করোনা লকডাউনের এগজিট প্ল্যান কী? মোদী সরকারের সামনে এখন বিরোধীদের ১১টি দাবি পূরণের চ্যালেঞ্জ
করোনা লকডাউনের এগজিট প্ল্যান কী? মোদী সরকারের সামনে এখন বিরোধীদের ১১টি দাবি পূরণের চ্যালেঞ্জ
করোনা রুখতে দেশে সেই ২৫ মার্চ থেকে চলছে লকডাউন পরিস্থিতি। বন্ধ দোকানপাঠ, জনজীবন। রেল পরিষেবা বন্ধ। বন্ধ বিমান ও অন্যান্য যান চলাচল। থমকে গিয়েছে অর্থনীতির চাকা। দেশের এহেন করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে দেশের ২২টি বিরোধী দলের বৈঠক হয় শুক্রবার।
কেন্দ্রের আর্থিক প্যাকেজের কটাক্ষ বিরোধীদের
এদিকে করোনা পরবর্তী অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ইতিমধ্যেই ২০ লক্ষ টাকার আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে আরবিআইও। তবে শুক্রবারের বিরোধী জোটের বৈঠকে সেসব পদক্ষেপ ও আর্থিক প্যাকেজ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী।
মোদীর সামনে ১১ দাবি পূরণের চ্যালেঞ্জ
পাশাপাশি বিরোধী দলগুলি একযোগে সরকারের কাছে রেখেছে ১১টি দাবি রাখল। এদিন বিরোধী দলগুলি কেন্দ্রকে দাবি জানায়, ইনকম ব্র্যাকেটের বাইরে থাকা প্রতিটি প্রতিটি পরিবারের অ্যাকাউন্টে যাতে মাসে ৭ হাজার ৫০০ টাকা করে ডিরেক্ট ট্রান্সফার হয়।
করোনা নিয়ে ভুল ছিলেন প্রধানমন্ত্রী
এদিন সনিয়া গান্ধী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী ভেবেছিলেন ২১ দিনেই এই করোনা যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবে। যা ভুল ছিল। মনে হচ্ছে, প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত এই ভাইরাস থাকবে। আমার মনে হয়, লকডাউন কার্যকর করা নিয়ে বা লকডাউনের নিয়ম-নীতি নিয়ে সরকার নিজেই অনিশ্চিত। লকডাউন তোলা নিয়েও কোনও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই এদের কাছে।'
দুর্ভোগে দেশের ১৩ কোটি পরিবার
পাশাপাশি এদিন বিরোধীদের বক্তব্য, 'পরিযায়ী শ্রমিকরা ছাড়াও যাঁরা নির্মমভাবে অবহেলিত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে জনসংখ্যার নিচের স্তরের ১৩ কোটি পরিবার রয়েছে। রয়েছেন ভাগচাষি, ভূমিহীন কৃষক, শ্রমিক, ছাঁটাই হওয়া কর্মী, দোকানদার, দেশের ছোটো, মাঝারি, সংগঠিত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ।'
১০ কেজি খাদ্যশস্য দেওয়ার দাবি
এদিকে এহেন পরিস্থিতিতে পরবর্তী ৬ মাসের জন্য সমাজের নিচের স্তরে থাকা প্রতিটি পরিবারকে মাসিক ১০ কেজি খাদ্যশস্য দেওয়ার দাবিও জানানো হয় কেন্দ্রের কাছে। ১০০ দিনের কাজকে ২০০ দিনের কাজ করার দাবিও ওঠে।
পরিযায়ী শ্রমিকদের বিনামূল্যে বাড়ি ফেরানোর দাবি
লকডাউনে পরপর পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুর খবর উঠে এসেছে দেশজুড়ে। বাড়িতে ফিরতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এসব শ্রমিকরা। এই সব অসহায় শ্রমিকদের অবিলম্বে বিনামূল্যে বাড়িতে ফেরার ব্যবস্থা করার জন্য কেন্দ্রকে আবেদন জানান বিরোধীরা। এছাড়া করোনা ভাইরাসের তথ্য আরও স্বচ্ছ ভাবে প্রকাশ করার দাবি জানানো হয় এদিন।
শ্রম আইন নিয়ে বিরোধীদের দাবি
অর্থনীতির চাকা সচল করতে উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক সহ বহু রাজ্য শ্রম আইন শিথিল করার পথে হেঁটেছে। এই বিষয়টির দিকে নজর দিতে কেন্দ্রের কাছে দাবি জানানো হয় এদিন। বিরোধীদের দাবি, অবিলম্বে এই শ্রমআইন পুনর্বহাল করা হোক। এছাড়া রবি ফসল কাটার অনুমতি দিয়ে যাতে কেন্দ্র সেগুলি এমএসপিতে কেনে, তাও দাবি জানানো হয়।
করোনা জর্জরিত রাজ্যগুলিকে আর্থিক সাহায্যের দাবি
করোনা বিধ্বস্থ রাজ্যগুলিকে সরাসরি আর্থিক সাহায্যের দাবি ওঠে কেন্দ্রের কাছে। সংসদীয় কার্যক্রম চালু করে এই সব বিষয়ে নজরদারির দাবিও ওঠে। এছাড়া আর্থিক প্যাকেজ নিয়ে সুস্পষ্ঠ একটি স্ট্র্যাটেজি সরকারকে তুলে ধরতে হবে বলে দাবি জানান বিরোধীরা।