পাকিস্তানের চালিয়াতি! ওয়াঘাতেই ৫ ঘণ্টারও বেশি আটকে অভিনন্দন বর্তমান
৫ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ওয়াঘা সীমান্তে আটকে রয়েছেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। এর জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিএসএফ।
৫ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েও ওয়াঘা সীমান্তে আটকে থাকলেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। এর জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিএসএফ। সরকারিভাবে না হলে বিএসএফ-এর একটি সূত্রে দাবি অভিনন্দন-কে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে পাকিস্তান অযথা সময় নষ্ট করেছে। এমনকী, অভিনন্দনকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে শুক্রবার দুপুর থেকে দুইবার সময়ও পরিবর্তন করেছে পাকিস্তান। প্রথমে কথা ছিল দুপুর ১টার মধ্যে ওয়াঘা সীমান্তে ভারতের হাতে অভিনন্দনকে তুলে দেওয়া হবে। এরপর পাকিস্তান সেই সময়টাকে ৪টার পরে নিয়ে যায়। কিন্তু, বিকেল ৪.৩০টায় অভিনন্দনকে পাক রেঞ্জার্স-রা ওয়াঘা সীমান্তের চেকপোস্টে আনলেও রাত ৯টা পর্যন্ত ভারতের হাতে তুলে দেয়নি। শেষমেশ রাত ৯.৩০টা নাগাদ রাত নামা ওয়াঘা সীমান্ত-এ পাকিস্তানিদের হেফাজত থেকে বেরিয়ে গেট পার করে ভারতে ঢোকেন অভিনন্দন।
পাক রেঞ্জার্সের পক্ষ থেকে অভিনন্দনের মেডিক্যাল চেকআপ-এও দেরি করা হয় বলে বিএসএফ সূত্রে খবর। এরপর পেপার ওয়ার্কে অনেকটা দেরি করে পাকিস্তান। ওয়াঘা সীমান্তে অভিনন্দন-কে ভারতের হাতে তুলে দিতে সেখানে ছিলেন পাকিস্তানের রেঞ্জার্সের জওয়ানরা এবং মেজর পদমর্যাদার এক অফিসার। এছাড়াও ছিলেন পাক বিদেশ মন্ত্রকের এক মহিলা আধিকারিক।
জানা গিয়েছে, ওয়াঘা সীমান্তের চেকপোস্টে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হয় অভিনন্দনকে। বিএসএফ থেকে যতবারই পাক রেঞ্জার্সের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে ততবারই নাকি জানানো হয় পেপার ওয়ার্ক চলছে। এভাবেই রাত ৮ পেরিয়ে গেলেও পাকিস্তানের দিক থেকে বিএসএফ-এর হাতে পেপার্স না পৌঁছনোয় ধৈর্যের বাঁধ ভাঙতে থাকে। অভিনন্দন-কে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ায় বিষয়ে দেরি দেখে খোঁজ খবর নিতে থাকেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনিও বায়ুসেনার আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগে করেন। এই সময়ই পাকিস্তানের অযথা বিলম্বের বিষয়টি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কানে তুলে দেওয়া হয়। যুদ্ধবন্দিদের নিজেদের দেশের হাতে তুলে দেওয়াটা বিশাল কোনও জটিল বিষয় নয় যে তাতে গোটা দিন লেগে যাবে। তখনই এক এক সামনে আসে যে পাকিস্তান অভিনন্দন-কে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে কীভাবে ২ বার সময় বদলেছে সেই ঘটনাগুলি। এমনকী পেপার ওয়ার্কের নাম করে কেন অভিনন্দনকে পাক ভূখণ্ডে ৬ ঘণ্টারো বেশি সময় ধরে বসিয়ে রাখা হয়েছে তা নিয়েো প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
পাকিস্তানের এই রহস্যময় আচরণ নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার খানিক পরেই রাত ৯.০৫টা নাগাদ অভিনন্দনকে বাইরে এনে গেটের সামনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর সামনে ও পিছনে পাক রেঞ্জার্স-এর জওয়ানরা দাঁড়িয়ে থাকে। অভিনন্দনের পাশে পাকিস্তানের এক মহিলা আধিকারিককেও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। রাত ৯.২৫টা নাগাদ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের আদান-প্রদান সম্পূর্ণ হতেই ওয়াঘা সীমান্তের চেকপোস্টে পাকিস্তান তাদের গেট সামান্য ফাঁক করে। কিন্তু, ভারতের দিকের গোট প্রায় পুরোটাই খুলে দেওয়া হয়। যেন ঘরে ফেরা ছেলেকে পুরো দুহাত খুলে সাদর সম্ভাষণ। অভিনন্দনকে অভর্থ্যনা জানানোর জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন বিএসএফ-এর দুই উচ্চ-পদস্থ আধিকারিক। তাঁরাই অভিনন্দনকে নিয়ে এগোতে থাকেন। এরপরই বায়ুসেনার হাতে তুলে দেওয়া হয় অভিনন্দনকে।