পাহাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করার আদর্শ স্থান হিমালয়ের কোলে এইসব জায়গা
পাহাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করার আদর্শ স্থান হিমালয়ের কোলে এইসব জায়গা
ঘুরতে যেতে কে না ভালোবাসেন। বর্তমান সময়ে কাজের চাপ থেকে সামান্য বিরতি নিতে অনেকেই কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন ঘুরতে। অজানাকে জানার,অদেখাকে দেখার ইচ্ছে মানুষের বহুদিনের। ঘুরতে যাওয়ার সবথেকে ভালো জায়গা হিমাচল প্রদেশ। বন্ধুদের সঙ্গে হুল্লোর হোক বা প্রিয় মানুষটির সঙ্গে একান্তে কয়েকটা দিন কাটানো হোক বা পরিবারকে নিয়ে চুটিয়ে মজা করাই হোক, হিমাচল প্রদেশ আদর্শ জায়গা। জুলাই মাসে হিমাচল প্রদেশে ঘুরতে যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি জায়গা রয়েছে। তারমধ্যে কয়েকটি নিয়ে আলোচনা করা যাক।
ছিটকুল
ভারত চিন সিমান্তে একটি মনমুগ্ধকর গ্রাম হল ছিটকুল। পাহাড়ের কোলে শান্ত এই জায়গায় খুব বেশি দোকানপাট এখনও তেমন হয়নি। সবুজে আচ্ছাদিত, বরফ মোড়ানো এই এলাকায় শোভা পায় প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য। শহরের কোলাহল থেকে অনেক দূরে নির্জন জায়গায় বেড়াতে আসতে হলে ছিটকুলে আসতে পারেন। থাকার জন্য স্লেট বা কাঠের ছাদ দেওয়া বাড়ি রয়েছে এখানে। নির্জন জায়গা হিসেবে খুব ভালো এটি। এখানে ৪০০ বছরের পুরনো শিব ও শক্তি বিগ্রহের মন্দিরও রয়েছে। থাকার জন্য খরচ পড়বে মোটামুটি ১০০০ টাকা দিন প্রতি। এছাড়া খাওয়ার জন্য রয়েছে রোড সাইড ধাবা।
বীর বিলিং
ভারতের প্যারাগ্লাইডিং ক্যাপিটাল হিসেবে সুপরিচিত এই স্থান। এখান থেকে পাহাড়ের নৈসর্গিক রূপ দেখা যায়। এলাকাটি আকারে খুব ছোট হলেও এখানের আবহাওয়া অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পর্যটক এখানে আসেন প্যারাগ্লাইডিং-এর নেশায়। তাই রোমাঞ্চকর এই রাইডিং সম্পূর্ণ ভাবে উপভোগ করার জন্য এখনই ব্যাগপ্যাক নিয়ে চলে আসুন এখানে।
ডালহৌসি
সারা বছর ধরে ঘুরতে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের জায়গা ডালহৌসি। বিশেষত, ভ্রমণপিপাসু বাঙালির কাছে ডালহৌসি খুবই পছন্দের একটি ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন। পাহাড়ীয়া এই শহরটি প্রায় সারা বছর সাদা বরফের চাদড়ে থাকে ঢাকা। ডালহৌসির সৌন্দর্যের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডকে তুলনা করা হয়। পাইন, মোট গাছের সারি, সাদা বরফের চাদর যেন অন্যরূপে ধরা দেয় সকলের চোখে। এছাড়াও রিভার রাফটিং, ট্রেকিং, ক্যাম্পিংয়ের মজা জমিয়ে উপভোগ করতে অনেকেই আসেন এখানে। আবার মধুচন্দ্রিমা যাপনের জন্য জায়গাটি অত্যন্ত ভালো।
কাসোল
হিমালয়ের পার্বত্য নদীর তীরে অবস্থিত একটি গ্রাম্য জনপদ। ভারতের ইসরায়েল হিসেবে অভিহীত করা হয় এই স্থানকে। সেই সঙ্গে পার্বত্য ভারতের অন্যতম দর্শনীয় স্থান হল এটি। হিমালয়ের পাদদেশে সবুজ উপত্যকা, আর তারই উপরে মাথা তুলে দাঁড়ানো তুষার ঢাকা পর্বতের নৈসর্গিক দৃশ্য প্রকৃতি প্রেমীদের কাছে আকর্ষণীয়।
সিমলা
হিমাচল প্রদেশে ঘুরতে যাওয়ার কথা হলে প্রথমেই নাম আসে সিমলার। পাহাড়ের রানী হিসেবে পরিচিত সিমলা একটি জনপ্রিয়তম হিল স্টেশন। এর নৈসর্গিক রূপ আপনাকে অবাক করবেই। বাঙালিদের জনপ্রিয় পর্যটনস্থলের মধ্যে সিমলা একটি। সারাবছর ধরেই এখানে ভিড় লেগেই থাকে।জাখু মন্দির, সামার হিল, দ্য রিজ, ম্যাল রোড, ক্রাইস্ট চার্চ, সেন্ট মাইকেল ক্যাথিড্রাল, ডেইটি থিয়েটার, তত্বপানি, কোটগড়, কুফরি, ফাগু, নালদেহরা, কালীবাড়ি, ভাইসরিগাল লজ, মিউজিয়াম, অভয়ারণ্য রয়েছে ঘুরে দেখার জন্য।
ধর্মশালা
সিমলার মতো আরও একটি হিল স্টেশন হল ধর্মশালা। সারা বিশ্ব থেকে বহু পর্যটক এখানে আসেন ঘুরতে। কাংড়া উপত্যকায় অবস্থিত এই শৈলশহরটি পাইন ও দেবদারুর বনভূমি দিয়ে ঘেরা। এছাড়াও এখানে রয়েছে প্রাচীন ভারতের একাধিক স্থাপত্য। থাকা, খাওয়ার জায়গাও রয়েছে বিস্তর। এখানে থাকতে দিন প্রতি থাকা খাওয়া দিয়ে মাথা পিছু খরচ শুরু হয় মোটামুটি ১৩০০-১৫০০ টাকা থেকে।
কসৌলি
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৯০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত কাসাউলি। এখানকার বিশুদ্ধ হাওয়া, শান্ত ও নির্মল প্রকৃতি পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এখান থেকে ব্যাপটিস্ট চার্চ,মাঙ্কি পয়েন্ট, কাসাউলি ব্রুয়ারি, কাসাউলি ক্লাব ও নাহরি মন্দির দেখতে পারবেন।
মানালি
হিমাচল প্রদেশে পর্যটনস্থলের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় মানালি। অপূর্ব একটি শৈলশহর মানালি। অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরা মানালিতে প্যারাগ্লাইডিং, র্যাপেলিং, রিভার রাফটিং, কোয়াড বাইকিং, ট্রেকিং, ওয়াইল্ড লাইফ স্পটিং করতে পারেন। ঘুরতে চাইলে দেখতে পারেন হিরিম্বা মন্দির, ব্যাস কুন্ড, রোটাং পাস। থাকার জন্য অনেক হোটেল রয়েছে। এক্ষেত্রে দিন পিছু থাকার জন্য হোটেল শুরু হয় ৯০০ টাকা থেকে।
বর্ষায় উত্তর ভারতে ভ্রমণের সেরা ঠিকানা