মালবাজারে হড়পা বানে জখমদের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে হাসপাতালে ভাঙচুর! একাধিক প্রশ্নে জেরবার প্রশাসন
দশমীর রাতে জলপাইগুড়ির মালবাজারের মাল নদীতে হড়পা বানে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৮। বেশ কয়েকজন এখনও নিখোঁজ। ভোর থেকে প্রশাসনের তরফে সেরকমভাবে উদ্ধার কাজ না শুরুর অভিযোগ উঠেছে। তবে যেখানে নিচের দিকে যেখানে জলের স্রো
দশমীর রাতে জলপাইগুড়ির মালবাজারের মাল নদীতে হড়পা বানে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৮। বেশ কয়েকজন এখনও নিখোঁজ। সে ক্ষেত্রে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা। ভোর থেকে প্রশাসনের তরফে সেরকমভাবে উদ্ধার কাজ না শুরুর অভিযোগ উঠেছে। তবে যেখানে নিচের দিকে যেখানে জলের স্রোত কমেছে, সেই সব জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। রাতেই বৃষ্টির কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হয়। রাতে জখমদের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে মাল হাসপাতালে ভাঙচুর চালায় আত্মীয় পরিজনরা। এছাড়াও বুধবার রাতের ঘটনায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে।
মাল নদীতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা
বুধবার দশমীর অভিষপ্ত রাত। মাল নদীর পাড়ে আশপাশের এলাকায় প্রায় ৭০ টি প্রতিমা জড়ো করা হয়েছিল নিরঞ্জনের জন্য। সন্ধের পর থেকে ২৫ থেকে ৩০ টি প্রতিমার নিরঞ্জন সম্পন্নও হয়। সেই সময়ই হড়পা বান। প্রতিমার সঙ্গে ভেসে যান অনেকে। অনেকে নদীর মধ্যে থাকা চড়ে আটকে যান। কয়েকজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আটজনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন।
চিকিৎসায় গাফিলতের অভিযোগ
হড়পা বানে জখমদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় মাল হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। খবর পেয়ে হাসপাতালে যান পুলিশ সুপার এবং মাল বিধানসভার বিধায়ক বুলুচিক বরাইক। প্রশাসনের তরফে সবরকমের সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়। পরে আহতদের পরিজনরা জানান, হাসাপাতালে জখমদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা করা হচ্ছে না।
দুর্ঘটনা ঘিরে একাধিক প্রশ্ন
হড়পা বান প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলেও, তা নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আবহাওয়া খারাপ থাকা সত্ত্বেও কেন প্রশাসনের তরফে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা হয়নি, কেন নদীর চড়ে এত ভিড় হয়েছিল, কেন বিসর্জনের সময়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল না? এই নদীতে মাঝে মধ্যে হড়পা বান আসে, তা সত্ত্বে কেন সাবধানতা অবলম্বন করা হল না।
ভারী বর্ষার পূর্বাভাস ছিল আগে থেকেই
আবহাওয়া দফতরের তরফে দশমীর দিন উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বিশেষ করে হিমালয়ের পাদদেশ সংলগ্ন দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল। সেই মতো নদীর উচ্চ অববাহিকায় ভারী বৃষ্টি হয় বুধবার। অল্প সময়ে বেশি বৃষ্টি হওয়ায় হড়পা বানের পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রশাসনের তরফে নদীখাতের যে জায়গায় বিসর্জনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল, তার কিছু আগে বোল্ডারও ফেলা হয়েছিল। কিন্তু জলের তোড় এতটাই বেশি ছিল, যে তা বোল্ডারকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
একাদশীর আকাশ মেঘলা, ভোরে কোনও কোনও জায়গায় বৃষ্টি! একনজরে বাংলার জেলাগুলির আবহাওয়া