ব্যাঙ্কের ঋণদানের হার গত দু'বছরে সর্বনিম্ন, রিপোর্টে জানাল আরবিআই
ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলিতে ঋণদানের হার দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে গিয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া তাদের নতুন তথ্যে এই বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছে।
ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলিতে ঋণদানের হার দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে গিয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া তাদের নতুন তথ্যে এই বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছে। সরকার অসুস্থ অর্থনীতিকে সুস্থ করার প্রয়াস নেওয়া সত্ত্বেও, পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে ক্রমে তা আর্থিক ঘাটতিতে পরিণত হচ্ছে।
গত ছ'বছরে ভারতের অর্থনীতি অত্যন্ত দুর্বল জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। আর্থিক বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারের কাছে অন্য চ্যালেঞ্জও রয়েছে। যদিও অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, সরকারের উচিত ব্যাঙ্কিং পদ্ধতিতে আর্থিক বৃদ্ধি করা। কারণ চাহিদা বাড়ানোর এটাই একমাত্র উপায়। কেয়ার রেটিংসের প্রধান মদন সবনবিস মনে করেন যে ধীরগতিতে অর্থের বৃদ্ধি হচ্ছে, ফলস্বরূপ তার চাহিদা এবং সরবরাহ দুটোর ওপরই প্রভাব পড়ছে। শুধু আর্থিক ঘাটতির অঙ্কেই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে মাপা সম্ভব নয়। বাস্তব অবস্থা শোচনীয়। কয়েকদিন আগেই আর্থিক ঘাটতি নিয়ে মাথা না ঘামাতে কেন্দ্রকে পরামর্শ দিয়েছিলেন শিল্পপতি আদি গোদরেজ।
আরবিআইয়ের নতুন রিপোর্টে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিকেও সামিল করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, খুচরা ঋণদান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পেছনে মূল চালক, তবে গ্রাহকরা যেভাবে উচ্চ হারে ঋণ খেলাপি করে, সেক্ষেত্রে গ্রাহক ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলি সতর্ক হয়েছে। বেসরকারি ব্যাঙ্কের প্রধান জানিয়েছেন যে, ঋণের টাকা শোধ করতে গ্রাহকরা মাঝে মাঝেই দেরি করেন। তাতে ব্যাঙ্কেরই ক্ষতি হয়। এখন ভারতীয় অর্থনীতির নানা স্তরে অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে, পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে শোচনীয়। ২০১৬ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকেও বিকাশের হার ছিল ৯%।
চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ শতাংশে। পরের ত্রৈমাসিকে হয়েছে ৫.৩ শতাংশ। আগস্ট মাসে শিল্পোৎপাদনও কমেছে গত সাত বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি। আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা মুডি'জ সম্প্রতি জানিয়েছে, ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে ভারতের মোট জাতীয় উৎপাদন বাড়বে ৫.৮% হারে। এর আগে তারা জানিয়েছিল, বৃদ্ধির হার হবে ৬.২%। রিজার্ভ ব্যাঙ্কও জানিয়েছিল, চলতি বছরে অর্থনীতি বৃদ্ধি পাবে ৬.৮% হারে। এখন তারা জানিয়েছে এই বৃদ্ধি ৬.১ শতাংশের বেশি হওয়া সম্ভব নয়।
সম্প্রতি যে কর্পোরেট ট্যাক্স কমানো হয়েছে, তাতে বিনিয়োগ বাড়বে না। মানুষের চাহিদা বাড়াতে হলে সরকারকে অন্য পদক্ষেপ ঘোষণা করতে হবে বলেও রিপোর্টে বলা হয়েছে।