বাল্যবিবাহের সংখ্যা কমছে বাংলায়, কেন্দ্রীয় রিপোর্টে খুশি নবান্ন
বাল্যবিবাহের সংখ্যা কমছে বাংলায়, কেন্দ্রীয় রিপোর্টে খুশি নবান্ন
উত্তরপ্রদেশের হাথরাস গণধর্ষণ কাণ্ডের পর থেকেই ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতন নিয়ে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। এদিকে এরইমধ্যে বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্টে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে নবান্ন। এদিকে কিছু বছর আগেও গোটা রাজ্যে ১৫ থেকে ১৯ বছরের মেয়েদের বিয়ের সংখ্যা ছিল যথেষ্ট বেশি। তবে সম্প্রতি ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভের রিপোর্ট বলছে, পশ্চিমবঙ্গে বাল্যবিবাহের সংখ্যা কমেছে অনেকটাই, যা রাজ্যের দুশ্চিন্তা কমিয়েছে অনেকটাই।
কি বলছে ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভের রিপোর্ট?
তথ্য বলছে, ২০১৯-এ রাজ্যে ১৫-১৯ বছর বয়সী প্রায় ১২ হাজার নাবালিকা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। পরিসংখ্যানের বিচারে বিহার, ঝাড়খণ্ড বা রাজস্থানকেও পিছনে ফেলে দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু সেই ছবি যে বদলেছে, তার ইঙ্গিত মিলেছে ফ্যামিলি হেলথ সার্ভের সাম্প্রতিক রিপোর্টে। তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত সংখ্যাটা কমে তিন হাজারের দিকে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য্যর বক্তব্য, "কন্যাশ্রী-রূপশ্রীর মতো সামাজিক প্রকল্পের জন্যই কমেছে নাবালিকাদের বিয়ে। মেয়েরা লেখাপড়া করছে। নাবালিকাদের মাতৃত্বজনিত মৃত্যুহারও কমছে।"
২০১৩-এ তালিকায় শীর্ষে ছিল বাংলা
এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, জাতীয় পরিবার ও স্বাস্থ্যকল্যাণ মন্ত্রকের হিসেবে ২০১৩ সালে ১৫ বছরের মধ্যে থাকা বিবাহিতা নাবালিকার সংখ্যা ছিল প্রায় ২৭০৮৮, যা ভারতের মোট বিবাহিতার ৫৪.৭%। তারপর থেকেই নাবালিকা বিবাহের নিরিখে তালিকায় প্রথমস্থানে উঠে আসা পশ্চিমবঙ্গের হাল ফেরাতে একযোগে নেমে পড়ে রাজ্যের সমাজকল্যাণ ও স্বাস্থ্য দফতর। যদিও এই ক্ষেত্রে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ভূমিকেই সাধুবাদ জানাচ্ছেন সরকারি আধিকারিকেরা। যদিও এইক্ষেত্রে সাফল্যের কারণ হিসেবে মানুষের সচেতনতাকেই বড় করে দেখতে চাইছেন সমাজবিজ্ঞানীরা।
একাধিক সামাজিক প্রকল্পের হাত ধরেই কমছে বাল্যবিবাহের পরিমাণ
রাজ্যদপ্তরের আধিকারিকরা বলছেন, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী বা সবুজ সাথীর মতো প্রকল্পের হাত ধরেই মূলত কমেছে নাবালিকা বিবাহের পরিমাণ। যদিও সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত রাজ্যে বিয়ে হয়েছে প্রায় তিন হাজার নাবালিকার, যাঁদের গড় বয়স ১৫-১৯ বছরের মধ্যে। চিন্তার কথা এই যে, দেশের মোট নাবালিকা বিয়ের ৩৪%-ই এই রাজ্যের। যদিও রিপোর্ট বলছে, বিহার, গুজরাত বা ঝাড়খণ্ড ছাড়াও মুম্বই-দিল্লির মত মেট্রোপলিটনে নাবালিকা বিবাহের সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গের থেকেও বেশি।
রাজ্যে প্রথম নবাবের জেলা!
অন্যদিকে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য বলছে, নাবালিকা বিয়ের ক্ষেত্রে রাজ্যে প্রথম মুর্শিদাবাদ। এই জেলার ৩৭.৯% নাবালিকা ১৮ বছর উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই শ্বশুরবাড়ির পথে রওনা হয়। যথারীতি মাতৃত্বের হারও বেশি এঁদের মধ্যে। সম্প্রতি ওয়েস্ট বেঙ্গল কমিশন অফ প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটসের একটি তথ্যে কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়ছে নবান্নের। কমিশনের তথ্য মাফিক, লকডাউনের জেরে কর্মহীন পরিবারগুলিতে নাবালিকার বিয়ে কিছুটা হলেও বেড়েছে। অন্তত ৫০০ নাবালিকার বিয়ে হয়েছে এই কারণে।
প্রথমবার এলাহাবাদ হাইকোর্টে বয়ান রেকর্ড হাথরাস আক্রান্তের পরিবারের