অনুব্রতর জামিন কি মিলবে ১৪৩ দিন পর! শুনানি শেষ হলেও ভাগ্য ঝুলে হাইকোর্টে
অনুব্রতর জামিন কি মিলবে ১৪৩ দিন পর! শুনানি শেষ হলেও ভাগ্য ঝুলে হাইকোর্টে
অনুব্রত মণ্ডলের জামিন মামলার শুনানি শেষ হলেও তাঁর ভাগ্য এদিন ঝুলে রইল কলকাতা হাইকোর্টে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এই রায়দান স্থগিত রেখেছেন। আগামীকাল বা পরশু এই মামলার চূড়ান্ত রায়দান করতে পারেন বিচারপতি।
অনুব্রত মণ্ডলকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে
অনুব্রত মণ্ডল গরু পাচার মামলায় ১৪৫ দিন ধরে জেলে রয়েছেন। তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হচ্ছে না। অনুব্রত মণ্ডলের পক্ষে আইনজীবী কপিল সিব্বল এদিন সওয়াল করেন, এই মামলায় যখন অন্যরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন, অনুব্রত মণ্ডলকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে।
অনুব্রতকে রাজনৈতিক দৈত্য বলে উল্লেখ
এদিকে অনুব্রত মণ্ডলের জামিন আটকাতে সেই প্রভাবশালী তত্ত্ব খাঁড়া করেছেন সিবিআইয়ের আইনজীবীরা। জামিনের বিরোধিতা করে শুধু প্রভাবশালী তত্ত্ব খাঁকা করেই ক্ষান্ত থাকেনি সিবিআই, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীরা তাঁকে রাজনৈতিক দৈত্য বলে উল্লেখ করেছেন।
সওয়াল জবাবে রীতিমতো উত্তপ্ত এজলাস
মঙ্গলবার গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি অজয়কুমরা গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে। সিবিআই বনাম অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীর সওয়াল জবাবে রীতিমতো উত্তপ্ত ছিল এজলাস।
অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীর প্রশ্ন হাইকোর্টে
অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, এই মামলায় মোট ৯৫ জন সাক্ষী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৩৩ জনের বয়ান নেওয়া হয়েছে এদিন। বাকিদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি। তাঁদের সাক্ষ্য কবে নেওয়া হবে, সেই প্রশ্ন তোলেন অনুব্রত মণ্ডলের আইজীবী। তিনি বলেন, এই মামলায় বিএসএফ অফিসার সতীশ কুমার-সহ অন্যান্য অভিযুক্তরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন, তাহলে অনুব্রত মণ্ডল কেন পাবেন না?
কপিল সিব্বলের সওয়ালের পাল্টা সিবিআইয়ের
কপিল সিব্বলের সওয়ালের পাল্টা সিবিআইয়ের আইনজীবী ডিপি সিং খাঁড়া করেন সেই প্রভাবশালী তত্ত্ব। তিনি বলেন, অনুব্রত মণ্ডল অত্যন্ত প্রভাবশালী একজন রাজনৈতি ব্যক্তিত্ব। বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি তিনি। তাঁর দেরহক্ষী সায়গল হোসেনের সঙ্গে গরু পাচার মামলায় মূল অভিযুক্ত এনামুল হকের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।
অনুব্রত মণ্ডলকে রাজনৈতিক দৈত্য বলে উল্লেখ
সিবিআইয়ের আইনজীবী আরও বলেন, তাঁদের মধ্যে ৩৯ বার ফোন কল হয়েছে। তারপর বীরভূমের ওই এলাকার তিনটি হাট থেকে সীমান্ত দিয়ে গরু পাচার হত, তার প্রমাণ তদন্তে উঠে এসেছে। আর এই অপারেশনে হাত ছিল ওই এলাকার রাজনৈতিক দৈত্য অনুব্রত মণ্ডলের। তাও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
রাজ্যের সমালোচনা করেন বিচারপতি
তারপর ঘটনার এক বছর পর অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় সাত দিন পুলিশ হেফাজতে ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। আর এই মামলা করা হয়েছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সিবিআইয়ের আইনজীবীর এই বার্তা শুনে রাজ্যের সমালোচনা করেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি।
সিবিআইয়েরও সমালোচনা বিচারপতির
তিনি বলেন, এক বছর পর কেন এই মামলা, কী এর প্রয়োজন ছিল, কেন হেফাজতে নিতে হল, তা জানতে চান বিচারপতি। আবার বিচারপতি সিবিআইয়ের আইনজীবীকেও পাল্টা প্রশ্ন করেন, কেন সিবিআই সতীশ কুমারের জামিনের বিরোধিতা করেনি। এখন কেন অনুব্রত মণ্ডলের জামিন আটকাতে এত তৎপরতা?