বামেদের স্লোগানকে হাতিয়ার মুখ্যমন্ত্রীর! মমতার ভাষণে উঠে এল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কথা
বামেদের স্লোগানকে হাতিয়ার মুখ্যমন্ত্রীর! মমতার ভাষণে উঠে এল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কথা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে বামেদের স্লোগান। স্পষ্ট করে বলতে গেলে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (buddhadeb bhattacharjee) স্লোগান। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee) নিজের দলে এসসি-এসটি সেলের সভায় যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, তৃণমূলের বিকল্প তৃণমূলই। আরও উন্নততর তৃণমূল (trinamool congress)।
তৃণমূলের বিকল্প উন্নততর তৃণমূল
তৃণমূলের বিকল্প তৃণমূলই, আরও উন্নততর তৃণমূল। এদিন দলের এসসি-এসটি সেলের সভায় এমনটাই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৯-এ রাজ্যে একধরনের গেরুয়া ঝড় হয়েছে। আর ২০২১-এর ভোটের আগে একের পর এক হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। বিজেপিতে যোগ দিয়েই তাঁরা বলছেন, কাজ করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে তৃণমূলের তরফ থেকে এইসব দলবদলকারীদের গদ্দার, বিশ্বাসঘাতক বলে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এইসব দলবদলকারীদের চোর বলে আক্রমণ করছেন। ফলে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সংশয় তৈরি হচ্ছে। যাকে পাত্তা না গিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী উন্নততর তৃণমূল তৈরির ডাক দিয়েছেন।
২০০১-এর নির্বাচনে উন্নততর বামফ্রন্টের ডাক
ফিরে যেতে হবে ২০ বছর আগে। ২৩ বছর মুখ্যমন্ত্রীত্বের পরে জ্যোতি বসু অবসর নিয়েছেন। ২০০১-এর বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথবারের নির্বাচনে লড়াইয়ে নেমেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। একদিকে বিজেপির জোটসঙ্গী রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। নতুন দলের প্রথম বিধানসভা নির্বাচন। দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলা সেই সময় রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত। অন্যদিকে দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্লোগান এবার, নয়তো নেভার। দল ছেড়েছেন সমীর পুততুণ্ড, সইফুদ্দিন চৌধুরীর মতো নেতারা। সেই পরিস্থিতিতে বামেরা, বিশেষ করে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য স্লোগান তোলেন, বামফ্রন্টের কোনও বিকল্প নেই। বামফ্রন্টের বিকল্প আরও উন্নততর বামফ্রন্ট। সেই স্লোগান গেম চেঞ্জার হয়ে দাঁড়ায়। ষষ্ঠবারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতায় আসে বামফ্রন্ট।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর নাম নিলেন মমতা
একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন বামেদের স্লোগানকে ধার করেছেন, অন্য দিকে ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কথাও এদিন উল্লেখ করেছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য দিন দুয়েক আগে বর্ধমানে এসে মানিক সরকার বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে অনুরোধ করছি, রাজ্যকে শ্মশানে পরিণত হতে দেবেন না। ত্রিপুরা থেকে তাঁরা যেন শিক্ষা নেন। ত্রিপুরায় কাজ হারানো শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রসঙ্গ টেনে মানিক সরকার বলেছেন, বিজেপি ঘরে ঘরে চাকরির যে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা টের পাচ্ছেন ত্রিপুরাবাসী। মানিক সরকারের নাম নিয়ে এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুভেন্দু স্লোগান চুরির অভিযোগ করেছিলেন
হুগলির পুরশুড়ার সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্লোগান তুলেছিলেন, হরে কৃষ্ণ হরে হরে, তৃণমূল ঘরে ঘরে। ওইদিনই তিনি বিজেপিকে আক্রমণ করতে গিয়ে বলেছিলেন, লাল চুল, কানে দুল পরে কেউ এলে হাতা খুন্তি দিয়ে ধুয়ে দেবেন। যদিও বিজেপিতে যোগ দিয়ে কাঁথিতে রোজ শো-এ শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে, বিজেপি ঘরে ঘরে। একইসঙ্গে তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন যুব তৃণমূলকে আক্রমণ করতে গিয়ে বলেছিলেন, লাল চুল, কানে দুল, তার নাম যুব তৃণমূল। এরপরেই শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্লোগান চুরির অভিযোগ করেছিলেন।
জয় শ্রীরামকে জনপ্রিয় করতে বামপন্থাকে অনুসরণ
শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নন, অতীতে বিজেপিও জয় শ্রীরামকে জনপ্রিয় করতে বামেদের স্লোগানকেও ধার করেছিল। সত্তরের দশকে আমার নাম তোমার নাম ভিয়েতনাম ভিয়েতনামের অনুকরণে বিজেপি স্লোগান দিয়েছিল, আমার নাম তোমার নাম, জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীরাম।
শিলিগুড়িতে স্থলবন্দরে শ্রমিক বিক্ষোভ, গুলি চালানোর অভিযোগ