দলিত কিশোরীর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মিলেছে বেশ কিছু সূত্র, তদন্তে গঠন ৬টি পুলিশের দল
দলিত কিশোরীর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মিলেছে বেশ কিছু সূত্র
উত্তরপ্রদেশে দু’জন কিশোরীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ খুনের মামলা রুজু করল। ক্ষেত থেকে উদ্ধার হওয়া দুই দলিত কিশোরীর দেহ ময়নাতদন্তের পর দেখা গিয়েছে শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। অন্যদিকে, কানপুর হাসপাতালে ভর্তি তৃতীয় কিশোরী ভেন্টিলেটার সাপোর্টে রয়েছে এবং তাকে বিষ দেওয়া হয়েছিল বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
লখনউয়ের আইজিপি জানিয়েছেন যে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বেশ কিছু ক্লু পাওয়া গিয়েছে এবং এই মামলার তদন্তে ছ’টি পুলিশের দল গঠন করা হয়েছে। এই টিম বিভিন্ন ধরনের টাস্কের মধ্য দিয়ে তদন্ত চালাবে। এই টিমের পর্যবেক্ষণ করবেন খোদ উন্নাওয়ের পুলিশ সুপার। আইজিপি লখনউ এ প্রসঙ্গে বলেন, 'ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উঠে এসেছে বেশ কিছু বিষয় এবং আমরা সঠিক পথেই চলেছি। আমরা শীঘ্রই এই কেসে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনব।’ শুক্রবার কিশোরীদের পরিবারের থেকে সম্মতি নেওয়ার পর দেহগুলির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য বহু পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে গ্রামে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কিশোরীদের দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন না পাওয়া গেলেও, এই রিপোর্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে বিষ প্রয়োগের ফলে মৃত্যু হতে পারে। পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলার আসোহার বাবুহারা গ্রামের এই ঘটনা সম্পর্কে অবহিত রাজ্যের মানবাধিকার কমিশন, কমিশনের পক্ষ থেকে বুধবার গ্রামে পরিদর্শনের জন্য আসে এবং এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলি সরব হয়। পুলিশ যদিও জানিয়েছে যে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে স্পষ্ট করে কিশোরীদের মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করা হয়নি, কিশোরীদের ভিসেরার নমুনা পরবর্তী পরীক্ষার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে যে আক্রান্ত কিশোরীদের হাত বাঁধা ছিল, তবে কোনও আঘাতের চিহ্ন সেখানে নেই। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার (খুন) পাশাপাশি ২০১ ধারা (প্রমাণ লোপাট) যোগ করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে এই এফআইআর। ১৪,১৫ ও ১৬ বছর বয়সী তিন কিশোরী গবাদি পশুকে খাওয়ানোর জন্য বাড়ি থেকে বেরোনোর পর আর বাড়ি না ফেরায় গ্রামবাসীরা তাদের খুঁজতে বের হয় এবং ক্ষেতের মধ্যে তাদের দেহ উদ্ধার হয়। তাদের তিনজনকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাদের মধ্যে ২ জনের মৃত্যু ঘটে। তৃতীয় কিশোরী এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে কানপুর হাসপাতালে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এই ঘটনা সম্পর্কে সম্পূর্ণ রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন ডিজিপির কাছ থেকে। তিনি তাঁর আধিকারিকদের তৃতীয় কিশোরীর চিকিৎসা যেন সঠিকভাবে হয় সেদিকে নজর রাখতে বলেছেন।
মহিলা নিরাপত্তা নিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। রাহুল গান্ধী টুইটে বলেছেন, 'উত্তরপ্রদেশ সরকার শুধু দলিত সমাজকে পিষছে না, মহিলার সম্মান ও অধিকারকেও পিষে দিচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, 'কিন্তু সরকারকে মনে রাখতে হবে আমি এবং আমার পুরো কংগ্রেস দল আক্রান্তের কন্ঠ হবো এবং তাদের বিচার পাইয়ে দেব।’ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তৃতীয় কিশোরীর চিকিৎসা দিল্লিতে করানোর দাবি করেছে।
লাগাম ছাড়া জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, প্রতিবাদে পথে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস, কর্মসূচি ঘোষণা পার্থর