এবার লাদাখ সীমান্তের কাছে ১০ হাজার বছর পুরোনো লেকের পুনরুজ্জীবনের চেষ্টায় ভারতীয় সেনা
লাদাখে দীর্ঘকালীন সময় ধরে চলবে যুদ্ধের পরিস্থিতি। এই কথা আঁচ করেই ভারতীয় সেনার তরফে এবার লাদাখের দৌলত বেগ ওলডির কাছে জলের সন্ধান শুরু হল। শীতকালে সেনার জন্যে গ্রাউন্ড লেভেলে জল খুবই প্রয়োজন হয়ে পড়বে। এই লক্ষ্যেই চলছে এই খোঁজ। এর জন্যে সেনার সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন ভূতত্ত্ববিজ্ঞানী ডঃ রীতেশ আর্য্য।
১৭ হাজার ফিট উচ্চতায় বয়ে যায় শায়ক নদী
শীতকালে ডিবিও দিয়ে বয়ে চলা শায়ক নদী এতই ঠান্ডা হয়ে যায় যে তাতে হাত দিলেই নিউমোনিয়া অবধারিত। সেখান থেকে জল ব্যবহার সেনার পক্ষে সম্ভব হবে না। এই অবস্থায় নদীর হিম শীতল জলের উপর দিয়ে ভারত বিশেষ ব্রিজ তৈরি করছে যা সারা বছর ব্যবহারের যোগ্য। জানা গিয়েছে ১৭ হাজার ফিট উচ্চতায় তৈরি এই ব্রিজের সাহায্যে লেহ থেকে দৌলত বেগ ওল্ডি এয়ার স্ট্রিপে যাওয়া আরও সহজ হবে যাবে। তবে সেনার জন্যে লেহ থেকে জল নিয়ে যাওয়াও প্রায় অসম্ভব। এই পরিস্থিতিতে নয়া খোঁজ শুরু করেছে সেনা।
১০ হাজার বছর পুরোনো লেককে ফেরানোর চেষ্টা
ভূতত্ত্ববিজ্ঞানী ডঃ রীতেশ আর্য্য ১০ হাজার বছর আগে ডিবিওতে বিদ্যমান একটি প্যালিয়ো হ্রদ পুনর্গঠনের বিষয়েও আশাবাদী। এদিকে অনেক বিশেষজ্ঞরই মত, কেবল সীমান্ত দ্বন্দ্ব কিংবা রাজনৈতিক কৌশল নয়, উত্তর লাদাখে ভারত-চিন সামরিক দ্বন্দ্বের পিছনে রয়েছে অন্য কারণও। লাদাখের এই অঞ্চলে উপস্থিত থাকতে পারে গ্যাস ও তেল সহ হাইড্রোকার্বন রিজার্ভ এবং ভূ শক্তিও। বিভিন্ন গবেষণায় এই শীতল মরুভূমি অঞ্চলে হাইড্রোকার্বনের উপস্থিতি সম্পর্কে নানা তথ্য উঠে আসছে।
হাইড্রোকার্বন মজুত থাকার সম্ভাবনা
দীর্ঘদিন ধরেই লাদাখ অঞ্চলে হাইড্রোকার্বন মজুত থাকার সম্ভাবনা সম্পর্কে অনুমান করা হচ্ছিল। কারণ এই অঞ্চলের একটি বড় অংশ টেথিস সাগরের সমুদ্রতল ছিল যা কয়েক মিলিয়ন বছর ধরে টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের কারণে পশ্চিম ও মধ্য হিমালয় হিসেবে গড়ে ওঠে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রাচীণ সমুদ্রতলের নিচে হাইড্রোকার্বন মজুত থাকতে পারে। টেথিয়ান হিমালয় জোনটি লাদাখের জানসকার পর্বতের ৭০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে, যা ভবিষ্যতে খনিজ গ্যাস বা তেল সন্ধানের অন্যতম এলাকা হয়ে উঠতে পারে।
ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে লড়াই
ভারত ও চিন, উভয়ই পেট্রল ও ডিজেল অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করে। ভারত তেলের চাহিদার ৮২ শতাংশ বাইরে থেকে আমদানি করে। তবে ২০২২ সালের মধ্যে পুনর্নবীকরণ শক্তির ব্যবহার, ইথানল ফুয়েলের ব্যবহার করে এই চাহিদা ৬৭ শতাংশে কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যদিকে চিন তাদের মোট তেল চাহিদার ৭৭ শতাংশই বাইরে থেকে আমদানি করে। সে ক্ষেত্রে নতুন খনিজ শক্তির অবস্থানের খোঁজ ভবিষ্যতে শক্তির সুরক্ষা এনে দিতে পারে।
উত্তর লাদাখে ভারতের অন্তিম পোস্ট দৌলত বেগ ওল্ডি
উত্তর লাদাখে ভারতের অন্তিম পোস্ট দৌলত বেগ ওল্ডি। সেই ডিবিওর অবস্থান সুমুদ্ধপিষ্ঠ থেকে ১৬০০০ ফিট উঁচুতে। এহেন দৌলত বেগ ওল্ডির উপর নজর দিচ্ছে চিনা সোনা। দেশের উচ্চতম এয়ারবেসকে শত্রুর নজর থেকে বাঁচাতে তাই কয়েকদিন আগেই কারাকোরাম পাসের কাছেই ভীষ্ম টি৯০ ট্যাঙ্করের স্কোয়াড্রন মোতায়েন করে ভারতীয় সেনা। এছাড়া ৪০০০ জন সৈনিকের একটি আস্ত ব্রিগেডও সেখানে ডিবিওতে মোতায়েন করেছে ভারত।
LAC-তে চিনের ৫২ হাজার সেনাকে জবাব দিতে তৈরি ভারত! লাদাখ জুড়ে মোতায়েন আরও জওয়ান