লকডাউন পরবর্তী সময়ে দেশে আশঙ্কাজনক ভাবে বাড়ল গর্ভপাতের সংখ্যা, কমল জন্ম হার
ভারতে লকডাউন পরবর্তী সময়ে আশঙ্কাজনক ভাবে বাড়ল গর্ভপাতের সংখ্যা
মনে করা হচ্ছিল লকডাউন পরবর্তী সময় ভারতে জন্মহার অনেকটাই বাড়বে। কিন্তু বর্তমান রিপোর্ট সেই কথা বলছে না। এদিকে টিকাকরণের জেরে করোনা বর্তমানে বেশ কিছুটা ব্যাকফুটে গেলেও ভারতে জন্মহারও যে নিম্নগামী হয়েছে লকডাউন-পরবর্তী সময়ে, তা স্পষ্ট সাম্প্রতিক কিছু রিপোর্টে।
উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে জন্মহার
মনকী লকডাউন-পরবর্তী সময়ে ভারতের জন্মহার বৃদ্ধির যে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সমাজবিজ্ঞানীরা, তাও বর্তমানে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। উল্টে বেড়েছে গর্ভপাত করানোর প্রবণতা। লকডাউনে হাসপাতালে সংক্রমণের ভয় হোক বা গর্ভপাতের ওষুধের অপ্রতুলতা, সব মিলিয়ে জন্মহার কমেছে বলে মত গবেষকদের।
করোনার ভয়েই গর্ভপাতের দিকে ঝুঁকছেন নাগরিকরা
করোনার আতঙ্কের জেরে বর্তমানে হাসপাতালে না গিয়ে অন্যান্য উপায়ে সন্তানপ্রসব করেছেন নাগরিকরা, এমনটাও জানাচ্ছেন অনেক স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। অন্যদিকে করোনা-পূর্ব সময়ে যেখানে মাসে ১০০-এর বেশি সন্তান প্রসব করাতেন চিকিৎসকরা, তা বর্তমানে কমেছে। এদিকে গর্ভপাত করানোর আবেদন বেড়েছে প্রায় ২০%, এমনটাই জানাচ্ছেন নিউদিল্লির স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ ডঃ অনুরাধা কাপুর। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, গত বছরের মে মাসে ভারতে জন্মহার বৃদ্ধির যে ইঙ্গিত দিয়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ তা বাস্তবের মাটিতে মেলেনি।
সরকারি হাসপাতালেও কমেছে প্রসবের সংখ্যা
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের মতে, সরকারি হাসপাতালগুলিতেও পাল্লা দিয়ে কমেছে প্রসবের সংখ্যা। এমনকী দিল্লির লোক নায়েক কোভিড হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও প্রসূতি বিভাগ খুললেও বাড়েনি প্রসবের সংখ্যা। অন্যদিকে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন যে করোনাবিধির কারণে একই শয্যায় একের বেশি প্রসব করানো সম্ভবপর নয়, ফলে কমছে প্রসবের সংখ্যা। যদিও জন্মহার সংক্রান্ত এহেন তথ্যের ক্ষেত্রে গলদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের তরফে। কারণ হিসেবে করোনাকালে অঙ্গনওয়ারি ও আশা কর্মীদের ব্যস্ততাকেই তুলে ধরেছেন আধিকারিকরা।
লকডাউনে গর্ভনিরোধকের সরবরাহে বড়সড় ঘাটতি
ভারতের কন্ডোম অ্যালায়েন্সের তথ্যানুযায়ী, লকডাউনে উল্লেখযোগ্য ঘাটতি দেখা গেছে গর্ভনিরোধের সরবরাহে। অন্যদিকে লকডাউনে অবাঞ্ছিত গর্ভধারণের ঘটনা বেড়েছে প্রায় ২৬% , পাশাপাশি গর্ভনিরোধকের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হননি ১০% মহিলা, এমনটাই জানালেন আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য পরিষেবার সিইও বিবেক মালহোত্রা। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, লকডাউনে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের মধ্যে গর্ভনিরোধক কন্ডোমকে উল্লেখ করতে গিয়ে সঙ্কোচ বোধ করেন মহিলারা, তারই ফল প্রকাশ পেয়েছে রিপোর্টে। পাশাপাশি জুলাই মাসের পর থেকে পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের তরফে তেমনভাবে জারি হয়নি কোনো বিজ্ঞপ্তি, স্বাভাবিকভাবেই সরকারি গাফিলতির দিকেও ইঙ্গিত করছেন নাগরিকরা।
পরিযায়ী সমস্যার প্রভাব কতদূর?
লকডাউনের আবহে দেশের বড় শহরগুলি থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজভিটায় ফিরে যাওয়ার ফলে কমেছে মেট্রোসিটিতে প্রসবের সংখ্যা, এমনটাই জানালেন ফগসির প্রাক্তন প্রধান ডাঃ জয়দীপ মালহোত্রা। অন্যদিকে পরিবার বৃদ্ধির কথা ভাবলেও করোনার ভয়ে হয়তো ১০-১২% মানুষ গর্ভপাতের দিকে ঝুঁকেছেন, এহেন আশঙ্কাজনক তথ্যের কথা বলেছেন বেঙ্গালুরুর খ্যাতনামা স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ ডাঃ অপর্ণা ভারসোভা। যদিও লকডাউনের সময়ে কর্মীসংখ্যায় ঘাটতির ফলে প্রসবের হিসাবে গরমিলের কথাও উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
দুই বিজেপি বিধায়কের সঙ্গে সাক্ষাৎ মুখ্যমন্ত্রীর, ২১-এর আগে বড় ধাক্কা গেরুয়া শিবিরে