২০২১ নির্বাচনের আগে মাস্টারস্ট্রোক মমতার, বিপ্লবের ফেরার ‘পথ’ পরিষ্কার!
একুশে জুলাইয়ের ভার্চুয়াল ব়্যালি থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিয়েছিলেন যাঁরা ভুল করে বিজেপিতে গিয়েছেন তাঁরা ফিরে আসুন তৃণমূলে।
একুশে জুলাইয়ের ভার্চুয়াল ব়্যালি থেকেই বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যাঁরা ভুল করে বিজেপিতে গিয়েছেন তাঁরা ফিরে আসুন তৃণমূলে। এরপর মমতা তাঁর দলে যে রদবদল করলেন সেখানেও ঘরওয়াপসির সমস্ত রকম সম্ভাবনা জাগিয়ে তুললেন। যেমন দক্ষিণ দিনাজপুরের ক্ষেত্রে অর্পিতা ঘোষকে সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে তিনি বিপ্লব মিত্রের ফেরার পথ প্রশস্ত করে দিলেন।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের উত্তরবঙ্গে শোচনীয় ফল করেছিল তৃণমূল। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট কেন্দ্রে হারের পর তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষ আঙুল তুলেছিলেন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের দিকে। বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁকে হারিয়ে দেওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে অর্পিতাকে সভাপতি করেন।
বিভিন্ন গোষ্ঠীকে সবক শেখালেন মমতা
এবার ২০২১-এর আগে পুরোপুরি খেলা ঘুরিয়ে দিলেন মমতা। পছন্দের সভাপতি অর্পিতাকে সরিয়ে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিধায়ক গৌতম দাসকে প্রার্থী করে জেলার মধ্যে চলা বিভিন্ন গোষ্ঠীকে সবক শেখালেন। কোনও গোষ্ঠীর নেতাকেই তিনি জেলা সভাপতির পদ দেননি। এই অবস্থায় বিল্পবের ঘরে ফেরার রাস্তা অনেক মসৃণ হয়ে গেল
তৃণমূলে ঘরওয়াপসির ক্ষেত্র তৈরি
জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদে বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে দেওয়ার পর রাগে ক্ষোভে অপমানে নাম লেখান গেরুয়া শিবিরে। কিন্তু বিজেপিতে গিয়েও তিনি বিশেষ সুখে নেই। তিনি তৃণমূলে ফিরতে চান বলে ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা যায়। এখন অর্পিতা ঘোষকে জেলার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে, কংগ্রেস ছেড়ে আসা বিধায়ককে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে সেই ক্ষেত্র তৈরি করে দেওয়া হল।
মমতা দিলেন মাস্টারস্ট্রোক
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, জেলায় যখন বিপ্লব মিত্রকে ফের তৃণমূলে ফিরিয়ে আনার তোড়জোড় শুরু হচ্ছে, তখনই অর্পিতা ঘোষকে সরিয়ে গৌতম দাসকে জেলা সভাপতি করা হল। গৌতম দাস গঙ্গারামপুরের বিধায়ক। কংগ্রেসের টিকিটে তিনি নির্বাচনে জিতেছিলেন। তারপর যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। সেই তিনিই এখন জেলা তৃণমূলের শীর্ষপদে।
শুধু স্বচ্ছতা এবং তারুণ্যের প্রশ্নে রদবদল নয়
অর্পিতা ঘোষ ঘনিষ্ঠ কার্যনির্বাহী সভাপতিকে সরিয়ে দিয়ে বিধায়ক গৌতম দাসকে কার্যনির্বাহী সভাপতি করেছিলেন খোদ মমতা। এবার অর্পিতা ঘোষকে সরিয়ে দিয়ে সেই গৌতম দাসকেই জেলা সভাপতি পদে বসালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন প্রশ্ন উঠেছে, এই সিদ্ধান্ত কি শুধু স্বচ্ছতা এবং তারুণ্যের প্রশ্নে। এর পিছনে অন্য কোনও কারণ থাকলেও থাকতে পারে।
দক্ষিণ দিনাজপুরে ফের স্বমহিমায় ফিরতে
এই পরিস্থিতিতে জল্পনা তৈরি হয়েছে তৃণমূল ফের বিপ্লব মিত্রকে ফিরিয়ে আনতে চাইছে। ২০২১ নির্বাচনের আগে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে গেলে এমন একজনকে সভাপতি বসানো হবে, যাঁর সঙ্গে ইগোর লড়াই থাকবে না। অর্পিতা ঘোষের সঙ্গে ইগোর লড়াই এই জেলায় বিপ্লবকে সরিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল থেকে। ফের তাঁর ঘরওয়াপসি হলে দক্ষিণ দিনাজপুরে ফের স্বমহিমায় ফিরতে পারে তৃণমূল