একশোরও বেশি মিউকর্মাইসোসিস কেস গুজরাতে, হাসপাতালে আলাদা ওয়ার্ড তৈরির ঘোষণা রাজ্য সরকারের
একশোরও বেশি মিউকর্মাইসোসিস কেস গুজরাতে
ধ্বংসাত্মক করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় তরঙ্গের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে বেহাল দশা ভারতের স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থার। দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লক্ষের বেশি অতিক্রম করে গিয়েছে। এরই মধ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে এক ভয়ঙ্কর ছত্রাক সংক্রমণ, যার পোশাকি নাম 'মিউকর্মাইসোসিস’। বেশি পরিচিত 'ব্ল্যাক ফাঙ্গাল ইনফেকশন’ অর্থাৎ 'কালো ছত্রাক সংক্রমণ' হিসাবে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরই এই ছত্রাকের জটিলতা দেখা দেয়। এই ছত্রাক সংক্রমণের কেস বৃদ্ধির জেরে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানির নেতৃত্বে রাজ্য সরকারের কোর কমিটির বৈঠকে শনিবার ঘোষণা করা হয় যে আহমেদাবাদ, ভদোদরা, সুরাত, রাজকোট, ভাবনগর ও জামগনরের সরকারি হাসপাতালগুলিতে এই রোগের চিকিৎসার জন্য আলাদা করে ওয়ার্ড তৈরি করা হোক।
সরকারের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে যে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে ও গুজরাত মেডিক্যাল এডুকেশন রিসার্চ সোশ্যাইটি হাসপাতালে ১০০ জনের বেশি মিউকর্মাইসোসিস কেসের রোগী ভর্তি হয়েছে। সম্প্রতি আহমেদাবাদের জাইডাস হাসপাতালে প্রায় ৪০ জন ও ভদোদরার এসএসজি হাসপাতালে ৩৫ জন এই সংক্রমণের রোগীর চিকিৎসা চলছে। আহমেদাবাদের আসারওয়ার সরকারি হাসপাতালের দু’টি ওয়ার্ডে এই ছত্রাক সংক্রমণের ১৯ জন রোগীর চিকিৎসা চলছে, যা মিউকর্মাইসোসিস রোগীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এর আগে ২২ এপ্রিল রাজ্যের টাস্ক ফোর্স বিশেষজ্ঞ ও জাইডাস হাসপাতালের ডিরেক্টর ডাঃ ভিএন শাহ জানিয়েছেন যে ২ দিনের মধ্যে হাসপাতালে প্রায় ১০ জন কালো ছত্রাক সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হন এবং বেসরকারি হাসপাতালে এই সংক্রমণ এআক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।
তবে কোভিডের হাত ধরে এই রোগের দাপট বৃদ্ধির ঘটনা, গত বছর করোনার প্রথম ওয়েভের সময়ও দেখা গিয়েছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই সংক্রমণ কিন্তু মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। সংক্রমিত রোগীদের অনেকে দৃষ্টিশক্তি হারান, অনেকের ক্ষেত্রে নাক এবং চোয়ালের হাড় বাদ দিতে হয়। গুরুতর সংক্রমণের ক্ষেত্রে মৃত্যুও ঘটে। বিশেষ করে যাদের দেহে কোনও অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়েছে, আইসিইউতে আছেন যারা দীর্ঘদিন বা যাদের দীর্ঘমেয়াদী অনাক্রম্যতাজনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি। দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালের ডাক্তাররা জানিয়েছেন, কোভিডের প্রথম তরঙ্গের সময়ও অনেকে কোভিড জয়ীর দেহে ব্ল্যাক ফাঙ্গাল ইনফেকশন ধরা পড়েছিল। কোভিডকে হারিয়েও অনেকের মৃত্যু হয়েছিল এই রোগেই।