বাংলার পুরভোটে সবুজ-সুনামিতে কে পেল কটি ওয়ার্ড! কার দখলে কত ভোট, একনজরে
বাংলার পুরভোটে সবুজ-সুনামিতে কে পেল কটি ওয়ার্ড! কার দখলে কত ভোট, একনজরে
ফের সবুজ-সুনামি বাংলায়। বিধানসভার পর পুরসভাতেও দিকে দিকে তৃণমূলের জয় হল। বাংলা থেকে কার্যত ধুয়েমুছে সাফ বিজেপি। বরং বিধানসভায় প্রায় অস্তিত্ব হারানো সিপিএম পুরভোটে ফের লড়াইয়ে ফিরে এল। কংগ্রেস সেই তিমিরেই রয়ে গেল। গড় খুইয়ে হতাশ অধীর চৌধুরী। বিজেপির হেভিওয়েটরা কেউই পারলেন না গড় রক্ষা করতে। তৃণমূল ছাড়া উল্লেখ করার মতো ফল শুধু সিপিএমেরই।
সবুজ-ঝড়ে গেরুয়াকে ফিকে, সামান্য উজ্জ্বল লাল পার্টি
বাংলায় মোট ১০৮টি পুরসভায় নির্বাচন হল। এই ১০৮টি পুরসভার ২২৭৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে সিংহভাগ ওয়ার্ড দখলে রাখল তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের একাই একশো। বিগত পুরনিগম নির্বাচনের মতো ১০৮ পুরসভাতেও গেরুয়াকে ফিকে করে ছাড়ল তৃণমূল। একুশের পরবর্তী সময়ে ভোটের ফলাফলের ধারা বজায় রেখে ফের লাল পার্টি সিপিএম ভোট শতাংশের বিচারে টেক্কা দিল রাজ্যের প্ধান বিরোধী দল বিজেপিকে।
পশ্চিমবঙ্গের ১০৮ পুরসভায় কোন দল জিতল কটি
রাজ্যের ১০৮ পুরসভায় তৃণমূলের জয়জয়কার সর্বত্রই। ১০৮টি পুরসভার মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস একাই দখল করেছে ১০২টি পুরসভা। অর্থাৎ একাই ১০০ তৃণমূল। বিরোধী দলের মধ্যে একমাত্র সিপিএম একটি পুরসভা দখল করতে সফল হয়েছে। আর দার্জিলিংয়ের হামরো পার্টি জয়ী হয়েছে একটি পুরসভায়। চারটি পুরসভা ত্রিশঙ্কু হয়েছে রাজ্যে। প্রধান বিরোধী দল বিজেপি ও সবথেকে প্রাচীন দল কংগ্রেস একটি পুরসভাও দখল করতে পারেনি।
২১৭০টির মধ্যে কার দখলে গেল কটি ওয়ার্ড
বাংলায় ১০৮ পুরসভায় মোট ২২৭৪টি ওয়ার্ড। তার মধ্যে ভোট হয়েছে ২১৭০টি ওয়ার্ডে। অধিকাংশ ওয়ার্ডেই জয়ী হয়েছে শাসকদল তৃণমূল। তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হয়েছে ১৮৭০টি ওয়ার্ডে। বিজেপি জয়ী হয়েছে ৬৩টি ওয়ার্ডে। ৫৯ ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। আর বামফ্রন্ট জয়ী হয়েছে ৫৩টি ওয়ার্ডে। বিরোধী তিন দলকেই টেক্কা দিয়ে নির্দল জয়ী হয়েছে ১১৯টি আসন। আর পাহাড়ের হামরো পার্টি জিতেছে ১৮টিতে, গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ৮টিতে এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ৪টিতে।
১০৮ পুরসভার নিরিখে কে কত শতাংশ ভোট পেয়েছে
১০৮ পুরসভার নিরিখে তৃণমূল ভোট শতাংশেও বিরোধী তিন দল ও অন্যান্যদের থেকে বিস্তর এগিয়ে রয়েছে। তৃণমূল ৬২ শতাংশ ভোট পেয়েছে পুরসভা নির্বাচনে। সেখানে বিজেপি ও সিপিএম তথা বামফ্রন্ট অনেক পিছনে। বিজেপি ও বামফ্রন্ট ১৩ শতাংশ করে ভোট পেয়েছে। আর কংগ্রেস ভোট পেয়েছে ৫ শতাংশ। নির্দল ও অন্যান্যরা ভোট পেয়েছে ৭ শতাংশ।
বামফ্রন্ট ও বিজেপির ভোট শতাংশের খতিয়ান
তিন দফায় রাজ্যের ১১৩টি পুরসভার ফল প্রকাশ্যে আসার পর স্পষ্ট যে সিপিএম দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে উঠে আসছে। এই নিরিখেই সিপিএমের উত্থান বলা হচ্ছে যে, বিগত বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপির ভোট নিম্নমুখী হয়েছে। আর সিপিএম তথা বামেদের ভোট উর্ধ্বমুখী হয়েছে। বামেরা বিধানসভায় নেমে গিয়েছিল ৫ শতাংশে। তারা ২০২২-এর পুরসভা ভোটে ৫ থেকে বাড়িয়ে ১৪ শতাংশে পৌঁছেছে। আর বিজেপি ২৬ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ১৩ শতাংশ।
বিজেপির প্রতি আস্থা কমছে, বাড়ছে সিপিএমের প্রতি
এই পুরভোট তৃণমূলের প্রধান বিরোধী হিসেবে সিপিএম তথা বামফ্রন্টেরই উঠে আসার একটা ইঙ্গিত দিল। ১১৩ পুরসভার নির্বাচনেই দেখা গেল সিপিএম তৃণমূলের থেকে অনেক পিছিয়ে ঠিকই। কিন্তু বিরোধী হিসেবে বিজেপির প্রতি আস্থা কমছে মানুষের, আস্থা বাড়ছে সিপিএমের প্রতি। ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচন ও ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির উত্থান হয়েছিল। সেই হাওয়া এখন ঘুরে গিয়েছে।
তৃণমূলের বিকল্প নেই, সিপিএম হারানো জমি উদ্ধারে
তৃণমূলের চ্যালেঞ্জার হিসেবে বাংলায় বিজেপির উত্থানের সঙ্গে বাংলার রাজনীতি থেকে মুছে যেতে শুরু করেছিল সিপিএম। ২০১৯-এর লোকসভা বা ২০২১-এর বিধানসভায় কোনও আসনেই জয় পায়নি সিপিএম। তারপর ফের শূন্য থেকে শুরু করে হারানো জায়গা ফিরে পাওয়ার লড়াই শুরু করে সিপিএম। বামফ্রন্টগতভাবে লড়ে আবার হারানো জমি ফিরে পেতে শুরু করেছে তারা। তা পুর-নির্বাচনের ফলে স্পষ্ট। পুর নির্বাচনের ফলে স্পষ্ট তৃণমূলের বিকল্প এই মুহূর্তে নেই বাংলায়
Recommended Video