মাত্র ৭২ জন ভোটার! ভোট আসে ভোট যায়, কোনও প্রার্থীর দেখাই মেলে না
প্রথম দফার নির্বাচনের মাত্র একদিন বাকি। দেশ জুড়ে ভোট প্রস্তুতি তুঙ্গে। নির্বাচনে অংশ নেওয়া সব প্রার্থীরাই নিজেদের মধ্যে ভোট প্রচারে একে অপরকে টেক্কা দিচ্ছে।
প্রথম দফার নির্বাচনের মাত্র একদিন বাকি। দেশ জুড়ে ভোট প্রস্তুতি তুঙ্গে। নির্বাচনে অংশ নেওয়া সব প্রার্থীরাই নিজেদের মধ্যে ভোট প্রচারে একে অপরকে টেক্কা দিচ্ছে। কিন্তু চারিদিকে যখন ভোট প্রচারের ব্যস্ততা, লড়াই তখন নিজেদের লোকসভার প্রার্থীদেরই চেনেন না আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের কুমারগ্রামের বনবস্তির বাসিন্দারা।
কুমারগ্রামের বনবস্তিতে বাস মাত্র ৭২ জনের। আর সেকারণেই তৃণমূল, সিপিএম, বিজেপি বা কংগ্রেস- কোন প্রার্থীই এখানে প্রচারে আসেননি। তাই কোনও প্রার্থীকে চেনেন না বনবস্তির বাসিন্দারা। কমসংখ্যক ভোটের জন্য কোনও প্রার্থীর পা না পড়ায় ক্ষোভ ভুটিয়াবস্তিতে।
আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের কুমারগ্রামের এই ভুটিয়াবস্তির ১০/১ নম্বর বুথে এবার ভোট দেবেন মাত্র ৭২ জন ভোটার। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের গহন অরণ্যে ঘেরা এই বুথটি বিচ্ছিন্ন এলাকায় অবস্থিত। এখানে রয়েছে একটি মাত্র পঞ্চায়েত। একদিকে জয়ন্তী নদী অন্যদিকে বক্সার জঙ্গল ও ভুটান পাহাড়। এই বনবস্তিতে ভোট হচ্ছে।
প্রতি বছর বর্ষায় আলিপুরদুয়ার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে এই বনবস্তি। জয়ন্তী নদী এই বস্তিকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। মাত্র ৭২টি ভোট। তাই এখানে প্রচারে আসেন না কোন প্রার্থীই। সেখানে নেই রাজ্যের উন্নয়নের ছোঁয়াও। পৌঁছয়নি কেন্দ্রের কোনও প্রকল্পই। ফলে কোনওবারই ভোট প্রার্থীর মুখ দেখতে পান না এলাকার বাসিন্দারা।
প্রতিবার ভোট আসে। ভোট দেন এলাকার মানুষজন।তাদের সমস্যা যে তিমিরে, সেই তিমিরেই থাকে। স্থানীয় বাসিন্দা মনিতা গোরে জানান, 'কে দাড়িয়েছে আমরা জানি। আমার বাড়িতে দুজন বুড়ো মানুষ আছেন। কেউ তো ভাতা পান না। প্রার্থীদের কি চেনেন? এককথায় জানি না। বলতে পারব না।
এখানে বর্ষাতে অনেক ছাত্র ছাত্রী স্কুল যেতে পারে না। এখানে নেই কোন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। সমস্যা অনেক। কিন্তু সমাধান নেই।' তাঁর সাফ কথা, 'কেউ দেখে না আমাদের।' স্থানীয় পঞ্চায়েত সাজন সোনার। তাকে এক ডাকে কাঞ্চা বলেই চেনে সবাই। তিনি বলেন, 'কোনও প্রার্থী এখানে আসেনি। আমরা ভোট দিই।
তাঁর কথায়, এখানে জয়ন্তী নদীর বাঁধের দাবিও আছে। সেচ দফতর কে বলা হলেও কোন কাজ হচ্ছেনা। ভুটিয়া বস্তি দুর্গম এলাকা। তাই কেউ আসেন না। একমাত্র কিছু পর্যটক আসেন। কোন প্রার্থীকে ভোটাররা দেখেননি। এই ৭২ জন ভোটারের জন্য একটি বুথ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ভোটাররা ভোট দেবেন।'