করোনিলে সারবে করোনা! প্রতিষেধকের আবিস্কারের ভুয়ো দাবির পর রামদেবের বিরুদ্ধে এফআইআর জয়পুরে
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে 'করোনিল' বাজারে আনার ক'দিনের মধ্যেই সমস্যায় পতঞ্জলি। পতঞ্জলির প্রতিষ্ঠাতা যোগগুরু রামদেব বাবা, পতঞ্জলির সিইও আচার্য্য বালকৃষ্ণ ও আরও তিনজনের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাজস্থানের জয়পুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ, 'করোনিল'-কে করোনা প্রতিরোধী হিসেবে বাজারে এনে ব্যবসায়িক লাভের লোভে মানুষকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে পতঞ্জলি।
মঙ্গলবার করোনিলকে বাজারে আনেন রামদেব
মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে 'করোনিল'-কে বাজারে আনেন রামদেব। আর তার পরেই বিতর্কের সূত্রপাত হয়। শুক্রবার জয়পুর থানায় যোগগুরু রামদেব বাবা, আচার্য্য বালকৃষ্ণ, বিজ্ঞানী অনুরাগ ভার্ষনেই, এনআইএমএসের চেয়ারম্যান ডঃ বলবীর সিং তোমার ও ডাইরেক্টর ডঃ অনুরাগ তোমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান হয়। কেন্দ্রীয় আয়ুর্বেদিক বিভাগ এই ওষুধের ট্রায়াল সংক্রান্ত তথ্যের যাচাই করে করোনার প্রতিষেধক হিসেবে 'করোনিল'-এর বিজ্ঞাপন বন্ধের নির্দেশ দেয়। জ্যোতিনগর থানার এসএইচও অভিযোগ দায়ের করার ব্যাপারটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় মামলা রুজু
জয়পুর থানায় অভিযোগকারী বলরাম জাখরের মতে, "যোগগুরু রামদেব বাবা সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। ওনারা 'করোনিল'-কে করোনা প্রতিরোধী হিসেবে বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছিলেন।" সূত্রের খবর অনুযায়ী, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। অন্যদিকে করোনিলের সাথে যুক্ত বলবীর সিং তোমার জানিয়েছেন, "রোগীদের উপর পরীক্ষানিরীক্ষা চালানোর জন্য সবরকমের প্রয়োজনীয় অনুমতি আমাদের ছিল। আইসিএমআরের অংশ সিটিআরআইয়ের কাছ থেকে যে অনুমতিপত্র পেয়েছিলাম, তাও দেখাতে পারি।"
১০০ জনের উপর করোনিল ট্রায়ালের ঘটনা সামনে এসেছে
বলবীর সিং তোমারের কথায়, "জয়পুরের এনআইএমএস-এ ১০০ জনের উপর করোনিলের ট্রায়াল হয়েছে, যার মধ্যে ৬৯ জন তিনদিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছে ও সাতদিনের মধ্যে ১০০% মানুষ সুস্থ হয়ে গেছেন।" তিনি আরও বলেন, "আমরা রাজস্থান স্বাস্থ্য দপ্তরকে করোনিলের ব্যাপারে ২রা জুন জানিয়েছিলাম। তাছাড়া পতঞ্জলিকে এটা জিজ্ঞাসা করা উচিত যে, করোনিল রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বর্ধক নাকি করোনা নিরাময়ক।"
ইতিপূর্বে বিহারে রামদেব ও বালকৃষ্ণের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের
সূত্রের খবর অনুযায়ী, ইতিপূর্বে যোগগুরু রামদেব বাবা ও এমডি আচার্য্য বালকৃষ্ণের বিরুদ্ধে করোনিলকে করোনা প্রতিরোধী হিসেবে প্রচার করে লক্ষ মানুষের প্রাণ বিপন্ন করার অভিযোগ আনা হয়েছে বিহার আদালতে। বিহার আদালত ৩০শে জুন শুনানির দিন ধার্য করেছে। একদিকে যখন রামদেবের পতঞ্জলি আইন ভাঙার অভিযোগকে অস্বীকার করছে, অন্যদিকে রাজস্থানের স্বাস্থ্যদপ্তরের পক্ষ থেকে এনআইএমএস হাসপাতালের কাছে পতঞ্জলির ট্রায়ালের বিষয়ে জানতে চেয়ে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।