উত্তরপ্রদেশে দলিত-অঙ্ক ঘাঁটাতে চাইছে না বিজেপি, উপ-মুখ্যমন্ত্রী থাকলেন কেশব মৌর্য
উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শুরু হয়েছিল জল্পনা। দল বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও হেরে গিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরের অন্যতম ওবিসি মুখ কেশব প্রসাদ মৌর্য। বরাবর প্রত্যেকটি জাতির প্রতিনিধিদের নিজেদের মন্ত্রিসভায় গুরুত্ব দেয় বিজেপি। কেশবের পরাজয়ের পর প্রশ্ন উঠেছিল, যোগীর দ্বিতীয় ইনিংসে আদৌ তিনি গুরুত্বপূর্ণ পদ পাবেন তো? শুক্রবার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের পরই স্পষ্ট হয়ে গেল সবটা। যোগীর দ্বিতীয় ইনিংসে কেশব প্রসাদ মৌর্যকে উপমুখ্যমন্ত্রীত্বের দায়িত্ব দিল দল।
সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে যোগীঝড়ে উড়ে গিয়েছে বিরোধীরা। সমাজবাদী পার্টি, কংগ্রেস কিংবা অন্যান্য দল নয়, জনতা জনার্দন ভরসা রেখেছে গেরুয়া শিবিরেই। তবে হারের সম্মুখীন হয়েছেন কেশব প্রসাদ মৌর্য। উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বী জেলার সিরাথু কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়েছিলেন তিনি। আপনা দল প্রতিনিধি পল্লবী প্যাটেলের কাছে পরাজিত হয়েছেন তিনি। এরপরই শুরু হয়েছিল জল্পনা।
সূত্রের খবর, বিজেপির একটা বড় অংশ চেয়েছিল কেশব প্রসাদ মৌর্যকে দিল্লিতে দায়িত্ব দিতে। তবে তাতে আপত্তি জানান কেশব, বিবেচনা করে দলীয় নেতৃত্বও। আর মাত্র দু'বছরেই লোকসভা নির্বাচন। বিধানসভা নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়লেও লোকসভায় পিছিয়ে পড়া জাতিদের ভোট পেতে সর্বস্ব দিয়ে ঝাঁপাবে সমাজবাদী পার্টি। কাজেই তাদের রুখতে কেশবকে ভীষণভাবে প্রয়োজন বলে মনে করেছে গেরুয়া শিবির।
২০০১ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশে ভোটের অঙ্কের অন্যতম নির্ণায়ক ওবিসি ভোট। রাজ্যের জনসংখ্যার ৪৩.১৩ শতাংশই ওবিসি। এই ওবিসিদের ৬.৬৯ শতাংশ কাচ্ছি, কুশওয়াহা, শাক্য, মৌর্য, সাইনি, মালি ব্লকের। ওবিসির মধ্যে যাদবদের পরই সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় রয়েছে কুর্মিরা। দেখা গিয়েছে এই জাতির ভোট কম পেয়েছে বিজেপি, যার ফলে লাভবান হয়েছে বিরোধীরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে ভবিষ্যতে ভুগতে হতে পারে গেরুয়া শিবিরকে। তাই আগেভাগে নিজেদের ঘর গোছাতে চাইছে বিজেপি। অ যাদব ভোটব্যাঙ্কে যাতে বিরোধীরা দাঁত বসাতে না পারে, কেশব প্রসাদ মৌর্যকে ব্যবহার করতে চাইছে তারা৷
প্রসঙ্গত, ১৯৬৯ সালে উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বীর সিরাথুতে জন্ম কেশব প্রসাদ মৌর্যের৷ শৈশবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের শাখায় যাতায়াত শুরু করেছিলেন কেশব। এরপর রামজন্মভূমি আন্দোলনে দৃঢ়ভাবে অংশগ্রহণ করেন মৌর্য। ২০১৬ সালে উত্তরপ্রদেশ বিজেপির রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার আগে ২০০২, ২০০৭, ২০১২ তে পরপর সিরাথু আসন থেকেই বিধানসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন যদিও জয় আসে ২০১২ তে। সেবারই প্রথম বিজেপি বিধায়ক হিসেবে সিরাথু থেকে জয় পান মৌর্য। ২০১৪ সালে পাঁচলক্ষ ভোটে রেকর্ড গড়ে ফুলপুর থেকে জিতে সাংসদও হয়েছেন কেশব।