আদৌ কী হবে ট্রাম্প-কিম বৈঠক, কেন উঠছে প্রশ্ন, জেনে নিন
উত্তর কোরিয়ার উপ বিদেশমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেছেন যদি ট্রাম্প প্রশাসন উত্তর কোরিয়ার ওপর 'একতরফা পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ' চাপিয়ে দেয় তাহলে তারা বৈঠকে যাবে না।'
প্রশ্ন উঠে গেল প্রস্তাবিত আমেরিকা-উত্তর কোরিয়া বৈঠক নিয়ে। বাধ সাধল উত্তর কোরিয়া। প্রথম থেকেই পরমাণু নিরস্ত্রীকরণকে বৈঠকের প্রধান শর্ত বলে জেনেও হঠাত এখন তারা বলছে যদি তাদের 'একতরফাভাবে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ'-এর জন্য চাপ দেওয়া হয়, তাহলে তারা বৈঠকে যাবে না। মঙ্গলবার সেদেশের উপ বিদেশমন্ত্রী কিম কায় গুয়ান এক বিবৃতিতে একথা জানান।
গুয়ান বলেন, 'যদি দেখা যায় ট্রাম্প-প্রশাসন আমাদের একতরফাভাবে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের জন্য চাপ দিয়ে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে, তবে আমদের আর এই আলোচনায় আগ্রহী থাকব না। সেক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়া-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বৈঠকে এগনো নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।' এনিয়ে এখনো আমেরিকার তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ'র খবরে আগামী মাসে উত্তর কোরিয় নেতা কিম জং উনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠক পরিকল্পনা মতো হবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে উপ বিদেশমন্ত্রীর বিবৃতির আগে উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ মাধ্যম কেসিএনসি'তা প্রকাশিত এক প্রতিবেদন নিয়ে হইচই পড়ে যায় ট্রাম্প প্রশাসনের অন্দরে।
ওই প্রতিবেদনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দশক্ষিণ কোরিয়ার চলমান যৌথ সামরিক মহড়া 'ম্যাক্স থান্ডার'-এর সমালোচনা করা হয়। বলা হয়, 'দক্ষিণ কোরিয়াজুড়ে চলা এই মহড়ার নিশানা আমরাই। এই মহড়া পানমুনজোম ঘোষণাবিরোধী ও আন্তর্জাতিক সামরিক উস্কানি। মহড়াটি কোরিয় উপদ্বীপে চলমান ইতিবাচক রাজনৈতিক অগ্রগতির প্রতিপন্থী।' প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, 'দক্ষিণ কোরিয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে এই সামরিক উস্কানি দেওয়ার পর সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে উত্তর কোরিয়ার আরও সতর্ক পদক্ষেপ নেবে।'
পিয়ংইয়ংয়ের এমন সতর্কতার পরও আমেরিকার বিদেশ দফতর বলে, পরিকল্পনা মতোই তারা আগামী ১২ জুন সিঙ্গাপুরে বৈঠকে যাবে। মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র হেদার ন্যুয়ের্ট সাংবাদিকদের বলেন, 'কিম জং উন, এর আগে বলেছিলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোঝেন। আমরা বৈঠকের প্রস্তুতি চালিয়ে যাব। ওয়াশিংটন ও উত্তর কোরিয়া কারোর অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি।' মার্কিন সামরিক সদর দফতর পেন্টাগন জানায়, 'নিয়মিত প্রতিরক্ষা প্রশিক্ষণ হিসেবে এই মহড়া চলছে। '
কিন্তু, উত্তর কোরিয়া বিষয়টিকে এত লঘু করে দেখতে নারাজ। কেসিএনএসি মার্কিন-দক্ষিণ কোরিয় ম্যাক্স থান্ডার অনুশীলনকে উস্কানি বলার পর উত্তর কোরিয় উপবিদেশমন্ত্রীর এই বিবৃতি এসেছে। কাজেই শান্তি প্রক্রিয়া আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে গভীর সংশয় দেখা দিয়েছে।