সুব্রতর প্রিয় ছিল নারকেল নাড়ু! ভাইফোঁটায় দাদার মরদেহ জড়িয়ে হাহাকার সহোদরাদের
সুব্রতর প্রিয় ছিল নারকেল নাড়ু! ভাইফোঁটায় দাদার মরদেহ জড়িয়ে হাহাকার সহোদরাদের
দাদার জন্য নাড়ু তৈরি করে রেখেছিলেন, ভাইফোঁটার আগে হাহাকার সুব্রত-সহোদরাদের
এসএসকেএমে চিকিৎসারত রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বেশ ভালো হয়ে উঠছিলেন, চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছিলেন। কিন্তু কালীপুজোর দিনে আলোর উৎসব শুরুর আগে হঠাৎ করেই নিভে গেল তাঁর জীবনদীপ। রাতপোহালেই ভাইফোঁটা। হাসপাতাল থেকে ওইদিনই তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ভাইফোঁটার আগে যে চিরতরে হারিয়ে যাবে তাঁদের দাদা, স্বপ্নেও ভাবেননি তিন সহোদরা।
ভাইফোঁটার দিনই ফিরছেন বাড়িতে, তাই বোনেরা দাদার জন্য নাড়ু-মিষ্টি বানিয়ে রেখেছিলেন তিন বোন। দাদা বড় ভালোবাসতেন তাঁদের হাতে বানানো নাড়ু আর মিষ্টি খেতে। তাই ভাইফোঁটার দিন এলেই তাঁরা বানাতেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পছন্দের নারকেল নাড়ু আর সন্দেশ। আর ফিরবে না দাদা, ভাইফোঁটার আগের দিন তাঁদের দাদার মৃতদেহবাহী শকট ঢুকল বালিগঞ্জের বাড়িতে। দাদার নিথর দেহ জড়িয়ে বুক ফাটা হাহাকার তিন বোনের।
তাঁরাই জানালেন, পোস্ত বড় খেতে ভালোবাসতেন দাদা। সেইসঙ্গে থাকত পাঁঠার মাংস, মাঠেক টক। ভাইফোঁটার দিন দাদা ফিরবে বলে তিনবোন প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন। নাড়ু-মিষ্টি সাজিয়ে রেখেছিলেন ভাইফোঁটার জন। কিন্তু সব আশায় জল ঢেলে বাংলা রাজনীতির বর্ণময় চরিত্র সুব্রত মুখোপাধ্যায় চিরঘুমে ঘুমিয়ে পড়লেন।
সুব্রত মুখোপাধ্যায় বরাবরই ভোজনরসিক ছিলেন। খাবারের প্রতি দাদার ভালোবাসা কথা জানালেন বুক ফাটা হাহাকার নিয়েই। তবে দাদার স্বাস্থ্যর কথা চিন্তা করে সচেতনও ছিলেন তাঁরা। তবু তাঁরা ভাইফোঁটার শুভদিনে ধরে রাখতে পারলেন না তাঁদের দাদাকে। তা বলে অবশ্য তাদের আয়োজনে খামতি ছিল না। ভাইফোঁটার আগে দাদার জন্য এক কৌটো নাড়ু তৈরি করে রেখেছিলেন। বোনেদের হাতের নাড়ু যে স্পেশাল ছিল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কাছে।
হঠাৎই যেন তাঁদের মাথায় বাজ ভেঙে পড়ল দাদার মৃত্যুর খবরে। অসুখ কেড়ে নিল তাঁদের প্রিয় দাদাকে। তা ঘটল আবার ভাইফোঁটার আগে আলোর উৎসবের দিনেই। আলোর রোশনাই নিভে গেল বালিগঞ্জের মুখোপাধ্যায় পরিবারে। আলো নিভে গিয়ে অন্ধকার দীপাবলির রাতে। ভাইফোঁটায় বাড়ি ফেরা হল না সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের, ভাইফোঁটার আগের দিন তাঁর মরদেহ ফিরল বাড়িতে।
কালীপুজোর দিন সকাল থেকে হাসপাতালে বেশ ভালই ছিলেন। খেতে চেয়েছিলেন নিজের প্রিয় খাবার চপ, মুড়ি, চাউমিন। সুস্থ হয়ে বাড়ি যাওয়ার পর তা দেওয়া হবে বলে তাঁকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তা আর হয়ে উঠল না। গত সোমবার তাঁর অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি হয়। বসানো হয় দুটি স্টেন্ট। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীলই ছিল তাঁর। তারপরই দুপুরের পর থেকেই ফের ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয়। সন্ধ্যায় সব শেষ। এদিন কেওড়াতলা শ্মশানে তাঁর অন্তিমযাত্রা সম্পন্ন হয়।
Recommended Video