এনআরসি নিয়ে 'ফিয়ার সাইকোসিস'-এ ভুগছেন চা বাগানের শ্রমিকেরা
অসমে এনআরসি লাগু হওয়ার পর রীতিমতো সিঁদুরে মেঘ দেখছেন ডুয়ার্সের চা বাগানের শ্রমিকরা।
অসমে এনআরসি লাগু হওয়ার পর রীতিমতো সিঁদুরে মেঘ দেখছেন ডুয়ার্সের চা বাগানের শ্রমিকরা। ঘটনায় এতটাই প্রভাবিত যে এনআরসি নিয়ে দিশেহারা হয়ে এক চরম বিশ্বাস ভঙ্গতায় ভুগতে শুরু করেছেন উত্তরের চা বলয়ের প্রায় দশলক্ষ মানুষ। কারন দেড়শো বছর আগে ইংরেজ ঔপনিবেশিকরা তরাই ও ডুয়ার্সের মাটিতে চা চাষের জন্য তাঁদের পূর্বপুরুষদের ঝাড়খন্ড ও ছোট নাগপুর থেকে এখানে নিয়ে এসেছিল। তারপর থেকে পরভূমই তাঁদের ঠিকানা হয়ে উঠেছে। তা এখন উপলব্ধি করতে পারছেন আদিবাসী চা শ্রমিকরা।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ইংরেজরা বিদায় নিলেও ওই আদিবাসী চা শ্রমিকদের নিজভূমের কোনো ছাড়পত্র আজও মেলেনি। ডুয়ার্সে সব মিলিয়ে দুশো চা বাগান রয়েছে তার পুরোটাই সরকারের খাতায় লিজ ল্যান্ড হিসেবে চিহ্নিত । স্বাভাবিক কারনেই বিভিন্ন চা শিল্পপতিদের হাতে থাকা চা বাগানের ওই লিজ জমির মালিকানা সরকারের। বংশ পরম্পরায় ওই চা শ্রমিকরা চা বাগান গুলিতে বসবাস করে আসলেও জমির অধিকার তাঁদের দেওয়া হয়নি। কাজেই তাঁরা আক্ষরিক অর্থেই এখনও পরবাসী।
হালে এনআরসি ইস্যু প্রকাশ্যে আসায় ফের উচ্ছেদের আশঙ্কা। দেশের মধ্যে থাকা খেটে খাওয়া মানুষদের দিন গড়িয়ে যাওয়ার সাথে সাথে চা বাগান গুলিতে ক্ষোভের আগুন জ্বলতে শুরু করেছে । কালচিনি চা বাগানের বাসিন্দা লালো ওরাও, পুষ্পা লোহার, জানিয়েছেন রাজ্যে যদি সত্যিই এনআরসি চালু হয় তা হলে আমাদের সব কিছু শেষ হয়ে যাবে । আমরাতো পরবাসী হয়ে আছি আমাদের হাতে জমির কোনও কাগজ নেই।
অসমের চা বাগান গুলিতে আমাদের প্রচুর আত্মীয়রা রয়েছেন প্রত্যেকদিন নাগরিকপঞ্জিতে তাঁদের নাম তোলা নিয়ে হয়রানির খবর আসছে। আমাদেরকেও সেই বিপদের মুখে পড়তে হবে। তবে আমরা যাবোটা কেথায়? তার উত্তর কেউ দিতে পারছে না। দীর্ঘদিন ধরে রায়মাটাং বাগানের শ্রমিক আনন্দ মুণ্ডা জানিয়েছেন ইংরেজ আমলে আমাদের পূর্বপুরুষদের ভিন রাজ্য থেকে এখানে আনা হয়েছিল।
[ ২০১৯ দুর্গাপুজো: সল্টলেকের -এ কে ব্লকের পুজো এবার কোন থিম-ভাবনায় উজ্জীবিত]
তারপর দেড়শো বছর পেরিয়ে গেলেও আমাদের জমির অধিকারের জটিলতা নিয়ে কেউ ভাবে নি।বাগানের ম্যানেজমেন্ট কেনো সদুত্তর দিতে পারছেন না ।সত্যি কথা বলতে এখন আমরা দিশেহারা। তৃণমূলের চা বাগান সংগঠন চা বাগান তৃণমূল কংগ্রেস মজদুর ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক অসীম মজুমদার জানিয়েছেন শ্রমিকরা খুব আতঙ্কে আছে। তারা প্রতিনিয়ত আসছে সবার মুখে একটাই কথা কি হবে আমাদের। পুজোর পর আমরা শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে একটা কর্মশালা আয়োজন করবো এবং তাদের কাছ থেকে শুনব।
[ ষোড়শী একরত্তি কিশোরী গ্রেটার পরিবেশ সচেতনতা নিয়ে একার লড়াই যেন বিস্ময়! উৎসাহিত করে অনেককেই]