For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

জলাভূমির দুর্গোৎসবে রয়েছে ষোলো আনা বনেদিয়ানা

জলাভূমির দুর্গোৎসবে রয়েছে ষোলো আনা বনেদিয়ানা

Google Oneindia Bengali News

গঙ্গা-দামোদর-রূপনারায়ণ বিধৌত এক জেলা, নিচু জলাভূমি, নল খাগড়ার জঙ্গলে ভর্তি। কিন্তু সরস্বতীর স্রোতপথ ধরে এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছে কিছু ছোট-বড় জনপদ। এই জনপদগুলির উপর দিয়েই যেতে হয় নীলাচলের পথে। সরস্বতী নদীর দুই পাড়ে উঁচু মাটির বাঁধ, সেই বাঁধের ওপর দিয়েই পথ।

জলাভূমির দুর্গোৎসবে রয়েছে ষোলো আনা বনেদিয়ানা

সেই পথ ধরে এগিয়ে চলেছেন এক অসাধারণ মানুষ। ছয় ফুটের ওপর লম্বা, গৌরবর্ণ, অসাধারণ সুদর্শন, মুখে তাঁর রাধাকৃষ্ণ নাম। শত শত মানুষ লুটিয়ে পড়ছে তাঁর পায়ে, লুটোপুটি খাচ্ছে তাঁর পায়ের ধুলো মেশানো পথের উপর, ঘর ঘর থেকে উঠছে শঙ্খরোল। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন, আমি ভগবান চৈতন্যদেবের কথা বলছি। তাঁর এই নীলাচল গমনের পর থেকে এই জনপদগুলির নাম হলো কোনোটির মহিয়াড়ি, কোনোটির আনন্দধূলি, কোনোটির বা শঙ্খরোল। যেগুলির বর্তমান নাম মৌড়ি, আন্দুল, শাঁখরাইল ইত্যাদি।

এই আন্দুল-মৌড়ি জনপদের ধমনী দিয়ে যদি প্রবাহিত হয় বৈষ্ণব প্রেমের স্রোত তবে তার ধমনী দিয়ে বয়ে চলেছে শাক্ত শক্তির কল্লোল। বহু শাক্ত সাধকের পদধূলিধন্য এই জনপদভূমি। এখনও বহু সাধকের সিদ্ধিস্থান পঞ্চমুণ্ডির আসন সযত্নে রক্ষিত আছে এই জনপদে।

শোনা যায়, স্বামী বিবেকানন্দও এসেছিলেন এখানে| যে তক্তপোষে বসেছিলেন স্বামীজি, তা আজও সংরক্ষিত আছে এই জনপদেই। স্থানীয় ইতিহাস গবেষক তথা "আন্দুল-মৌড়ির ইতিহাসের রূপরেখা" বইয়ের রচয়িতা অমিত দাশগুপ্ত বলেন, ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের সমসাময়িক ছিলেন মহেন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য| তিনি স্বামীজির বাবা বিশ্বনাথ দত্ত ও মা ভুবনেশ্বরী দেবীর গুরুদেব ছিলেন|

গ্রাম আন্দুলের শান্ডিল্য গোত্রীয় ভট্টাচার্য কুলের প্রাণপুরুষ হলেন তন্ত্রকসাধক শ্রীভৈরবী চরণ বিদ্যাসাগর (শ্রীশ্রীশঙ্করী-সিদ্বেশ্বরী মাতা ঠাকুরানী মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা)। তাঁর নিজ ভ্রাতার কুলকে 'মেজো তরফ' বলে সম্বধন করা হয়। সেই মেজো তরফের বাড়ির শ্রীশ্রীদুর্গাদালান। এই বাড়িটি স্থানীয়দের কাছে "মাঝের বাড়ি" বলে প্রচলিত। এই মেজ তরফের প্রাণপুরুষ শ্রীমহেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, ওরফে প্রেমিক মহারাজ। তাই এই মাঝের বাড়িকে গ্রাম এবং গ্রামের বাইরে 'প্রেমিক ভবন' নামে বেশ প্রসিদ্ধ। সরস্বতী নদীর ধার ঘেঁষে মাশিলা যাওয়ার পথে আন্দুল দক্ষিণ পাড়ায় 'প্রেমিক ভবন'| কালীকীর্তন ও সংস্কৃতি চর্চার পীঠস্থান, আখড়া।কালীপুজোয় সমার্থক প্রেমিক মহারাজের কালীকীর্তন ।

বৈষ্ণব প্রেমস্নিগ্ধ ধমনীর স্রোত ও শাক্ত তন্ত্র সাধনা শিরার শক্তির মিলনস্থল এই জনপদের হৃদয়ে অনুরোণিত হয় কালীকীর্তনের গীতিময়তা।

কালী কীর্তন এ অবিভক্ত বঙ্গ দেশের হাওড়া জেলার অবদান অনস্বীকার্য। তাই কালী কীর্তন এর ইতিহাস আলোচনা করতে গেলেই প্রথমে মনে পড়ে আন্দুলের 'প্রেমিক মহারাজের' কথা।

ধ্রুপদাঙ্গের কালীকীর্তনের উল্লেখ একমাত্র প্রেমিক মহারাজের সঙ্গীতেই পাওয়া যায় এবং আজও ধারাবাহিকভাবে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে পরিবেশিত হয়ে চলেছে প্রেমিক মহারাজের কালীকীর্তন|কালী কীর্তন এর সাথে অনেকেই পরিচিত, বিশেষ করে রামকৃষ্ণ পরিমন্ডলের সংগে যারা পরিচিত।আন্দুলের প্রেমিক মহারাজ ছিলেন সাধক ও কবি।তিনি ঠাকুর রামকৃষ্ণের সমসাময়িক ছিলেন।বেলুড় মঠ প্রতিষ্ঠার পর সেখানে বিভিন্ন সময়ে আন্দুল কালী কীর্তন সমিতি তাদের বিশিষ্ট ঘরানার সংগীত পরিবেশন করে আসছে।স্বামীজি ও অন্যান্য রামকৃষ্ণ পার্ষদরাও কালী কীর্তনের অনুরাগী ছিলেন।ধ্রুপদ রাগে রচিত এই গান গুলির ভাষা ততসম শব্দের ব্যবহার বেশি,সুগম্ভীর ও বীরত্বব্যঞ্জক।ভাবে ও ভাষায় মহামায়ার বিরাট স্বরূপ ও মমতাময়ী মাধুর্য কে প্রকাশ করছে।

মহেন্দ্রনাথ দেবী মাহাত্ম্যের প্রশান্তরূপ ও উগ্ররূপ বর্ণনা করেই গানগুলি বাঁধতেন। তিনি গান রচনা করে কখনো নিজের নাম দিতেন না ।তাই ভক্তদের উপরোধে কালি প্রেমে বিভোর মহেন্দ্রনাথ নামের বদলে" প্রেমিক" নামে গান রচনা করতেন। সেই থেকে প্রেমিক মহারাজ নামেই তিনি সমধিক প্রসিদ্ধ ।প্রেমিক মহারাজের গানের সমস্ত সুরারোপ করতেন তারই সুহৃদ কৃষ্ণ চন্দ্র মল্লিক ।এই গান গাইবার জন্য শিবপুরে বাউল সম্প্রদায় গঠিত হয় ।শিবপুরের শ্যামাচরণ পন্ডিত ও জ্ঞানচন্দ্র ব্যানার্জি বাউল গান গেয়ে সে যুগে খুব খ্যাতি লাভ করেছিলেন। ১৮৮৪ সালে ঝুলন উৎসবে শিবপুরের এই দল দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ কে গান শোনার সৌভাগ্য লাভ করেছিলেন।
এই ঐতিহ্যের রেশ ধরেই চলুন আপনাদের নিয়ে যাই

মাশিলা ভট্টাচার্য বাড়ির পুজোয় যা এই অঞ্চলে বেশি বিখ্যাত প্রেমিক মহারাজের বাড়ির পুজো বা মাঝের বাড়ির পুজো। বাড়ির গায়ে উৎকীর্ণ একটি ফলক থেকে জানা যায় এই পুজোর শুরু মোটামুটি ১০৭৪ বঙ্গাব্দ থেকে। পূর্ন তান্ত্রিক মতে এই পূজা হয়। এই দেবীর গাত্র বর্ণ আগুনের মতো লাল।

২. আন্দুল ভট্টাচার্য বাড়ির পুজো : যদিও সঠিক তথ্যের অভাব, তাও জানা যায় এনারা ছিলেন আন্দুলের রাজবাড়ীর কুল পুরোহিত। এই পুজোর বয়স আনুমানিক ১৬৮ বছর।

৩. আরগোড়ি চ্যাটার্জি বাড়ির পুজো : অত্যন্ত প্রাচীন ও সম্ভ্রান্ত এই পরিবারের পুজোর বয়স প্রায় ২০০ বছর। এই পরিবারের বহু গুণী মানুষ শিক্ষা ও অন্যান্য দিকে অত্যন্ত কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন।

৪. কামারপাড়ার জানবাড়ির পুজো : এটি আন্দুল -মৌড়ি অঞ্চলে মেনকা দেবী জানবাড়ির পূজা নামে বিখ্যাত। এ পুজোর বয়স অসমর্থিত সূত্রে প্রায় ২০০ বছর।

৫. মৌড়ি কুন্ডু বাড়ির পুজো : যদিও পুজোর বয়স নিয়ে বিস্তর মতভেদ আছে, তবু জনশ্রুতি, এই পুজোর বয়স মোটামুটি ২০৫ বছর। এই পুজোর একটি অন্যতম বিস্ময়কর দিক হলো এখানে মহিষমর্দিনী রূপের বদলে শিব-দূর্গা রূপে দেবী পূজিতা হন, অবশ্য লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্ত্তিক, গনেশ সঙ্গেই থাকেন।

ইতিহাস রয়েছে সাক্ষী, এই বাড়ির দুর্গা দালানেই অভিনয় শুরু হিয়েছিল মহানায়কেরইতিহাস রয়েছে সাক্ষী, এই বাড়ির দুর্গা দালানেই অভিনয় শুরু হিয়েছিল মহানায়কের

English summary
Bonedi bari durga puja
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X