
শ্রদ্ধার শরীর টুকরো টুকরো করতে ব্যবহার করা অস্ত্র উদ্ধার, তিহার জেলে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে আফতাব
দিল্লি পুলিশ সোমবার শ্রদ্ধা ওয়াকারকে হত্যার তাঁর শরীরকে ৩৫টি টুকরো করার অস্ত্রটি উদ্ধার করেছে। আফতাব পুনওয়ালা তার লিভইন পার্টনার শ্রদ্ধা ওয়াকারকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। তারপর তাঁর দেহটি ৩৫টি টুকরো করে। দিল্লির আদালত আফতাব পুনওয়ালার জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। বর্তমানে আফতাব পুনওয়ালা তিহার জেলের ৪ নম্বর ব্যারাকে বন্দি বলে জানা গিয়েছে।

উদ্ধার হওয়া হাড় শ্রদ্ধার
আফতাবকে গ্রেফতার করার পর দিল্লি পুলিশ তার বাসভবনে তল্লাশি চালায়। সেখান থেকে পাঁচটি ধারাল ছুরি উদ্ধার করে। সেগুলো শ্রদ্ধা ওয়াকারের দেহ টুকরো টুকরো করতে ব্যবহার করা হয়েছিল কি না, তা জানতে ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়। জানা গিয়েছে, তদন্তে শ্রদ্ধার শরীরকে করাত জাতীয় অস্ত্র দিয়ে কাটার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি টাইলসের গায়ে রক্ত ও হাড়ের নুমনার সঙ্গে শ্রদ্ধার বাবার ডিএনএ পরীক্ষা করা গিয়েছে। এরপরেই দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, দিল্লির জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া হাড়গুলো শ্রদ্ধার।

তিহার জেলে আফতাব
জানা গিয়েছে, ফরেনসিক টিম আপাতত মৌখিকভাবে দিল্লি পুলিশকে জানিয়েছে। তবে চূড়ান্ত রিপোর্ট দিতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে বলেও ফরেন্সিক টিমের তরফে জানানো হয়েছে। ল্লি পুলিশের বিশেষ কমিশনার সাগর প্রীত হুদার মতে, শ্রদ্ধা হত্যা মামলায় ডিএনএ পরীক্ষা সংক্রান্ত সিএফএসএল রিপোর্ট আনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়া যায়নি। তিহার জেলে পৃথক একটি সেলে আফতাব ওয়াকারকে রাখা হয়েছে। সেই সেলটির মধ্যে ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, তিহার জেলে আফতাবকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, পুলিশ এখনও পর্যন্ত শ্রদ্ধার মাথার খুলি ও শরীরের অন্যান্য অংশ উদ্ধার করতে পারেনি।

পরিকল্পনা করে শ্রদ্ধাকে খুন
অন্যদিকে, পলিগ্রাফ পরীক্ষায় আফতাব পুনওয়ালার কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গিয়েছে। পলিগ্রাফ পরীক্ষায় আফতাব জানিয়েছে, ক্ষোভ থেকে শ্রদ্ধাকে হত্যা করেনি। সে পরিকল্পনা করে শ্রদ্ধাকে হত্যা করেছিল। প্রায় সাড়ে নয় ঘণ্টা ধরে পলিগ্রাফ পরীক্ষা হয়। সেখানে বলা হয়, শ্রদ্ধাকে খুন করার আগে বলিউড সিনেমা দৃশ্যম দেখেছিল আফতাব। দৃশ্যম-২ সিনেমাটির জন্য তিনি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। আফতাব পুনওয়ালা শ্রদ্ধাকে হত্যার পরে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট সক্রিয় রেখেছিল কিছুদিন। শ্রদ্ধার বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল। যাতে ভবিষ্যতে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সুবিধা হয়।

শ্রদ্ধা আফতাবের পুরনো চ্যাট উদ্ধারের চেষ্টা
বর্তমানে দিল্লি পুলিশ আফতাব ও শ্রদ্ধার পুরনো চ্যাট উদ্ধার করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি আফতাব ও শ্রদ্ধার ল্যাপটপ ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে কিছু পাওয়া যায় কি না, সেই দিকে নজর রাখা হচ্ছে। অন্যদিকে, শ্রদ্ধাকে খুন করার কয়েকদিনের মধ্যেই বাড়িতে আফতাব নতুন বান্ধবীকে নিয়ে এসেছিল। সেই বান্ধবীকে আফতাব শ্রদ্ধার আংটি উপহার দিয়েছিল। সেই আংটি ইতিমধ্যে পুলিশ উদ্ধার করেছে। মুম্বইয়ে শ্রদ্ধার এক বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করেছিল আফতাব। তাঁর কাছে দুজনের সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল বলেও জানিয়েছিলেন।