২৬ দিনে ১০ জেলায় ৬০টি সভা! তৃণমূলকে যেভাবে নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
বয়স মাত্র ৩৩ বছর। তবে এই যুবকই এখন তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন চার্জ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর এখন তিনি সব থেকে বড় মুখ দলের। আর দলের হয়ে সেই গুরুদায়িত্ব পালন করতে রাজ্যের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ছুটে বেরিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ২৬ দিনে অভিষেক রাজ্যজুরে ৪৬টি জনসভা এবং ১৪টি রোড শো করেছেন ১০টি জেলা জুড়ে। এতটাই ব্যস্ত ডায়মন্ড হারবরের এই সাংসদ।
'তোলাবাজ ভাইপো' কটাক্ষের জবাব
নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই অভিষোক বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'তোলাবাজ ভাইপো' বলে কটাক্ষ করা শুরু করেছিল বিজেপি নেতারা। মূলত শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতেই আরও প্রবল হয় অভিষেকের প্রতি বিজেপির আক্রমণ। তবে তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকদের মধ্যে যেন অভিষেক দিনকে দিন আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন। এবং মমতা পরবর্তী মুখ হিসেবে উঠে এসেছেন অভিষেক।
বিজেপির শীর্ষ নেতাদের টেক্কা অভিষেকের
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার সংখ্যার সঙ্গে অভিষেকের কর্মসূচির সংখ্যার ফারাক খুব বেশি নয়। এমনকি বিজেপির অনেক শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের কর্মসূচি অভিষেকের থেকে কম। জঙ্গলমহল থেকে শুরু করে উত্তরবঙ্গ। সর্বত্র পৌঁছে গিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ১৪ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত মোট ৩৯ সভায় অংশ নেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই উত্তরবঙ্গ মুখী হয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এরই মাঝে দক্ষিণ বঙ্গের বিভিন্ন স্থানে সভা-কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন তিনি।
ভোট পরিচালনার দায়িত্বেও অভিষেক
তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ১১টি সভা করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরেও হাওড়া-হুগলি সহ দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে আরও ২১টি সভা করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও ভোটের দিন নির্বাচন পরিচালনা এবং পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রেও দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন অভিষেক। গত ২৭ মার্চ এবং ১ এপ্রিল তিনি সেই দায়িত্ব পালন করায় প্রচারে যাননি।
তৃণমূলের পরবর্তী মুখ
এরই মাঝে ফেব্রুয়ারিতে কয়লাকাণ্ডে অভিষেকের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে তৃণমূল যুব সভাপতির বাড়িতে যান সিবিআই আধিকারিকরা। তবে সেসব চাপের মাঝেও দলের হয়ে প্রচারে কোনও কসুর রাখেননি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরই মত, অভিষেকের উত্থান মেনে নিতে না পেরেই দল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে সেই সময় তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছিল যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের কেউ মুখ্যমন্ত্রী হতে চান না। তবে পরবর্তীতে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করে ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যদি পরবর্তীতে দলের রাশ ধরেন, তাহলে কারোর তো কোনও সমস্যা নেই।' চলতি নির্বাচনে যেভাবে দলের দ্বিতীয় বড় মুখ হয়ে উঠেছেন অভিষেক, তাতে ফিরহাদের মন্তব্য ভবিষ্যতে সত্যি প্রমাণিত হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।