ফুটে উঠছে অস্বস্তি, দীনেশ ত্রিবেদীর বিদায়ে 'তিতি বিরক্ত' তৃণমূল কংগ্রেস
তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেছে যে বক্তা তালিকায় না থাকে সত্ত্বেও দীনেশ ত্রিবেদী বক্তব্য পেশ করেছেন। এমনকী সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও তিনি প্রায় চার মিনিট বক্তৃতা রেখেছেন। শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এককালের অনুগত দীনেশ ত্রিবেদী রাজ্যসভায় সাংসদ পদ ইস্তফা দেন ও পরে দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা করেন নাটকীয়ভাবে। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন।
তালিকায় নাম না থাকলেও ত্রিবেদীকে বক্তব্য পেশ করতে দেওয়া হয়
এই মর্মে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ, সুখেন্দুশেখর রায় রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন শনিবার। তিনি অভিযোগ করেছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বক্তার তালিকায় নাম না থাকা সত্ত্বেও ত্রিবেদীকে বক্তব্য পেশ করতে দেওয়া হয় এবং চেয়ারম্যান তাঁকে থামাতে কোনওরকম পদক্ষেপ নেননি। চিঠিতে সুখেন্দুশেখর রায় আরও দাবি করেন, শুধুমাত্র নিজস্ব রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে দীনেশ ত্রিবেদী রাজ্যসভার অপব্যবহার করেছেন। অবিলম্বে এই নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত, চিঠিতে দাবি করেন তিনি।
একইসঙ্গে দল এবং রাজ্যসভার সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেন
দীনেশ ত্রিবেদী একইসঙ্গে দল এবং রাজ্যসভার সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেন শুক্রবার। সেই ঘোষণা তিনি রাজ্যসভাতে করেন নাটকীয়ভাবে। ইস্তফা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলায় যে ভাবে অন্যায়, অত্যাচার, খুন হচ্ছে সেটা তাঁকে চুপ করে সব দেখতে হচ্ছে। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। তাই অন্তরাত্মার ডাকে সাড়া দিয়ে ইস্তফা দিলাম। ছাড়লাম তৃণমূলও। এবার নেতাজি, বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ এর বাংলায় মানুষের স্বার্থে কাজ করতে চাই।
তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকে তিনি দলের সঙ্গে ছিলেন
তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকে তিনি দলের সঙ্গে ছিলেন। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী রূপে আসীন হবার আগে তাঁর ছেড়ে আসা রেলমন্ত্রীর পদে ত্রিবেদীকেই স্থলাভিষিক্ত করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে রেলের ভাড়া বাড়ানো নিয়ে মমতার সঙ্গে মতবিরোধ হলে তিনি একপ্রকার বাধ্য হয়েই ইস্তফা দেন রেলমন্ত্রীর পদ থেকে। তাঁর জায়গায় রেলমন্ত্রীর চেয়ারে বসেন মুকুল রায়।
সম্পূর্ণ হল এক রাজনৈতিক বৃত্ত
রাজনৈতিক বিশ্লেষকের কথায়, সেই মুকুল রায় আজ বঙ্গ -বিজেপির এক সেনাপতি এবং তাঁর হাত ধরেই তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিচ্ছন একের পর এক তৃণমূল নেতা। আজ ত্রিবেদীও একসঙ্গে পদত্যাগ করলেন দল এবং রাজ্যসভার সদস্যপদ থেকে। খুব অঘটন না হলে তিনিও যে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন তা বলাই বাহুল্য। এ যেন এক রাজনৈতিক বৃত্ত সম্পূর্ণ হল।