তোলা চেয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী! মামলা দায়ের হাইকোর্টে, হলফনামা পেশের নির্দেশ বিচারকের
রাজ্যজুড়ে যখন কাটমানি ইস্যুতে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। সেই সময়ে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরূদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ মামলা দায়ের হল হাইকোর্টে। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি দেবাংশু বসাক সব পক্ষকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা পেশ করতে নির্দেশ দেন।

এদিন মামলার শুনানিতে মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী উদয় ঝা বলেন, সন্দীপ আগরওয়ালের সঙ্গে তার স্ত্রীর বনিবনা হচ্ছিল না দীর্ঘদিন, তারই প্রেক্ষিতে সন্দীপকে বিধাননগর মিউনিসিপ্যালিটির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুভাষ বোস এর দফতরে ডাকা হয়। তাকে বলা হয় ৩০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তাকে এনডিপিএস আইনে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখানো হয়।
সন্দীপ বাবুর আরও অভিযোগ এই নিয়ে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে পুলিশ সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে ওই ব্যবসায়ী মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে উনাকে কুড়ি লক্ষ টাকার প্রমিসরি নোটে সই করিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপর সন্দীপবাবু এবং আরও এক ব্যবসায়ী পঙ্কজ আগরওয়াল এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন।
মামলাকারীদের আইনজীবীর দাবি এই ঘটনার সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক পুলিশ এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আপ্ত সহায়কের মধ্যে কথোপকথনের রেকর্ড রয়েছে তাদের কাছে প্রয়োজনে সেগুলো আদালতে পেশ করতে পারেন বলেও আদালতে জানান তিনি। যদিও রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন যে দুজন লোক এই মামলা দায়ের করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও রয়েছে। কিশোরবাবু আরও বলেন যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজনের সঙ্গে সন্দীপবাবু স্ত্রীর সম্পর্ক আছে। তিনি আরও বলেন কোন অভিযুক্ত তদন্তকারী সংস্থা ঠিক করে দিতে পারেন না।তখন বিচারপতি বসাক বলেন, মামলাকারীদের ক্ষেত্রে যারা মামলা করছেন তারা তদন্তকারী সংস্থা চয়ন করতেই পারেন।
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পক্ষের আইনজীবী পার্থসারথি সেনগুপ্ত বলেন, সন্দীপের স্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়বাবুকে কাকু বলে সম্বোধন করেন। তখন বিচারপতি বলেন ওনার বিরুদ্ধে পুলিশের সঙ্গে মিলে তোলাবাজির টাকা চাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে সব পক্ষকেই হলফনামা পেশের নির্দেশ দেন বিচারপতি।
প্রসঙ্গত মামলার বয়ান অনুযায়ী আসানসোলে পঙ্কজ আগরওয়ালের একটি নার্সিংহোম আছে আসানসোলের চিফ মেডিকেল অফিসার একটি নির্দেশ জারি করেন। পঙ্কজবাবুকে সমস্ত নথিপত্র নিয়ে তার দফতরে হাজির হতে হবে। সেই অনুযায়ী পঙ্কজবাবু সিএমওর দফতরে গেলে তাকে বলা হয় বিধাননগরের কাউন্সিলর এবং জ্যোতিপ্রিয়বাবুর আপ্ত সহায়কের সঙ্গে দেখা করতে।
এরপর তারা ওই কাউন্সিলরের দফতরে গেলে তাদেরকে ৩০ লক্ষ টাকার প্রমিসরি নোটে সই করানো হয় বলে অভিযোগ। এরপর ওই ব্যবসায়ীরা চাপে পড়ে কুড়ি লক্ষ টাকা ওই কাউন্সিলরের দফতরে দেন বলে অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগেই মামলা দায়ের করা হয়।