পাতিয়ালা সংঘর্ষের জের, বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা, শীর্ষ ৩ পুলিশ কর্তা বদলি
শিবসেনা কর্মী ও শিখ নিহাঙ্গদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে গতকালই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পাঞ্জাবের পাতিয়ালা। পরিস্থিতি সামলাতে শূন্যে গুলি ছোড়ে পুলিশ। এদিকে পাতিয়ালা সংঘর্ষের ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় বদলি করা হল জেলার তিন শীর্ষ পুলিশ কর্তাকে।

এর আগেই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান জানিয়েছিলেন যে পাতিয়ালাতে যে সংঘর্ষ হয়েছে তা পুরোপুরি রাজনৈতিক এবং সাম্প্রদায়িক নয়। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান যে এই সংঘর্ষের পিছনে রয়েছে বিজেপি কর্মী, শিবসেনা ও শিরোমণি অকালি দলের কর্মীরা। ভগবন্ত মানের নির্দেশে পাতিয়ালা রেঞ্জের আইজি, এসএসপি এবং এসপিকে বদলি করে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী পুলিশের কাজে অত্যন্ত বিরক্ত বলে জানা গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের পক্ষ থেকে মুখপাত্র বলেছেন নতুন পাতিয়ালা রেঞ্জের আইজি পদে নিয়োগ করা হয়েছে মুখবিন্দর সিম চিন্নাকে। অন্যদিকে পাতায়ালার নতুন এসএসপি হিসাবে যোগ দিলেন দীপক পারিক। পাতিয়ালার এসপি হলেন ওয়াজির সিং।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টা থেকে কার্যকর হওয়া কার্ফু তুলে নেওয়া হয় শনিবার ভোর ৬টা নাগাদ। তবে মোবাইল ইন্টারনেট ও এসএমএস পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে শহরে যাতে কোনও গুজব ছড়াতে না পারে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে সমস্ত মোবাইল ইন্চারনেট পরিষেবা, এসএমএস পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে জেলায় শনিবার সকাল সাড়ে ন’টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। তবে ফোনে কথা বলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি নেই। মুখ্যমন্ত্রী অবিলম্বে এই ঘটনার দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির কথা ঘোষণা করেছেন। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে, এলাকায় শান্তি বজায় রয়েছে বলেই জানিয়েছেন পুলিশের শীর্ষ কর্তারা।
বিপাকে শ্রীলঙ্কা সুন্দরী, জ্যাকলিনের ৭ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি
শনিবার এ প্রসঙ্গে ভগবন্ত মান জানিয়েছেন যে তাঁর সরকার সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছেন, যার মধ্যে আস্থা–নির্মাণের ব্যবস্থা, বাসিন্দাদের মধ্যে সম্প্রীতি তৈরি করা হচ্ছে। মান এও বলেন, 'সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে। কিছু শিবসেনার সদস্য ও কিছু বিজেপি কর্মী ও তাঁদের জেলা সভাপতিরা এই সংঘর্ষের সৃষ্টি করে। এছাড়াও রয়েছে শিরোমণি অকালি দলের কর্মীরা। এই সংঘর্ষ দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে হয়েছে। এটা কোনও সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ নয়।’ প্রসঙ্গত, কালী ঠাকুরের মন্দিরের বাইরে এক সংগঠন নিজেদের শিবসেনা (বাল ঠাকরে) দাবি করে 'খলিস্তান মুর্দাবাদ মার্চ’ শুরু করে। উভয় দলের সদস্যরা তরোয়াল নিয়ে এসে একে–অপরের দিকে পাথর ছুঁড়তে থাকে। শুরু হয় সংঘর্ষ। পুলিশ এরপর ঘটনাস্থলে এসে শূন্যে গুলি চালিয়ে ছত্রভঙ্গ করে ভিড়। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর উচ্চ–পর্যায়ের বৈঠকের পর শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ শিবসেনার নেতা হরিশ সিঙ্গলাকে গ্রেফতার করে।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান ঘটনাটিকে 'গভীর দুর্ভাগ্যজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। টুইটে তিনি জানিয়েছেন, 'পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত, এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং কাউকে এ রাজ্যে অশান্তি সৃষ্টি করতে দেব না। পাঞ্জাবের শান্তি ও সম্প্রীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’