বন্ধুদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন ট্রাম্প, রাশিয়া-চিন-মার্কিন সম্পর্ক নিয়ে স্ল্যাম ডাঙ্ক হ্যারিসের
মার্কিন বন্ধুদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প একনায়কের সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন। এদিন এভাবেই আসন্ন নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থীকে আক্রমণ শানান ডেমোক্র্যাট সেনেটর তথা ভাইস প্রেসিডেনশিয়াল পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিস। আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই মার্কিন-চিন সম্পর্ক ইস্যুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন হ্যারিস। আর এরপরই মাইক পেন্সের উদ্দেশে ছুঁড়ে দেন একাধিক প্রশ্ন।
২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের হয়ে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ
এদিন রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের যোগকে খুঁচিয়ে তোলেন। তিনি এদিন বলেন, '২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের হয়ে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়ে এখন আমরা সবাই জানি। তিনি মার্কিন বন্ধুদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে একজন একনায়কের সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন। ট্রাম্পের জন্য ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে হয় আমাদের।'
চিনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে মার্কিন মুলুকের হার
এরপর কমলা আরও বলেন, 'চিনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে মার্কিন মুলুকের হার হয়েছে এবং এর জন্যে দায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। দেশে উৎপাদন শিল্পের ক্ষেত্রে ৩ লক্ষ মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। কৃষকরা দেউলিয়ে হওয়ার পথে।' যদিও চিন ইস্যুতে কমলার এই আক্রমণকে প্রতিহত করে মাইক পেন্স পাল্টা দাবি করেন যে ট্রাম্প প্রশাসন চিনের থেকে সব যাত্রা বাতিল করে দেন।
মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ইস্যুতে বিতর্ক
এদিকে নির্বাচনের আগেই মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে একজন বিচারপতি নিয়োগ করার ট্রাম্পের আপ্রাণ চেষ্টার ইস্যুটি এদিন উঠে আসে। এই পদে আসীন রুথ ব্যাডার গিনসবার্গের মৃত্যুর পর তাঁর শূন্য আসনে কাউকে দ্রুত বসানোর জন্য বিশেষ চেষ্টা চলছে। রুথ ব্যাডার গিনসবার্গ গর্ভপাত, স্বাস্থ্য পরিষেবা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ইস্যুতে বিশেষ সোচ্চার ছিলেন।
পেন্সের কট্টর মনোভাবের বিরোধিতা
একদিকে পেন্স তাঁর কট্টরপন্থী ধর্মীয় বিশ্বাসের জন্য বিশেষ পরিচিত। তিনি তাঁর নির্বাচনী প্রচারে ইতিমধ্যে গর্ভপাতের বিরোধিতা করে বক্তব্য রেখেছেন এবং সেই সঙ্গে ভোটারদের এই বলেও সতর্ক করেছেন যে, ডোমোক্র্যাটরা ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাধীনতার বিপক্ষে। উল্টো দিকে কমলা হ্যারিস গর্ভপাতের স্বাধীনতার পক্ষে। এই নিয়েও দুই জনের মধ্যে বিতর্ক হয় এদিন। তিনি এই বিষয়ে একাধিকবার নিজের মতামত স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
বর্ণ বৈষম্য ইস্যুতে দুই মেরুতে দুই প্রার্থী
উল্লেখ্য, কমলা হ্যারিস শুধু গর্ভপাত নয়, সমলৈঙ্গিক বিবাহেরও জোরদার সমর্থক। উল্টো দিকে ইন্ডিয়ানার গভর্নর থাকাকালীন পেন্স ২০১৫ সালে বিশেষ একটি আইনে স্বাক্ষর করেছিলেন যার দ্বারা ধর্মীয় কারণে ব্যবসায়ীরা সমকামী পুরুষদের কাজে নিয়োগ বন্ধ করতে পারেন। পাশাপাশি বর্ণ বৈষম্য ইস্যুতেও দুই দল দুই মেরুতে বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুতে উত্তাল হয় আমেরিকা। এব সেই সময় ট্রাম্পের আচরণ এবং বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বিভিন্ন মহলে।
২০২৪ সালের আগাম আভাস
এদিকে অনেকেরই মত এই বিতর্ক সভা আদতে হয়ে দাঁড়াচ্ছে ২০২৪ সালের প্রেসিডেনশিয়াল নির্বাচনের প্রিক্যাপ। পেন্সকে ট্রাম্পের উত্তরসূরী মনে করা হচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের অভিমত, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পেন্স প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে পারেন। কারণ তাঁর ইন্ডিয়ানায় গভর্নর হিসেবে এবং ট্রাম্প সরকারে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করার বিশেষ অভিজ্ঞতা রয়েছে, যা তাঁকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে অন্যদের তুলনায় কয়েক কদম এগিয়ে রাখবে। সেই তুলনায় কমলা হ্যারিসের অভিজ্ঞতা কিছুটা কম। তবে তাঁরও ভবিষ্যতে ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু ডেমোক্রেটিক দলের হয়ে বাইডেন দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন, তাই ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলা হ্যারিসের ফের লড়াই করার সম্ভাবনা উজ্জ্বল।
আরও জোরালো পিএফআই যোগ, হাথরাসে যাওয়ার পথে গ্রেফতার কেরলের তিন সাংবাদিক