীম উদ্দিন শ্যামল:
''টাকা পয়সা খরচ করার আগে পাঁচটি নিয়ম অনুসরণের যে ছোট ভিডিওটি দেয়া হয়েছে, তা আমার কাছে হাস্যকর মনে হয়েছে। এ ভিডিওটি আসলে কোন পর্যায়ের মানুষদের জন্য তা বুঝতে পারলাম না। আমার মতো নিম্ন আয়ের মানুষেরা বেতন পাবার পরপরই বাড়ি ভাড়া ও চাল-তেল-নুন কিনতে কিনতেই তা শেষ হয়ে যায়। অন্যান্য খরচ নিয়ে ভাবনাটাই বড় চিন্তার হয়ে দাঁড়ায়। মধ্যবিত্তদের অবস্থাও একই। ভিডিওতে বিলাসিতা শব্দটি এসেছে। যেখানে টানাটানি লেগেই থাকে সেখানে বিলাসিতা করবে কোথা থেকে?''
এখানে আপনার সাথে দ্বিমত করা সম্ভব না মি. শামীম উদ্দিন। ভিডিওটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটি মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্তদের কথা মাথায় রেখেই করা হয়েছে। গ্রামের কৃষক পরিবার বা শহরের নিম্ন বিত্ত যদি তাদের আয়ের ৫০ শতাংশ দিয়ে বাড়ি ভাড়া এবং খাদ্যসহ দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে পারতেন তাহলে জীবন অনেক সুখকর হত। ভিডিওটিতে পরিষ্কার করে ব্যাখ্যা করা উচিত ছিল যে এই সব উপদেশ তাদের বেলায় প্রযোজ্য যাদের পারিবারিক আয় একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের ওপরে।
এতগুলো অভিযোগের পর কিছু প্রশংসা পেলে মন্দ হয় না। সেরকম একটি মেইল পাঠিয়েছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে মশিউর রহমান:
''বিবিসি বাংলার ডিজিটাল প্লাটফর্ম থেকে দেখলাম, একজন সাধারণ মানুষের মাঝে গাছের প্রতি যে ভালবাসা, তা সত্যি অতুলনীয়। ওয়াহিদ সরকার গাছকে সন্তান হিসেবে দেখেন। তার কথাগুলো খুব ভাল লাগলো- এই কষ্ট আমি কাকে বোঝাব? এতো হৃদয় বিদারক কথা তুলে ধরার জন্য বিবিসি বাংলাকে ধন্যবাদ।''
আপনাকেও ধন্যবাদ মি. রহমান, আমাদের পরিবেশনা আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমাদেরও ভাল লাগল।
তবে গত সপ্তাহের প্রীতিভাজনেসুতে চিঠি পড়ায় কিছু গলদ ছিল বলে জানিয়েছেন খুলনার দাকোপ থেকে মুকুল সরদার:
''প্রীতিভাজনেসুতে আমার মেইলটি শুনে রীতিমতো বিস্মিত হয়েছি। আমি কি আসলে ভারত থেকে করোনা ভাইরাস আমদানির কথা লিখেছিলাম? আমি লিখেছিলাম, করোনা ভাইরাসের ভ্যাক্সিন আনার প্রসঙ্গে। কিন্তু আপনারা তো আমাকে করোনা ভাইরাস আমদানির দায়ে ফেলে দিয়েছেন। আমি জানি এটি একেবারেই অনিচ্ছাকৃত ছিল কারণ ওয়েব সাইটে একদম ঠিক আছে।''
আপনি ঠিকই শুনেছেন মি. সরদার, আমরা আপনার মুখে ভারত থেকে করোনাভাইরাস আমদানির কথা তুলে দিয়েছি। এটা একটা মারাত্মক ভুল যার জন্য আমরা অত্যন্ত দু:খিত। শুধু মাত্র একটি শব্দ বাদ পড়ে গেলে গোটা বাক্য যে উদ্ভট হয়ে যায়, এটা তারই প্রমাণ। আশা করি ভবিষ্যতে এরকম হবে না।
এবার কিছু চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করা যাক:
মনিরুল হক রনি, সাভার সরকারি কলেজ, ঢাকা
দীপক চক্রবর্তী, দেবীগঞ্জ, পঞ্চগড়।
মাসুম বিল্লাহ শুভ্র, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
এম আলম, পূর্ব কাফরুল, ঢাকা সেনানিবাস।
মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, আদমদীঘি, বগুড়া।
অরবিন্দ রায়, মানিকগঞ্জ।
আহসান হাবিব রাজু, গুড়িয়াদহ , লালমনিরহাট।
মেনহাজুল ইসলাম তারেক, পার্বতীপুর, দিনাজপুর।