সিএএ নিয়ে প্রতিবাদ করতে জামা মসজিদে জমায়েত, জারি ১৪৪ ধারা
সিএএ নিয়ে প্রতিবাদ করতে জামা মসজিদে জমায়েত, জারি ১৪৪ ধারা
নতুন নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) প্রতিবাদ করতে জামা মসজিদের বাইরে জমায়েত হল বিপুল সংখ্যক মানুষ। দিল্লি পুলিশ কড়া নজর রেখেছে যাতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে না পারে। শহরের বহু সংবেদনশীল অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। উত্তর–পূর্ব দিল্লির কিছু অঞ্চলে মিছিলের পরিকল্পনা হয়েছে। শুক্রবারের প্রার্থনার আগে এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে কিছু সংস্থার প্রতিবাদ উপলক্ষ্যে কড়া পুলিশ প্রহরা রাখা হয়েছে বহু অঞ্চলে।
কোনও ধরনের হিংসাত্মক ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য জামা মসজিদ এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি আইটিও, লাল কেল্লা, দিল্লি গেটেও জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। কংগ্রেস নেতা অলকা লাম্বা জামা মসজিদের বাইরে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। উত্তর দিল্লির বেশ কিছু এলাকায় সতর্কতা জারি করে দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহেই দিল্লিতে বিক্ষোভের নামে ভয়াবহ হিংসাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। শুক্রবার জামা মসজিদের কাছে ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদের নেতৃত্বে বিপুল প্রতিবাদ দেখা গিয়েছিল। নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের বিরোধিতায় জামা মসজিদ থেকে যন্তর মন্তর পর্যন্ত ওই প্রতিবাদ মিছিলের অনুমতি দেয়নি দিল্লি পুলিশ। গ্রেফতার হন আজাদ। দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বেশ কয়েকটি সংগঠন এ দিন মিছিলের ডাক দিয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তার মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ ভবন, সিলামপুর এবং জাফরাবাদ। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই এ দিন শয়ে শয়ে বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমেছেন। উত্তরপ্রদেশ ভবনের সামনে জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয়েছে উত্তরপ্রদেশ ভবন। ১৫ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে। ড্রোনের সাহায্যেও নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা এগনোর চেষ্টা করলে তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অন্য দিকে, ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদের মুক্তির দাবিতে কয়েকশো বিক্ষোভকারী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে এগনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকায় বিক্ষোভকারীরা এগোতে পারেননি বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। জোরবাগেও আজাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ চলছে। জমায়েতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গত শুক্রবারই এই জামা মসজিদের সামনেই চন্দ্রশেখর আজাদের নেতৃত্বে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছিল। ওই দিন সন্ধ্যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের মধ্যে দফায় দফায় খণ্ডযুদ্ধ চলে। দু’পক্ষেরই অনেকে আহত হন। আন্দোলনকারীরা তাঁদের হাত বেঁধে নিয়েছেন, যাতে হিংসা ছড়ানোর দায় তাঁদের ঘাড়ে কেউ চাপাতে না পারে। বাবাসাহেব আম্বেদকর ও আজাদের পোস্টার নিয়ে তাঁরা স্লোগান দেন 'তানাশাহি নেহি চলেগি’ বলতে বলতে এগিয়ে চলেন। উত্তরপ্রদেশের বহু এলাকাতেও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে ঘিরে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে।