করোনা মন্দায় ধুঁকছে ভারতীয় রেল, ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে গেল ৩৬ হাজার কোটির গণ্ডি
করোনাকালে মন্দার ছাপ পড়েছে গোটা দেশজুড়েই। বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়েছে একাধিক সেক্টর। যার জেরে টান পড়েছে কেন্দ্রীয় কোষাগারেও। সরকারের অন্যন্যা মন্ত্রকের মতো করোনার জেরে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে রেলও। চলমান করোনা অতিমারীর কারণে ৩৬ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ভারতীয় রেলের। সম্প্রতি এমনটাই দাবি করেছেন রেল মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রাওসাহেব দানবে। আর এই বিশালাকার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ শুনেই বর্তমানে চমকে উঠছেন আর্থিক বিশেষজ্ঞেরা।
রেল প্রতিমন্ত্রীর গলায় হাতাশার সুর
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের জালনা রেলস্টেশনের একটি আন্ডারব্রিজ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়েই গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে ভারতীয় রেল কি নিদারুন দুরাবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তা পরিসংখ্যানগত ভাবে তুলে ধরেন তিনি। যদিও তিনি এও জানান বরাবরই ক্ষতিতেই চলে যাত্রীবাহী ট্রেন। যেহেতু টিকিটের দাম বাড়ানো হলে যাত্রীদের সমস্যা হবে, তাই তা বাড়ায় না সরকার।
ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে গেল ৩৬ হাজার কোটির গণ্ডি
তবে করোনাকালে সেই ক্ষতি আরও কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে বলে জানান তিনি। তারজেরেই মূলত রেলের সামগ্রিক ক্ষতি ৩৬ হাজার কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। তবে রাজস্ব এসেছে মালবাহী ট্রেন থেকে। অতিমারির সময়ে মালগাড়ি গুলিই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার মাল বহন করে মানুষকে স্বস্তি দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলেও জানান রাওসাহেব দানবে।
দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলছে সঙ্কট
এদিকে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে শুরু হয়েছে এই সঙ্কট। দেশজোড়া লকডাউনের প্রথম কোপই পড়ে রেলে। করোনা ভয়ে বন্ধ হয়ে যায় প্রায় সমস্ত ধরণের রেল পরিষেবা। তারপর থেকে দেড় বছরের কাছাকাছি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। মাঝে মাঝে লোকাল সহ দূরপাল্লার বেশ কিছু ট্রেন চালু হলেও পরিস্থিতি বিশেষ বদালায়নি। উল্টে বিনা টিকিটে যাত্রীর সংখ্যা বাড়ায় চাপ পড়েছে রেলের কোষাগারে।
একাধিক নতুন প্রকল্পের ঘোষণা
তবে এদিন জালনা রেলস্টেশনের একটি আন্ডারব্রিজ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মহারাষ্ট্রের জন্য একাধিক রেল প্রকল্পের সূচনা করতে দেখা যায় রেল মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীকে। শীঘ্রই মুম্বই-নাগপুর এক্সপ্রেসওয়ে বরাবর একটি বুলেট ট্রেন প্রোজেক্ট করা হবে বলে জানান তিনি। মানুষের প্রয়োজনীয়তার কথা ভেবে মুম্বই-নাগপুর এক্সপ্রেসওয়ে বরাবর এই প্রোজেক্টটি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে তাঁর মত। একইসাথে ভারতীয় রেলের তরফে ওয়েস্টার্ন ফ্রেইট করিডর প্রোজেক্টও হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে নভি মুম্বই ও দিল্লির মধ্যে সংযোগ স্থাপন আরও সহজ হবে।