
বিশ্বের মন্দা ভারতে আমদানিকৃত জিনিসের দাম কমাতে সাহায্য করবে, দাবি বিশেষজ্ঞদের
সারা বিশ্ব একটা আর্থিক মন্দার দিকে যাচ্ছে। পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। আমেরিকা সহ একাধিক দেশের মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে। আর্থিক সঙ্কোচনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কিন্তু এই পরিস্থিতি ভারতীয়দের চিন্তিত হওয়ার কোনও কারণ নেই বলেই জানালেন এক প্রবীণ সরকারি আধিকারিক। তিনি বলেন, ভারতের উন্নতি ধীরে ধীরে হচ্ছে। এরফলে বিশ্বে মন্দার বাজারে ভারত কিছুটা লাভবান হতে পারে।

ভারতে কমতে পারে দাম!
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বিশ্বের আর্থিক মন্দার প্রভাব ভারতের ওপর কিছুটা পড়বে। সেই সময় সরকারকে খরচ বেশ খানিকটা কমিয়ে দিতে হতে পারে। পশ্চিমের দেশগুলো মন্দার জেরে বিভিন্ন পণ্যের দাম কমিয়ে দিতে পারে। অন্যদিকে তেলের দাম কমতে পারে। যার ফলে ভারতে অপরিশোধিত তেল ও সার আমদানি আগের থেকে অনেক কম খরচে করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, বিশ্বের অর্থনীতির সঙ্গে ভারত কিছুটা যুক্ত। সম্পূর্ণ নয়। তাই বিশ্বে অর্থিক সঙ্কোচনের কিছুটা প্রভাব তো পড়বে। তবে কিছু ক্ষেত্রে ভারত লাভবান হবে। তিনি মনে করছেন, মুদ্রাস্ফীতি কমার জন্য সঠিক সময়ের অপেক্ষা করতে হবে।

দেশে বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতির হার
চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত একটি সরকারি তথ্য অনুসারে ভারতে সেপ্টেম্বরের মুদ্রাস্ফীতি গত কয়েক মাসে সর্বোচ্চ ছিল ৭.৪ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়েছে। সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতি গত ২২ মাসে সর্বোচ্চ ছিল। এই মুদ্রাস্ফীতি আট শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। দেশের টানা নয় মাস মুদ্রাস্ফীতি ৬ শতাংশের ওপর। দেশের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরবিআই একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া মুদ্রাস্ফীতি ৭ শতাংশের বেশি হয়ে গিয়েছে।

খাদ্যপণ্যের ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি
ক্রমাগত খাদ্যপণ্য যেমন ডাল, শাকসবজি, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে। সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের দাম ব্যাপকহারে বেড়ে যায়। সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের ওপর মুদ্রাস্ফীতি ২২ মাসে সর্বোচ্চ হয়েছিল। সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের ওপর মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৮.৪ শতাংশ। অক্টোবরের মাঝামাঝি হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত খাদ্যপণ্যের দাম কমেনি। ক্রমেই মুদ্রাস্ফীতি আরবিআইয়ের কাছে জটিল হয়ে উঠছে। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গ্রুপ প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সৌম্য কান্তি ঘোষ বলেছেন, খাদ্যপণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে অনিয়মিত বৃষ্টিতে সবজির ফলন কম হয়েছে। যার জেরে দাম অনেকটাই বেড়েছে। যার প্রভাব মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে না এমন সবজি চাষে পড়বে বলে তিনি মনে করেছেন।

ধান ও গমের ফলনে ক্ষতি
ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার তথ্য অনুসারে গত পাঁচ বছরে ধান ও গম মজুদের পরিমাণ সর্বনিম্ন। তথ্যে জানানো হয়েছে, শীতকালে বপন করা গম ও গ্রীষ্মকালে বপন করা ধানের মজুদের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে দেশের অভ্যন্তরে চালের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। কিন্তু দেশের অভ্যন্তরে গমের চাহিদা মিটবে কি না, সেই বিষয়ে ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া সন্দেহ প্রকাশ করেছে। যার জেরে খাদ্যপণ্যগুলোর দাম গত ২২ মাসে সর্বোচ্চ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।