মায়ের কৈলাসে ফিরে যাওয়ার পালা শুরু, খবর দিতে প্রস্তুত নীলকণ্ঠ পাখি
চার দিন বাপের বাড়ি কাটিয়ে এবার মায়ের কৈলাসে ফিরে যাওয়ার পালা। আর সেই দিনের সঙ্গে অবশ্যই যোগ রয়েছে নীলকণ্ঠ পাখির। গান বাজে, "জোড় করি ঐরাবত, সাজাইয়া পুষ্পরথ, শিবের সনে যাইতা কৈলাসপুরে, গৌরী দেশে যায়, বসন ভিজায় নয়নের জলে গৌরী দেশে যায়।"
অন্তিম পর্বে
শারদোৎসবের অন্তিম পর্বে পৌঁছে গিয়েছি আমরা। ঘরের মেয়ে গৌরী চলে যাবে পতিগৃহে কৈলাসপুরে। বিসর্জনের বিষন্ন দিনে সর্বত্রই চলছে মাতৃপ্রতিমা নিরঞ্জনের প্রস্তুতি। পু্রাণ অনুসারে আবার বিজয়া দশমীর অন্য তাৎপর্য।
দশমীতেই পরাজিত ও নিহত অসুর
দেবী চণ্ডী মহিষাসুরকে দশমীতেই পরাজিত ও নিহত করেন। আবার শ্রীরামচন্দ্র আশ্বিনের শুক্লা দশমীতে রাবণকে বধ করেন এবং পরবর্তী অমাবস্যাতে সীতাকে নিয়ে অযোধ্যা ফিরে আসেন। এইজন্যই দশমীতে দশেরা আর পরবর্তী অমাবস্যাতে দীপাবলি উৎসব উদযাপন করা হয়। তাই দশমীকে বিজয় দশমী বা বিজয়া দশমী বলে অভিহিত করা হয়েছে।
পুরাণ কী বলছে?
পশ্চিমবঙ্গের
বিভিন্ন
স্থানে
দুর্গাপ্রতিমা
ভাসানের
সময়
নীলকণ্ঠ
পাখি
উড়ানো
বিসর্জনের
এক
আবশ্যিক
অঙ্গ।
বিশ্বাসীদের
বিশ্বাস
নীলকণ্ঠ
পাখি
কৈলাসে
গিয়ে
আগেই
মহাদেবকে
পার্বতীর
আগমন
সংবাদ
জ্ঞাপন
করবে।
পুরাণ
অনুসারে,
সমুদ্র
মন্থনে
অমৃতের
সঙ্গে
হলাহল
উঠলে
দেবাদিদেব
মহেশ্বর
সেই
বিষ
নিজ
কণ্ঠে
ধারণ
করেছিলেন।
হলাহলের
প্রভাবে
তাঁর
কণ্ঠ
নীল
হয়ে
যায়।
ফলে
মহাদেবের
আরেক
নাম
নীলকণ্ঠ।
লোকবিশ্বাসে
নীলকণ্ঠ
পাখিকে
মহাদেবের
বন্ধু
রূপে
মান্য
করা
হয়।
পাখি দর্শনে পাপমুক্তি
অনেকের
মতে
ওইসময়
নীলকণ্ঠ
পাখি
দর্শন
করলে
পাপমুক্তি
ঘটে।
তাই
কিছু
জায়গায়
পয়সার
বিনিময়ে
ঢাকা
খাঁচায়
ইচ্ছুক
পুণ্যার্থীকে
নীলকণ্ঠ
পাখি
দেখানোর
রেওয়াজ
আছে।
নীলকণ্ঠ
পাখি
অবশ্য
বাংলার
সুপরিচিত
পাখিদের
একটি।
ইংরেজি
নাম
'Indian
Roller'।
বাংলায়
দুধরনের
নীলকণ্ঠ
পাখি
দেখা
যায়।
একটির
বৈজ্ঞানিক
নাম
coracias
benghalensis,
অন্যটি
'coracias
benghalensis
affins'।
লম্বায়
৩০-৩২
সেমি.
।
মাথার উপরে এবং পালকের নীচে ও গলার নীচে খানিকটা নীল রঙ থাকে। সমগ্ৰ ভারত, বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে পাখিটি দেখা যায়। তবে দ্বিতীয় প্রজাতির পাখিটি ভারতের গারোপাহাড় এবং বাংলাদেশের শ্রীহট্ট অঞ্চলে দেখা যায়। পোকা, কীটপতঙ্গ, সাপের বাচ্চা, টিকটিকি ইত্যাদি এদের স্বাভাবিক খাদ্য। বাংলাদেশের গ্ৰামাঞ্চলে পাখিটি থোড়মোচা, কেওয়া ইত্যাদি নামেও পরিচিত।থোড়মোচার আকৃতির সঙ্গে মিল থাকায় থোড়মোচাএবং ক্যাঁও ক্যাঁও করে ডাকে বলে অনেকে পাখিটিকে কেওয়া নামে অভিহিত করেন। আর সেই পাখি গিয়ে কৈলাসে বলে আসবে ওহে শিব, এবার উমার ঘরে ফেরার পালা।