সাবেকী প্রতিমার সাথে ঐতিহ্যের ঘরানা, শেষ ক্ষনে উলুবেড়িয়ার ব্যানার্জী বাড়িতে মাতৃ আরাধনা
উলুবেড়িয়ার দক্ষিণ গঙ্গারামপুরের ব্যানার্জী বাড়িতে এখন খুশির আমেজ। বিগত বছরের মতো এবারও মাতৃ আরাধনায় ব্রতী হয়েছে ব্যানার্জী পরিবার। সাবেকী প্রতিমাই ব্যানার্জী বাড়ির ঐতিহ্য। ব্যানার্জী বাড়ি সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সাল থেকে এই পুজো হয়ে আসছে। অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে পুজোর সূচনা হয়। প্রথম পাঁচ বছর ঘটে পুজো হলেও তারপর থেকে ব্যানার্জী বাড়িতে মূর্তিপুজো হয়।
বাড়ির অন্যতম কর্তা চন্দ্রনাথ ব্যানার্জী জানান, আমাদের মাতৃপ্রতিমা বাংলার সাবেক ঘরানার। বর্তমান বিগ্রহের দেবীর সিংহ বাহন উৎকল সংস্কৃতির রূপের মতো। পুরীতে এই ধরনের মূর্তি দেখা যায়। মহিষাসুরের শরীরেত অর্ধেকটা মনুষ্যবৎ ও বাকি অর্ধেকটা মহিষের। এই বিগ্রহের উচ্চতা দেড় ফুট। নদিয়া, মুর্শিদাবাদের শিল্পীরা এই মূর্তি নির্মাণ করেন অষ্টধাতুর সংমিশ্রণে। কৃষ্ণ চতুর্দশী তিথি থেকে বাড়িতে পুজা শুরু হয়ে চলে শুক্লা নবমী পর্যন্ত। চণ্ডীপাঠ, হোম ও নিরামিষ ভোগ হয়। মূলত স্বাত্ত্বিক পুজা এটি। বর্তমানে কোনও ঘটে নয়, দুর্গা শিলাতেই (গৌরী সুবর্ণ শিলা) এই পুজা হয় কালিকা পুরাণ মতে। এই ঐতিহ্যবাহী দুর্গোৎসবেই ব্রতী হয়েছেন উলুবেড়িয়ার ব্যানার্জী বাড়ি।
আজ বিজয়া দশমী।দেবী চণ্ডী মহিষাসুরকে দশমীতেই পরাজিত ও নিহত করেন। আবার শ্রীরামচন্দ্র আশ্বিনের শুক্লা দশমীতে রাবণকে বধ করেন এবং পরবর্তী অমাবস্যাতে সীতাকে নিয়ে অযোধ্যা ফিরে আসেন। এইজন্যই দশমীতে দশেরা আর পরবর্তী অমাবস্যাতে দীপাবলি উৎসব উদযাপন করা হয়। তাই দশমীকে বিজয় দশমী বা বিজয়া দশমী বলে অভিহিত করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে দুর্গাপ্রতিমা ভাসানের সময় নীলকণ্ঠ পাখি উড়ানো বিসর্জনের এক আবশ্যিক অঙ্গ। বিশ্বাসীদের বিশ্বাস নীলকণ্ঠ পাখি কৈলাসে গিয়ে আগেই মহাদেবকে পার্বতীর আগমন সংবাদ জ্ঞাপন করবে। পুরাণ অনুসারে, সমুদ্র মন্থনে অমৃতের সঙ্গে হলাহল উঠলে দেবাদিদেব মহেশ্বর সেই বিষ নিজ কণ্ঠে ধারণ করেছিলেন। হলাহলের প্রভাবে তাঁর কণ্ঠ নীল হয়ে যায়। ফলে মহাদেবের আরেক নাম নীলকণ্ঠ। লোকবিশ্বাসে নীলকণ্ঠ পাখিকে মহাদেবের বন্ধু রূপে মান্য করা হয়।