তৃণমূলে বিরাট ভাঙন অধীর-গড়ে, পঞ্চায়েতের মুখে ৬০০০ নেতা-কর্মীর যোগদান কংগ্রেসে
সাগরদিঘি নির্বাচনে হারের পর মুর্শিদাবাদে বিরাট ভাঙন ধরল তৃণমূলে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর জেলায় কংগ্রেসে যোগদানের হিড়িক পড়ে গেল। বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে ৬০০০ নেতা-কর্মীর যোগদান করলেন কংগ্রেসে। নবাব-গড়ে চিন্তা বাড়ল তৃণমূল কংগ্রেসের।
শনিবার মুর্শিদাবাদ জেলার খড়গ্রামে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করেন একঝাঁক নেতা-কর্মী। খড়গ্রামের নগর পিরতলা মাঠে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যোগদান সভার আয়োজন করা হয়। এই যোগদান সভায় খড়গ্রাম ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তথা খড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত এবং পরিবহন কর্মাধ্যক্ষ আবুল হাসনাত যোগদান করেন।
৬০০০ তৃণমূল নেতা ও কর্মী যোগ দেন কংগ্রেসে
একা খড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত এবং পরিবহন কর্মাধ্যক্ষ আবুল হাসনাত নন, তাঁর নেতৃত্বে ৬০০০ জন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ও কর্মী যোগ দেন কংগ্রেসে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর হাত ধরে তাঁরা কংগ্রেসে যোগদান করেন। অধীর চৌধুরীর কথায় তাঁদের ঘরওয়াপসি হল শনিবার।
কংগ্রেসে যোগ দিয়ে ক্ষোভ বিধায়কের বিরুদ্ধে
কংগ্রেসের যোগদান করতে এসে খড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত এবং পরিবহন কর্মাধ্যক্ষ আবুল হাসনাত খড়গ্রামের বিধায়ক আশিস মার্জিতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। যদিও বিধায়ক তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি পাল্টা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত এবং পরিবহন কর্মাধ্যক্ষ আবুল হাসনাতের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন।
মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের অস্তিত্ব থাকবে না
কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, তৃণমূলে ভাঙন ধরেছে। এবার ধীরে ধীরে তৃণমূল দলটা শেষ হয়ে যাবে। মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের অস্তিত্ব থাকবে না। বাংলাতেও তাদের জারিজুরি শেষ হতে চলেছে। সম্প্রতি সাগরদিঘি উপনির্বাচনে সেই আভাস মিলেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচন যদি স্বচ্ছ হয় তবে তৃণমূলের হার অবধারিত।
সাগরদিঘি উপনির্বাচনে হারের পর তৃণমূলে ভাঙন
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি উপনির্বাচনে তিনবারের জেতা আসনে পরাজিত হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে হার মানার পরই তৃণমূল টার্গেট করেছিল প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীকে। এমনকী সম্প্রতি কালীঘাটে তৃণমূলের শীর্ষ বৈঠকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের দুই সাংসদকে নিশানা করেন।
দিদি বিশ্বাস করেন তাঁর দলের সাংসদদেরই
মমতা বলেন, তৃণমূলের দুই সাংসদের অধীর চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই মন্তব্য নিয়েও খোঁচা দেন অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, দিদি তো বিশ্বাস করেন তাঁর দলের সাংসদদেরই। তিনি তাঁদের সঙ্গে কংগ্রেসের যোগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে ঘরে ফেরার পর
এ প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী আরও বলেন, তাঁরা তো কংগ্রেস ছেড়েই গিয়েছেন তৃণমূলে। তাঁরা তো কংগ্রেসটাই করতেন। অনেককে ভুল বুঝিয়ে লোভ দেখিয়ে তৃণমূলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাঁরা এখন বুঝতে পারছেন তৃণমূল কংগ্রেস এখন শক্ত ঠাঁই। তাই এদিন কংগ্রেসে যোগ দিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত এবং পরিবহন কর্মাধ্যক্ষ আবুল হাসনাত বলেন ওই দলটায় থাকা যায় না।
তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদানের হিড়িক
তিনি বলেন, এতদিন কী করে ছিলাম ওই দলটায় তাই ভাবি। এত দেরি করে যে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে এলাম, তার জন্য আমরা কথা শুনতেও প্রস্তুত। কিন্তু ওই দলটায় আর থাকতে চাই না। আমরা কংগ্রেসে যোগ দিয়ে ঘরে ফেরার আনন্দ পাচ্ছি। এই আনন্দ মাথায় নিয়ে আমরা সমস্তরকম কটাক্ষ শুনতেও প্রস্তুত।