আজ মুক্তির ৫০ বছর, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীরও পাঁচদশক
আজ মুক্তির ৫০ বছর, মৈত্রীর ৫০ বছর। আধা শতাব্দী আগে ১৯৭১ সালে আজকের দিনেই জন্ম হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের। বলা ভাল, ভারত স্বাধীন করেছিল বাংলাদেশকে৷ পাকিস্তানের হাত থেকে বাংলাদেশকে ( তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছিনিয়ে নেওয়ার এই দিনটিকে 'বিজয় দিবস' হিসেবে পালন করা হয় প্রতিবেশী দেশে।

ভারতীয় সেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মিলিত লড়াইয়ের ফলে আসে মুক্তি!
শুধুই মুক্তিযোদ্ধা কিংবা ভারতীয় সেনা নয়, বরং যৌথ প্রচেষ্টা বলা ভাল। পাকিস্তানি বর্বরতা, খানসেনার অত্যাচার পেরিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ দিবস বহুকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা পেয়েছিল বাংলাদেশ। তারপর থেকেই এই দিনটিতে ভারত এবং বাংলাদেশী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণ করা হয়। ঐতিহাসিকদের একটা বড় অংশের মতে, আজকের দিনেই যুদ্ধক্ষেত্রে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় জয় পেয়েছিল ভারত। ১৩ দিনের যুদ্ধ শেষে প্রায় ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সেনা আত্মসমর্পণ করেছিল ভারতীয় সেনার সামনে। বাংলাদেশি সময় বিকেল ৪টে ৩১ মিনিটে 'INSTRUMENT OF SURRENDER' চুক্তিতে সই করেন পাক জেনারেল আবদুল্লাহ খান নিয়াজি। ইতিহাসে এমন আত্মসমর্পণের ঘটনা একমাত্র এটিই।

আন্দোলনের শুরুটা কোথায়?
শুরুটা হয়েছিল গণভোটে আওয়ামী লিগের জয়ের পর থেকে। পূর্ব পাকিস্তানের নিজস্ব রাজনৈতিক দল আওয়ামি লিগ ভোটে জেতার পর থেকেই অত্যাচার করতে শুরু করে পাক সেনা৷ বর্বরতার স্বীকার হন মূলত হিন্দু বাঙালিরা, প্রতিনিয়ত ধর্ষিতা হন অসংখ্য নারী৷ ঠিক কতজন মারা গিয়েছিলেন এই হত্যাযজ্ঞে? সঠিক সংখ্যা এখনও অজানা, তবে মনে করা হয় ৩০ থেকে ৫০ লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছিলেন সেই সময়। প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে এসেছিলেন ৮-১০ মিলিয়ন মানুষ৷

বাংলাদেশ গঠনে যুদ্ধের নির্দেশ দিতে বাধ্য হন ইন্দিরা গান্ধী!
ভারত চেয়েছিল আন্তর্জাতিক মহলে বিষয়টি উত্থাপন করে এর সমাধান করতে৷ তবে বাস্তবে তা হয়নি। পাকিস্তান ভারতের ১১টি বায়ুসেনা ঘাঁটিতে এয়ারস্ট্রাইক করলে শুরু হয় যুদ্ধ। পিছিয়ে আসেনি ভারত। তৎকালীন সেনা প্রধান স্যাম মানেকশ-কে ইন্দিরা নির্দেশ দেন পুরোদমে যুদ্ধ শুরু করার। মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে লড়ে যায় ভারতীয় সেনা। ফল? অচিরেই পূর্ব পাকিস্তানের ১৫ হাজার কিলোমিটার দখল করে ফেলে ভারত। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে একমাত্র সেবারই স্থল, নৌ, বায়ুসেনা একসঙ্গে লড়েছিল।

স্বাধীনতার ৫০ বছরে মৌলবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে বাংলাদেশে!
যে দেশটির স্বাধীনতার জন্য শুধু জব্বাররা নন সঙ্গে অগনিত ভারতীয় সেনা জওয়ানও গুলি খেয়েছেন বুকে সেই দেশটিরও একটি অংশ আজ মৌলবাদের কবলে৷ তাই প্রতিবছর সেখানে দুর্গাপুজোয় মূর্তিভাঙা সংখ্যালঘু হিন্দুদের ঘর জ্বালানোর মতো বিষয় সামনে আসে৷ যদিও বাংলাদেশের হাসিন সরকার এই মৌলবাদের বিরুদ্ধে অবস্থানই নিয়ে থাকেন৷ কিন্তু তাতে ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকায় না!