For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

ইংরেজি মাধ্যমে উঁচু ক্লাসের শিক্ষার্থীরা কেন স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দেয়

বাংলাদেশে প্রতিবছর অর্ধলক্ষাধিক শিক্ষার্থী ও-লেভেল বা এ-লেভেল পরীক্ষায় অংশ নিলেও তারা আগেই স্কুল ছেড়ে দেয়। কেন এই প্রবণতা? এর পেছনে কী কারণ রয়েছে?

  • By Bbc Bengali

পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা
Getty Images
পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা

বাংলাদেশে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রতি বছর অর্ধ-লক্ষাধিক শিক্ষার্থী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের ও-লেভেল বা এ-লেভেল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে থাকে।

কিন্তু এদের বড় একটি অংশ প্রাইভেট শিক্ষার্থী হিসাবে প্রতিবছর পরীক্ষায় অংশ নেয়।

কেন এই প্রবণতা? এর পেছনে কী কারণ রয়েছে?

বাংলাদেশের শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুারোর (ব্যানবেইস) ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের সংখ্যা ১৪২টি, যেখানে ৭৮ হাজার ২০০শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।

তবে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের সংখ্যা ৩৫০টি। কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো এর অন্তর্ভুক্ত নয়।

'স্কুল আর কোচিং একই সঙ্গে চালানো কঠিন’

ঢাকার কলাবাগানের বাসিন্দা রেজাউল হকের দুই ছেলে ইংলিশ মিডিয়ামের একটি স্কুলে পড়াশোনা করেছে। একজনের ও-লেভেল এবং এ-লেভেল শেষ হয়ে গেছে। আরেকজন এখনো পড়ছে।

তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছেন, '’ক্লাস নাইনে ওঠার কিছুদিন পরে আমার ছেলে স্কুল ছেড়ে দেয়। কারণ স্কুল আর কোচিংয়ের দুইটার পড়াশোনা ওর জন্য চাপ হয়ে যাচ্ছিল। সেই সঙ্গে দুই জায়গাতেই বেতন দিতে হচ্ছিল। তাই ও স্কুল ছেড়ে দিয়ে কোচিং করতে শুরু করে।'’

তিনি জানান, তার চেলে রাফাত হক যে স্কুলে পড়াশোনা করতো, সেখানে নবম ও দশম শ্রেণিতে তেমন ভালো মানের শিক্ষকও ছিল না। ফলে ক্লাস নাইনে কয়েকমাস পড়েও তেমন কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছিল না। তার চেয়ে কোচিংয়ে পড়ে বেশি সুবিধা পাওয়া গেছে।

তিনি জানিয়েছেন, ক্লাস এইটে অনেক ছাত্র থাকলেও নাইনে ওঠার পর মাত্র কয়েকজন ছাত্র স্কুলে থেকে গেছে। বাকি সবাই আলাদাভাবে রেজিস্ট্রেশন করে কোচিং করে পরীক্ষা দিয়েছে।

ঢাকার ধানমণ্ডির বাসিন্দা শিখা রহমানের ছেলে একটি নামকরা ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল থেকে ও লেভেল এবং এ লেভেলের পড়াশোনা শেষ করে এখন যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করতে গেছেন।

তার ছেলে উইলিয়াম অবশ্য স্কুল আর কোচিং- দুটোতেই পড়েছে।

শিখা রহমান বিবিসি বাংলাকে বলছেন, '’আমার ছেলের অনেক সহপাঠী স্কুল ছেড়ে দিয়েছিল। কারণ বাসায় থেকে করবে কি, তার চেয়ে স্কুলে যাক। ম্যাথ, ফিজিক্সের মতো সাবজেক্ট স্কুলে পড়ে ভালো বোঝা না যাওয়ায় ওকেও কোচিং করতে হয়েছে। কিন্তু আমি ওকে আমি স্কুল ছাড়তে দেই নাই। দুই জায়গায় খরচ হলেও সেটা দিয়েছি।'’

গণিত, পদার্থ বিজ্ঞানের মতো অনেক বিষয়ের জন্য কোচিংয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষার্থীরা
Getty Images
গণিত, পদার্থ বিজ্ঞানের মতো অনেক বিষয়ের জন্য কোচিংয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষার্থীরা

শিক্ষকদের আগ্রহ থাকে কোচিংয়ে

বাংলাদেশে বাংলা ও ইংরেজি- দুই ধরনের শিক্ষা মাধ্যমেই কোচিংয়ের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।

এ নিয়ে বিতর্ক বা সমালোচনা থাকলেও শহর বা গ্রাম- কোথাও থেকেই কোচিংয়ের ব্যবহার বন্ধ করা যায়নি।

যদিও বাংলা মাধ্যমের কোচিং ব্যবস্থা নিয়ে যতটা আলোচনা হয়েছে, ইংরেজি মাধ্যমের কোচিং নিয়ে কখনোই খুব বেশি আলোচনা হয়নি।

এমনকি প্রশ্ন ফাঁসের কারণে পাবলিক পরীক্ষার সময় বাংলা মাধ্যমের কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখা হলেও ইংরেজি মিডিয়ামের সেন্টারগুলো খোলা ছিল, যা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল কোচিং অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ।

কিন্তু কেন বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী নবম বা দশম শ্রেণিতে উঠেই স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন?

জানতে চাইলে ঢাকার একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের প্রিন্সিপাল জিএম নিজামউদ্দিন বিবিসি বাংলাকে বলছেন, '’স্কুল বন্ধ করে শুধুমাত্র কোচিং নির্ভর হয়ে যাওয়া মানে হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে অনিয়মিত হয়ে যাওয়া, রুটিনের বাইরে চলে যাওয়া। স্কুলের পড়াশোনা অব্যাহত রাখা অবশ্যই ভালো। তাহলে শিক্ষার্থীরা একটা ডিসিপ্লিনের মধ্যে থাকে।'’

'’কিন্তু সমস্যা হলো, উঁচু ক্লাসে চলে যাওয়ার পর অনেক সিনিয়র শিক্ষকই কোচিংয়ের ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের প্রমোট করেন। তারা ভেতরে ভেতরে ক্লাসের তুলনায় কোচিংয়ের জন্য শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেন।'’

ফলে একসময় শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা ভাবতে শুরু করেন, একই সঙ্গে দুই জায়গায় খরচ দেয়ার চেয়ে শুধুমাত্র কোচিং করালেই তো ভালো। এই চিন্তা থেকে তারা স্কুল ছেড়ে দেন।

'’এখানে আসলে শিক্ষকদের ব্যক্তিগত ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টারেস্ট (অর্থনৈতিক আগ্রহ) থাকে। তাই তাদের অনেকে স্কুলের চেয়ে তখন কোচিংয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে থাকেন। আবার শিক্ষার্থীরাও ভাবেন, স্কুলের চেয়ে শিক্ষকের কাছে আলাদাভাবে পড়লে বেশি ভালোভাবে বোঝা যাবে।’’

জানা গেছে, একেকজন শিক্ষক স্কুল থেকে যে বেতন পান, তার কয়েকগুণ কোচিং থেকে আয় করেন। এই কারণে কোচিংয়ের প্রতি তাদের বিশেষ দুর্বলতা থাকে।

কিন্তু এ ধরনের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয় না কেন জানতে চাইলে মি. নাজিমুদ্দিন বলছেন, '’অনেক সময় দেখা যায়, এই সিনিয়র শিক্ষকদের ভালো ডিমান্ড থাকে। তারা হয়তো শিক্ষক হিসাবে খুব ভালো বা নামকরা। স্কুল কর্তৃপক্ষও তাদের হারাতে চায় না। এসব কারণে ম্যানেজমেন্ট জানলেও খুব বেশি কঠোর হতে পারে না।'’

তবে শিক্ষার্থীদের স্কুলে ধরে রাখতে ঢাকার কিছু কিছু শর্ত ও নানা বাধ্যবাধকতা দিয়ে থাকে। যেমন স্কুলের সঙ্গে না থাকলে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনে কোন সহায়তা করা হয় না।

এসব কারণে কিছু স্কুলে নবম বা দশম শ্রেণি পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত থাকতে দেখা যায়।

English summary
Why do upper class students drop out of school through English medium?
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X